বুয়েট শিক্ষার্থী মেধাবী আবরার হত্যার প্রতিবাদে বুয়েটসহ উত্তাল দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস।
বিদ্যাপীঠগুলোর সঙ্গে ফুঁসে উঠেছে সারা দেশ। গতকালের মতো মঙ্গলবার সকালে বুয়েট শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার এলাকায় বিক্ষোভ শুরুর পর একদল সাবেক শিক্ষার্থীও তাদের সঙ্গে যোগ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি দল মিছিল করে এসে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয়।
পরে বুয়েট শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিরা সমাবেশস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
সোমবার থেকেই বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সামনের সারিতে বারবার দেখা গেছে একজন তরুণীকে।
উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কথোপকথন চলার সময়ও এই তরুণী ছিলেন বজ্রকণ্ঠী।
আবরার হত্যাকাণ্ডের ৩৬ ঘণ্টা পর ক্যাম্পাসে এসে ওই তরুণীর প্রশ্নবান থেকে রক্ষা পাননি বুয়েট উপাচার্য ।
উপাচার্যকে সরাসরি ওই তরুণী জিজ্ঞেস করেছেন, আপনি কেমন ভিসি ক্যাম্পাসে আপনার ছাত্রের জানাজা হচ্ছে। কিন্তু আপনি উপস্থিত থাকেন না?
তরুণীর এমন সাহসী পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করে তার বিষয়ে জানতে কৌতূহলী হয়েছেন অনেকেই।
অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন, কে এই তরুণী?
এই তরুণীকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন রশিদ খান নামের এক ব্যক্তি।
সেই স্ট্যাটাসটি এখানে তুলে ধরা হলো- ‘বুয়েটের আবরার ইস্যুতে গতকাল থেকে যতগুলো রিপোর্ট দেখেছি, সেখানে উচ্চস্বরে কেবল একজন বুয়েট ছাত্রীর শব্দ শুনি। গতকাল পুলিশের চোখে চোখ রেখে বলতেছে, আঙ্গুল তুলে কেন কথা বলতেছেন আমাদের সাথে?
বুয়েটের শেরে বাংলা হলে পুলিশ প্রবেশের পর সকল ছাত্র-ছাত্রী সম্মিলিতভাবে পুলিশকে হল থেকে বের করে দেয়। সেখানে এই মেয়ের সাহসী উচ্চারণ, কার অনুমতি নিয়ে আপনারা আমাদের হলে প্রবেশ করেছেন?
আজকে ভিসিকে বলছে, আপনার ছাত্রকে মেরে ফেললো আপনি ঘরে বসে আছেন। আপনি কেমন ভিসি ক্যাম্পাসে আপনার ছাত্রের জানাজা হচ্ছে। কিন্তু আপনি উপস্থিত থাকেন না?
আজ বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে তিনি প্রশ্ন করেছেন, স্যার, আপনার ছাত্রদেরকে ধরে এনে পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে, আপনি কিসের ছাত্র কল্যাণ দেখেন? মেয়েটার নাম জানি না।
মি. রশিদ স্ট্যাটাসের শেষে বলেন, এসব অদম্য সাহসী মানুষের নাম জানারও দরকার হয় না। কিছু মানুষের ভোকাল তার নতুন পরিচয় হয়ে ওঠে। সময় এসব আড়ালে থাকা চেহারাকে নিজের প্রয়োজনে সামনে নিয়ে আসে।’
উল্লেখ্য আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে নির্যাতনে হত্যার দু’দিন পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে এসে তোপের মুখে পড়েন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।
এ সময় তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি একমত। সমস্যা সমাধানের উপায় বের করা হচ্ছে। আমি কাজ করে যাচ্ছি।
শিক্ষার্থীরা তাকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে থাকলেও কোনো সদুত্তোর দিতে পারেননি বুয়েট ভিসি।