স্টাফ রিপোর্টার:বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেছেন, সবাই বলে বরিশাল হবে সিঙ্গাপুর। আমি বলি বরিশাল বরিশালই থাকবে কিন্তু নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়নে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। আমি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য নগরী রেখে রেখে যেতে চাই। মেয়র গতকাল সোমবার নগরীর সিএন্ডবি রোড এলাকায় অনুষ্ঠিত বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ১৩ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির দেয়া বক্তব্যে একথা বলেন।
মেয়র বলেন, সাবেক সফল মেয়র শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুর পর আমি মহানগর আওয়ামী লীগের হাল ধরে সকলকে সাথে নিয়ে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন এই দলটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করছি। মেয়র মনে করেন নৌকা যদি থাকে তাহলে আওয়ামী লীগ থাকবে। একজন কর্মী হয়ে আমাদের সকলের কাজ হবে প্রধানমন্ত্রীর চাওয়াকে তৃণমূলে বাস্তবায়ন করা। আমরা মুখে মুখে নিজেদের আওয়ামী লীগার বলবো আর সংগঠনের সভানেত্রীর কথা মানবোনা তাহলে কি করে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো।
মেয়র প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা নৌকার সাথে বেইমানী করে তারা কিসের আওয়ামী লীগ? মেয়র বলেন, আমি মন্ত্রী, এমপি চিনিনা। আমি চিনি নৌকা। কারন নৌকার মাঝে আমি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে দেখি, আমি নৌকার মাঝে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেখি। তিনি বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অঅছে বলেই আজ আমরা এক এক জন নেতা। দলের কর্মীদের সহকর্মী ভাবতে হবে। তারা কারো জুতা টানার জন্য সংগঠন করেন না। জনগনের পাশে থাকবেন না আর নেতা সাজবেন তা হবেনা।
মেয়র আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের কোন কোন নেতা আছেন কর্মীদের সালাম টুকোও গ্রহন করেন না। মনে রাখবেন সবাই কিন্তু অর্থ চায় না। ভালো ব্যবহার আশা করে। দল ক্ষমতায় থাকার কারনে আজ সুযোগ সন্ধ্যানী হাইব্রিডরা দলের মধ্যে অণুপ্রবেশ করেছে। আমরা হাইব্রিড মুক্ত ক্লিন দল চাই। আমরা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে চাই। মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার আগেই এ নগরী থেকে মাদক, জুয়া, হাউজিসহ সকল অপকর্ম বন্ধ করে দিয়েছি। তারপরেও দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ কোন অপরাধ করলে সে যদি সব সময় আমার পাশেও থাকে আপনারা নির্ভয়ে ওই অপরাধীর নাম আমার কাছে দেবেন। আমি সাংগঠনিক ও আইনগতভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
মেয়র উপস্থিত সকলের সামনে অঙ্গীকার করে বলেন, প্রয়াত যুবলীগ কর্মী মুরাদুল ইসলাম সাঈদের যদি ওর (মুরাদের) বাচ্চাদের নামে ফ্লাটটি লিখে দেয়া হয় তাহলে আমি ওর সকল দেনা পরিশোধ করে দেবো। তিন বাচ্চার নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে দেবো। আমি কিছু পাওয়ার আশায় রাজনীতি করিনা। আমার পূর্ব পুরুষেরাও এদেশের মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। আমি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী না। বিসিসির বর্তমান জনবল নিয়েই ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন একটি টেকসই উন্নত নগরী গড়তে আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। নগরীর সকল সড়ক ৫ বছরের গ্যারান্টি দিয়ে করে দেয়া হবে। ৫ বছর পর জনগন মূল্যায়ন করবেন আমি তাদের জন্য কিছু করতে পেরেছি কিনা।
১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুদ খন্দকারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উদ্ধোধক ছিলেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বরিশাল সদর আসনের সাবেক এমপি জেবুন্নেচ্ছা আফরোজ। তিনি তার বক্তব্যে বলেণ, মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ তার কর্মের মধ্য দিয়ে এ নগরীর মানুষের মণ জয় করে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী একজন যোগ্য ব্যক্তিকেই মেয়রের আসনে বসিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি সাদিক আবদুল্লাই শওকত হোসেন হিরনের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে একটি সুন্দর নগরী উপহার দিতে পারবেন।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. একেএম জাহাঙ্গীর। সম্মেলনে বরিশালের সংরক্ষিত আসনের সাংসদ রুবিনা মীরা, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম তোতা, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড.আফজালুল করিম, সাইদুর রহমান রিন্টু, প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু, রফিকুল ইসলাম খোকনসহ মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ , ওয়ার্ড ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং দল সমর্থিত কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।