ফেসবুক লাইভে পবিত্র কোরআনকে অবমাননার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সেফাতউল্লাহ সেফুদার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ক্রোক সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামস জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ দিন তার গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আইনুযায়ী আদালত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামস জগলুল হোসেন প্রতিবেদন আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতার-সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।
১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের উপ-পরিদর্শক পার্থ প্রতিম ব্রহ্মচারী আসামি সেফাত উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫/২৯/৩১ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামি সেফাত উল্লাহ সেফুদা অনলাইনে একাধিকবার বিভিন্নভাবে একাধিক ভিডিও আপলোড করেছে, যা ভাইরাল হয়েছে। তিনি এসব ভিডিওর মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল ও আক্রমণাত্মক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন, যা আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক, তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ এবং একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছেন। ফলে দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫/২৯/৩১ ধারার অপরাধের শামিল। তাই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হলো।
গত ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে এ মামলাটি করেন ঢাকা বারের আইনজীবী আলীম আল রাজী (জীবন)। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৯ এপ্রিল বাদী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেখতে পান যে, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা প্রবাসী সেফাতউল্লাহ সেফুদা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে পবিত্র কোরআন সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বাজে কথা বলছেন এবং কোরআনকে অবমাননা করছেন, যা সমগ্র ইসলামী বিশ্বকে মারাত্মকভাবে আহত করছে। লাইভটি ভাইরাল হওয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
এছাড়া এ আসামি একইভাবে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিভিন্ন সময় লাইভে এসে কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল, আক্রমণাত্মক ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন।