• ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিতর্কিত অমিত সাহার সমর্থন করে ক্ষমাপ্রার্থী সহপাঠীরা

report71
প্রকাশিত অক্টোবর ৯, ২০১৯, ১৫:৪০ অপরাহ্ণ
বিতর্কিত অমিত সাহার সমর্থন করে ক্ষমাপ্রার্থী সহপাঠীরা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা নিয়ে তারই আট বন্ধু সম্প্রতি ফেসবুকে একটি সম্মিলিত বিবৃতি দিয়েছেন। যেই বিবৃতিতে তারা আবরারের হত্যার সঙ্গে অমিত সাহার সম্পৃক্ততা নিয়ে সন্দিহান থাকার কারণে ক্ষমা চেয়েছেন।

তারা একান্ত লজ্জিত ও দুঃখিত বলেও জানিয়েছেন। পাঠকদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া সেই বিবৃতি হুবহু তুলে ধরা হল-

অমিত সাহা প্রসঙ্গে… আমি সুপান্থ জয়,Nashid Sifat, Mubtasim Fuad Baig Fahim, Abir Saha, Tripta Bhattacharjee,Onindo Akash Shuvro, Imtiaz Shaikat,Samiul Jawad Ravi Itmam আমরা অমিত সাহার ডিপার্টমেন্ট/সেকশনমেট। একই সঙ্গে ক্লাস করে এসেছি। ইভেন আমরা কেউ তার হলেরও না। ক্লাসের অন্য দশটা মানুষের মতো তার সঙ্গেও আমাদের বন্ধুত্ব ছিল।

আবরারের হত্যকাণ্ডের পর অমিত ঘটনার সময় নিজের অনুপস্থিতি এবং ঘটনায় ফেঁসে যাওয়ার কথা আমাদের জানায়। তখন সে Abir Saha (Attached)-এর বাসায় অবস্থানরত ছিল এইটা নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা Amit-এর পক্ষে গ্রুপে কিছু স্টেটমেন্ট দেই। যা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেও সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে (যে সে ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত ছিল)।

ঘটনাটার সঙ্গে তার প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ সমপৃক্ততা আমাদের পক্ষে বের করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু কিছুক্ষণ আগে বের হয়ে আসা তথ্যে (স্ক্রিনশট) আর সবার মতো আমরাও তার সম্পৃক্ততা নিয়ে আর সন্দিহান নই। যার প্রেক্ষিতে আমরা এই কেসে তার পক্ষে আমাদের সমর্থন প্রত্যাহার করছি।

আমরা জানি এরকম ঘটনায় একদম ধোয়া তুলসি পাতা কেউ হঠাৎ করে জড়ানো সম্ভব না। অবশ্যই তার একাধিক ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে যা আমরা গুরুত্ব সহকারে কখনও নেইনি বা দেখেও ওভারলুক করেছি। আমাদের এই অসচেতনতার জন্যই আজ এদের মতো অপরাধীর জন্ম।

অমিত সাহা যে অপরাধই করে থাকুক আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এবং তার বন্ধু হিসেবে আমরা একান্তই লজ্জিত এবং দুঃখিত। প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠুভাবে তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক সেটাই আমরা চাই এবং গ্রুপ মেম্বারদের মিসলিড করার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জেরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।

তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।

হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।

এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।

এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।