২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

সম্রাট-খালেদের ক্যাসিনোর টাকা যেত ওমান, জার্মানি ও সিঙ্গাপুরে

আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

সম্প্রতি চলমান শুদ্ধি অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবের ক্যাসিনো বাণিজ্য।

ইয়ংমেনস ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে র‌্যাবের অভিযানের পর ক্যাসিনো নিয়ে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে।

ইতিমধ্যে ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, টেন্ডার কেলেঙ্কারি হোতা জিকে শামীম, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া।

উদ্ধার হয়েছে পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও সহসাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার অঢেল সম্পদ ও ৮ কেজি স্বর্ণ।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় অনন্ত ১৫ টি ক্লাবে রমরমা ক্যাসিনো বাণিজ্য চালিয়ে সেখান থেকে দৈনিক ৪০ লাখ টাকার মতো চাঁদা তুলতেন ঢাকা দক্ষিণের যুবলীগ সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট।

আর এসব ক্যাসিনোর টাকার বড় একটি অংশ ওমানের মাসকট ব্যাংক হয়ে চলে যেত জার্মানিতে।

বিদেশে পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের কাছে পাঠানো হতো সেসব টাকা। ঢাকা থেকে ইসমাইল হোসেন সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জি কে শামীমের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে, কখনও হুন্ডির মাধ্যমে প্রথমে ওমানের মাসকট ব্যাংকে টাকাগুলো জমা হতো। এরপর সেখানে থাকা আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী নাদিমের দায়িত্ব ছিল টাকা তুলে জার্মানিতে থাকা জিসানের কাছে পাঠানো।

মাঝেমধ্যে সম্রাটের ইচ্ছায় সিঙ্গাপুর হয়েও জিসান অবধি পৌঁছাতো সে টাকা।

টাকাগুলো বিভিন্ন মাধ্যম হয়ে ওমানের মাসকট ব্যাংকের ৪৮৩৭৯১৩১৯৪৭৯৭৯৭৮ নম্বরের অ্যাকাউন্টে জমা হতো বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

সূত্র জানায়, এই টাকা সরাসরি কখনো সম্রাট আবার কখনো খালেদ নিজেই পাঠাতেন। আবার মাঝে মধ্যে জাকির ও আরমানের মাধ্যমে টাকা মাসকট ব্যাংকে পাঠানো হতো।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি টেন্ডার কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার শামীমের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সটি ছিল একসময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের। জিসান দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি চালাতে থাকেন আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী নাদিম ওরফে টিএনটি নাদিম।

এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হতে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পালান নাদিমও।

নাদিম চলে গেলে জিকে বিল্ডার্স ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি বাগিয়ে নেন জিকে শামীম। এর পরই যুবলীগ নেতা সম্রাটের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠলে তার ছত্রচ্ছায়ায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আধিপত্য গড়েন জিকে শামীম।

সম্রাটের ক্ষমতাবলে মন্ত্রণালয় থেকে একের পর এক টেন্ডার বাগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। আর পুরস্কার হিসেবে সম্রাটকে প্রতি টেন্ডার বাবদ কয়েক লাখ টাকা দিতেন শামীম।

সূত্র জনায়, জিসান, নাদিম ও শামীম তিনজনই বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় যুবদলের রাজনীতি করতেন।

গ্রেফতারের পর র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জিকে শামীম জানায়, সিঙ্গাপুরে জিকে বিল্ডার্সের শাখা রয়েছে। ওই শাখাটি পরিচালনা করেন টিএনটি নাদিম। সিঙ্গাপুরে গেলে সেখানে অবস্থান করেন শামীম, সম্রাট ও খালেদ। খবর পেলে জার্মানি থেকে সিঙ্গাপুরে উড়ে আসেন শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানও। ওই অফিসে বসেই টেন্ডার বাগিয়ে নেয়ার পরিকল্পনাগুলো করেন তারা। খেলতে যান ক্যাসিনো।

গোয়েন্দা সূত্র আরও জানায়, শুধু সিঙ্গাপুরই নয়; ওমানের রাজধানী মাসকটও আরেকটি সন্ত্রাসী চক্র তৈরি করেছেন সম্রাট। সেই নেটওয়ার্কের নেতা টিএনটি নাদিম।

সূত্রমতে, ওমান থেকে ঢাকায় নিজের সন্ত্রাসীদের দিয়ে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যেতেন নাদিম। ঢাকায় নাদিমের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন মগবাজার টিএনটি কলোনীর জাকির, নয়া টোলার সেন্টু ও শোভন, বাড্ডার নাসির ও খোকন।

চাঁদাবাজি, রাহাজানি থেকে প্রাপ্ত এসব অর্থ চলে যেতো ওমানে। এরপর সেই অর্থ নিয়ে ওমান থেকে সিঙ্গাপুরে চলে আসতেন নাদিম, জার্মানি থেকে আসতেন জিসান।

আর শামীম, সম্রাট ও খালেদ ঢাকা থেকে উড়াল দিতেন সেখানে। এরপর সিঙ্গাপুরে চলতো তাদের নানারকম মৌজ-মাস্তি। সেখানকার বড় বড় সব ক্যাসিনো বস্তাভর্তি টাকা ওড়াতেন সম্রাট, খালেদ ও জিসান।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে খালেদ থেকে নানা ধরনের চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহজাহান সাজু বলেন, ‘খালেদকে জিজ্ঞাসাবাদে নানা ধরনের তথ্য এসেছে। তবে মানি লন্ডারিং বিষয়ে এখনও আমরা কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করিনি। এটি সিআইডির সংশ্লিষ্ট শাখা জিজ্ঞাসাবাদ করবে।’

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) শারমিন জাহান বলেন, ‘খালেদের বিরুদ্ধে গুলশান ও মতিঝিল থানায় দুটি মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সেগুলোর কাগজপত্র আমরা এখনও হাতে পাইনি। কাগজপত্র হাতে এলে তা পর্যালোচনা শেষে আমরা তদন্ত শুরু করব। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে কোন দেশের কোন ব্যাংকে টাকা গেছে সেটিও তদন্ত করে বের করা হবে।’

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network