পটুয়াখালীর বাউফলে যৌতুক দাবিতে প্রিয়াঙ্কার (২২) নামের এক গৃহবধূকে দফায় দফায় নির্যাতন চালিয়ে ন্যাড়া করে দিয়েছে স্বামী তাপস চন্দ্র হাওলাদার। ন্যাড়া মাথার চুল পলিথিনের ব্যাগে পেঁচিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি পালিয়ে যায়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিচারের আশায় পৌর শহরে ডাকবাংলোতে আসলে স্থানীয় লোকজনের ভিড় পড়ে যায়। ওই সময় গৃহবধূ প্রিয়াঙ্কার কান্নায় উপস্থিত লোকজন বিস্মিত হয়ে পড়েন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, ২০১২ সালের বৈশাখ মাসে উপজেলার আদাবাড়িয়ার ইউনিয়নের হাজিরহাট বাজারের সুশিল চন্দ্র কর্মকারের কন্যা প্রিয়াঙ্কাকে কালাইয়া ইউপির প্রিয়লাল মন্ডলের পুত্র তাপস চন্দ্র মন্ডলের সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের জন্য তিন ভরি স্বর্ণ এবং নগদ দেড় লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই কারণে অকারণে তার ওপর নির্যাতন চালায় স্বামী তাপস। স্বামীর ঘর ও নিজের জীবন বাঁচাতে বাবার কাছ থেকে দফায় দফায় প্রায় এক লাখ টাকা আনেন।
প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, তার স্বামী তাপস একটা প্রাইভেট টাইগার কোম্পানিতে এসআর পদে চাকরি করেন। কিন্তু সে প্রায় রাতেই নেশা করে বাড়িতে ফিরে তাকে নির্যাতন চালায় যৌতুকের জন্যে। গত মঙ্গলবার সকালে প্রিয়ঙ্কার কাছে গাড়ি কেনার জন্যে ৫০ হাজার টাকা চায়। ওই টাকা না পেয়ে তাকে মারধর করে প্রথমে বঁটি-দা দিয়ে মাথার চুল ন্যাড়া করে দেয়। পরে সে স্থানীয় সেলুন থেকে নরসুন্দর ডেকে এনে সম্পূর্ণ মাথা ন্যাড়া করে ঘরে আটকে রাখে। ১৬ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় তার বাবা-মাকে খরব দিয়ে কৌশলে ঘর থেকে বের হয়ে বাউফল ডাকবাংলোর সামনে এসে উপস্থিত লোকজনের সামনে বিচারের আশায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ বিষয়ে স্বামী তাপস চন্দ্র মন্ডলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, আমার স্ত্রীর মাথায় অতিরিক্ত উঁকুন হওয়ার কারণে সে নিজে মাথা ন্যাড়া করেছে।
বাউফল থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।