২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

শিরোনাম
মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই শিক্ষার মান নেমে যাওয়ায় উদ্বেগ শিক্ষার মান উন্নয়ন না হলে শুধু বদলী নয় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে-মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষন পাঠ করলো ৭’শ শিক্ষার্থী

১১ বছর প্যাকেট বন্দি শেবাচিমের ডায়ালিসিস মেশিন: আরো ২০ মেশিন চেয়ে চিঠি

আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

স্থাপনের ১১ বছরে একদিনও চলেনি বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) কিডনি ডায়ালিসিস মেশিন। একই সঙ্গে অব্যবহৃত রয়েছে এ মেশিনের সঙ্গে থাকা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও। বর্তমানে দুটোই অকেজো। বহু চেষ্টা আর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দিয়েও মেশিনটি সচল করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরও আরও ২০টি ডায়ালিসিস মেশিন চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।

বিভিন্ন সময়ের ঘটনাবলি উল্লেখ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, চিকিৎসক সংকটের কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নেফ্রোলজি বিভাগে যারা যোগদান করেন, তারা কেউই বেশিদিন থাকেন না। ফলে মেশিনের সঙ্গে সঙ্গে বিভাগটিও অচল হয়ে আছে।

দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র নির্ভরযোগ্য ৫শ’ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে ডায়ালিসিস ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন কিডনি রোগীরা। প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ডায়ালিসিস করতে অনেক টাকা লাগে। এত টাকার সংস্থান করতে না পারায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছেন অনেক রোগী। ১৯৯৭ সালে ৮-১০ লাখ টাকা খরচ করে শেবাচিম হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মেডিসিন ইউনিটের পাশে চালু করা হয় কিডনি ইউনিট। ওই সময়ে নেফ্রোলজিস্ট ডা. জাহাঙ্গীর আলমকে দায়িত্ব দেয়া হয় ইউনিটটির।

১৯৯৮ সালে ডা. জাহাঙ্গীর আলম বদলি হয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যায় ইউনিটটি। পরে ডা. দিলীপ কুমার বড়ুয়া, ডা. শামীম আহম্মেদ, ডা. আবুল কাশেমকে কিডনি ইউনিটের দায়িত্ব দেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে তাদের কেউ-ই দু-তিন মাসের বেশি সেখানে দায়িত্ব পালন করেননি।

সর্বশেষ ২০০১ সালের আগস্টে ডা. আবুল কাশেম বদলি হওয়ার পর এই ইউনিটটি অচল অবস্থায় পড়ে থাকে দীর্ঘ ৮ বছর। ২০০৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ হাসপাতালের জন্য কিডনি ডায়ালিসিসের দুটি মেশিন বরাদ্দ দেয়া হয়।

বরাদ্দ অনুযায়ী ২০০৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতাল থেকে (সিএমএইচডি) বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের কিডনি বিভাগের জন্য একটি হিমোডায়ালিসিস মেশিন ও ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট সরবরাহ ও স্থাপন করা হয়।

সার্জারি বিভাগের তৎকালীন আবাসিক সার্জন ডা. এএইচএম রফিকুল বারী, মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুস সবুর এবং নেফ্রোলজি বিভাগের তৎকালীন সহকারী রেজিস্ট্রার শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল চালু অবস্থায় মেশিন দুটি বুঝে নেন। সবকিছু যখন তৈরি ঠিক সেই মুহূর্তে ৩ চিকিৎসক বদলি হয়ে গেলে আবারও দেখা দেয় সংকট। ফের অচল হয়ে পড়ে কিডনি ইউনিট। একই সঙ্গে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে হেমোডায়ালিসিস এবং ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট মেশিন। এরপর টানা ৭-৮ বছর এ বিভাগে আর চিকিৎসক আসেননি। বছরের পর বছর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি। এভাবে পড়ে থাকায় অচল হয়ে যায় যন্ত্রপাতি।

২০১৫ সালের দিকে হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম কিডনি বিভাগটি আবারও সচল করার উদ্যোগ নেন। নেফ্রোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়ার পাশাপাশি উদ্যোগ নেন ডায়ালিসিস মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি চালুর। আর তখনই মেশিন বিকল হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর তিনি ঢাকায় চিঠি দিয়ে মেশিন দুটি চালুর জন্য টেকনিক্যাল টিম পাঠানোর অনুরোধ করেন। চিঠি অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর একজন টেকনিক্যাল ম্যানেজারের নেতৃত্বে ৫ জনের একটি টিম ঢাকা থেকে বরিশালে আসে। সবকিছু দেখে ১৫ দিনের মধ্যে ডায়ালিসিস মেশিন চালুর ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে তারা চলে যায়। কিন্তু এরপর আর মেশিন দুটি চালুর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মেশিন দুটি পড়ে আছে আগের মতোই।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, মেশিন সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জনতা ট্রেডার্সকে বিষয়টি অবহিত করে একাধিকবার চিঠি দেয়া হলেও কোনো লাভ হয়নি। বরং সেই চিঠি আবার ফেরত চলে এসেছে বরিশাল মেডিকেল হাসপাতালে। মেশিন সরবরাহ করা সিএমএইচডিকেও দফায় দফায় চিঠি দেয়া হয়েছে। সেসব চিঠিরও কোনো উত্তর আসেনি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৭ আগস্ট নেফ্রোলজি বিভাগের বর্তমান প্রধান ডা. মানবেন্দ্রর দেয়া চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ে ২০টি নতুন ডায়ালিসিস মেশিন চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পুরাতন মেশিন মেরামতের জন্য আবারও দেয়া হয়েছে চিঠি। সেই চিঠিরও কোনো উত্তর আসেনি।

কিডনি ওয়ার্ডের ইনচার্জ সেবিকা হাসিনা মমতাজ বলেন, ইউনিটটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর জন্য কোটি টাকা মূল্যের ডায়ালিসিস মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হলেও তা কোনো কাজে আসেনি। এই মেশিনের সাহায্যে কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই মাত্র ৫০০-৭০০ টাকা খরচে কিডনি রোগীদের ডায়ালিসিস করা সম্ভব ছিল।

জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকলে তা নষ্ট হবে- এটাই স্বাভাবিক। আমরা নতুন মেশিন চেয়েছি। সম্ভবত শীঘ্রই মেশিন পাব। আমরা চাচ্ছি নেফ্রোলজি ও ইউরোলজি বিভাগ নতুন ভবনে নিয়ে যেতে। পুরনো ভবনে আমরা এই মেশিনগুলো রাখতে চাচ্ছি না। আশা করছি, কিডনি বিভাগের এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।

সূত্র: যুগান্তর

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network