প্রতিনিয়ত আমরা বিভিন্ন গুনাহর মাধ্যমে নিজেদের ঈমানকে দুর্বল করে তুলছি; অথচ তা পরিমার্জন করার কখনো চিন্তা করছি না। এভাবে চলতে চলতে একসময় আমাদের ঈমান শক্তিহীন হয়ে পড়বে। তখন তা আর কোনো কাজে আসবে না।
তাই প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য হল, নিজের ঈমানের অবস্থা যাচাই করা, দুর্বলতার কারণগুলো চিহ্ণিত করা এবং যথাসময়ে পরিচর্যা করে ঈমানকে পরিশুদ্ধ রাখা। আমরা ঈমানের দুর্বলতার ১০টি নিদর্শন, ১০টি কারণ ও ১০টি প্রতিকার উল্লেখ করছি।
ঈমানের দুর্বলতার নিদর্শনসমূহ-
১. হারাম ও গুনাহের কাজে নিমজ্জিত হওয়া
২. চোখে পানি না আসা এবং অন্তরে কাঠিন্য অনুভব করা
৩. ইবাদতে শৈথিল্যতা প্রদর্শন করা
৪. কোরআনের আয়াত দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া
৫. অনর্থক ঝগড়া-বিবাদ বা তর্ক-বিতর্ক করা
৬. মুসলমান ভাইয়ের বিপদাপদে খুশি হওয়া
৭. দুনিয়ার প্রতি আকর্ষণ ও এর প্রতি ঝুঁকে পড়া
৮. হারাম কাজ সংঘটিত হতে দেখলেও ক্রোধের সঞ্চার না হওয়া
৯. কথা ও কাজে অমিল হওয়া
১০. মুসলমানদের সমস্যার ব্যাপারে গুরুত্ব না দেয়া ঈমানের দুর্বলতার কারণসমূহ-
১. ঈমানি পরিবেশ থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকা
২. সৎ ও অনুকরণযোগ্য ব্যক্তি থেকে দূরে থাকা
৩. শরিয়তের জ্ঞান ও ঈমানি বইপত্র থেকে দূরে থাকা
৪. গুনাহগারদের মাঝে অবস্থান করা
৫. গুনাহকে হালকা ভাবা
৬. ধন-সম্পদ ও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মেতে থাকা
৭. বদদ্বীন, মুনাফিক ও কাফির শাসকদের সঙ্গে উঠাবসা করা
৮. বেশি খাওয়া, বেশি ঘুমানো ও অত্যাধিক রাত্রি জাগরণ
৯. অনর্থক কথাবার্তা বলা
১০.দুনিয়ার মোহে মগ্ন হওয়া ঈমানের দুর্বলতা দূরকরণের উপায়-
১. অধিক পরিমাণে কোরআন তিলাওয়াত করা
২. বিনয়ী হওয়া ও দুনিয়ার চাকচিক্য পরিত্যাগ করা
৩. বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করা
৪. নিয়মিত ইসলামি আলোচনা সভায় উপস্থিত হওয়া
৫. নফল আমলে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা
৬. আল্লাহকে ভালোবাসা ও অধিকহারে তাঁর জিকির করা
৭. মুমিনদের সঙ্গে সম্পর্ক ও কাফিরদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করা
৮. আত্মসমালোচনা করা
৯. কামনা-বাসনা কম করা
১০. আল্লাহর কাছে রোনাজারি ও দুয়া করাআমাদের প্রত্যেকেরই ভাবা উচিত, ঈমানের দুর্বলতার এসব কারণ নিজের মধ্যে আছে কিনা। থাকলে কেন এবং কীভাবে তা দূর করা যায়, সেটা নিয়ে আজ থেকেই সচেতন হওয়া উচিত।