১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

কেমন ইমাম চাই

আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০১৯

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

সন্ত্রাস, জুলুম-অত্যাচার দূর করার জন্য ইমামদের দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত এবং মুসল্লিদের নিয়ে ওইসব সন্ত্রাসী কাণ্ড এবং ক্ষয়ক্ষতি থেকে সমাজকে বাঁচাতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।

আর সমাজ সংস্কারে বা মেরামতে প্রথম পরিকল্পনা কী তা-ও আল্লাহতায়ালা কোরআনে বলে দিয়েছেন, যেমন, পুত্র ইসমাইল (আ.) পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে আল্লাহর কাছে সমাজ সংস্কারে বা মেরামতের দোয়া করেছিলেন, বলেছিলেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তাদের মধ্য থেকেই তাদের কাছে এমন একজন রাসূল পাঠান যিনি তাদের কাছে আপনার আয়াতগুলো তেলাওয়াত করবেন, তাদের কিতাব (কোরআন) ও হেকমত (হুকুম-আহকাম) শিক্ষা দেবেন এবং তাদের পবিত্র করবেন। (সূরা বাক্বারা, আয়াত ১২৯)।

কারণ ইবরাহিম (আ.) চিন্তা করলেন, মানুষ যদি আল্লাহর বাণী শোনে এবং কোরআন শিখে তার ওপর আমল করে শিরিকমুক্ত জীবন গড়ে তখন তার ভেতর থেকে এমনিতেই সন্ত্রাস, জুলুম, ইত্যাদি কাজকর্ম দূর হয়ে যাবে। আর যখন ব্যক্তিজীবন থেকে এগুলো দূর হয়ে যাবে, তখন পরিবারে এগুলোর কোনো প্রভাব পড়বে না।

আর পরিবারে প্রভাব না পড়লে সমাজে প্রভাব পড়বে না। আর সমাজে না পড়লে রাষ্ট্রে এর কোনো প্রভাবই পড়বে না। দেশে দেশে শান্তির সুবাতাস বইবে। ইবরাহিম (আ.) কোনো ভার্সিটিতে পড়েননি কিন্তু তার দোয়ার মধ্যে শব্দের গাঁথুনি কী চমৎকার!

যা কোরআন গবেষকদের অবাক করে। তিনি প্রথমে বলেছেন, তেলাওয়াতের কথা, তারপর কোরআন শিক্ষার কথা, অতপর হেকমত (হুকুম-আহকাম) শিক্ষার কথা, অতঃপর পবিত্রকরণের কথা। এর ধারাবাহিকতার কারণ কী? কারণ, প্রথমেই যদি কোরআন শিক্ষার কথা বলা হয়, তাহলে মানুষ তা শিখবে না। কেন? কারণ তার ভেতর ইমান না থাকার কারণে।

কিন্তু যখন তার সামনে প্রথমেই কোরআন তেলাওয়াত করা হবে তখন তার ইমান বেড়ে যাবে। যেমন, কোরআন বলেছেন, যখন তাদের সামনে (মুমিনের সামনে) আল্লাহর কোরআন তেলাওয়াত করা হয় তখন তাদের ইমান বেড়ে যায়। (সূরা আনফাল, আয়াত-২)।

বুঝা গেল কোরআন তেলাওয়াত করলে ইমান বাড়ে। আর যখন মানুষের ইমান বেড়ে যাবে তখন তাকে কোরআন শিক্ষা দিতে সহজ হবে। এ জন্য কিতাব শিক্ষা দেয়ার আগে তেলাওয়াতের কথা বলেছেন। তারপর কোরআন শিক্ষার কথা বলেছেন, কেন?

কারণ কোরআন শিখলে কোরআনের হেকমত শিখতে সহজ হবে অর্থাৎ হেকমত মানে হুকুম-আহকামের ওপর আমল করা সহজ হবে। আর মানুষ যখন কোরআন তেলাওয়াত শোনে, কোরআন শিক্ষা করে, কোরআনের হেকমতের ওপর (হুকুম-আহকাম) আমল করবে তখন মানুষকে পবিত্র করে শিরিকমুক্ত করতে সহজ হবে। এ জন্য দোয়ার মধ্যে ওয়াইউজাক্কিহিম এ শব্দটি সবার পরে এনেছেন।

সুবহানাল্লাহ! কী হেকমতপূর্ণ তার দোয়া। আর কোরআনের প্রতিটি আয়াতের ব্যাখ্যায় একটু চিন্তা করলেই সারমর্ম দাঁড়ায় ‘শিরিক মুক্তকরণের কথা’ অর্থাৎ তাওহিদের কথা।

আরেকটুকু বিশ্লেষণে যাই, কোরআন নাজিল করার প্রয়োজন পড়ল কেন? কারণ, কোরআন নাজিলের আগেই বান্দা সূরা ফাতিহায় আবেদন করেছিলেন, আমাদের সরল-সঠিক পথ দেখাও! বান্দার এ আবেদনে আল্লাহ বলেছিলেন, তাহলে তাওহিদ মানো।

এখন তাওহিদ মানার পদ্ধতি কী? এবং কী কী কাজ করতে হবে? কী কী কাজ বর্জন করতে হবে? সেগুলো জানার জন্য ও বাস্তবায়নের জন্য আল্লাহ ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়ার বরকতে এমন একজনকে (মুহাম্মদ সা. কে) নির্বাচন করে তার ওপর কোরআন নাজিল করলেন, যিনি কোরআন তেলাওয়াতে পারদর্শী, যিনি কোরআনের মুয়াল্লিম অর্থাৎ শিক্ষক এবং হুকুম-আহকাম বাস্তবায়নে পৃথিবীর সব মানুষ থেকে, সব নবী-রাসূলদের থেকে সেরা এবং যিনি সবচেয়ে বেশি মুজাক্কি অর্থাৎ বেশি পবিত্র।

কারণ রাসূল যদি মুজাক্কি না হন অর্থাৎ পবিত্রকারী না হন, তাহলে তিনি কীভাবে মানুষকে ‘মুজাক্কা’ বানাবেন (পবিত্র করবেন) অর্থাৎ শিরিকমুক্ত করবেন। সমাজ সংস্কারে বা মেরামতে কোরআনের এ প্রেসক্রিপশন সমাজের সব ইমামদের গ্রহণ করা উচিত। যেই কোরআন তেলাওয়াত করলে, যেই কোরআন শিখলে, যেই কোরআনের হেকমত শিখলে জীবন থেকে সব সন্ত্রাস, জুলুম, হারাম দূর হয়ে যাবে, কেন আমরা কোরআনের পেছনে ছুটছি না।

এখন আমরা তো মসজিদের ইমাম, তাহলে আমি আমার মসজিদের কতজন মুসল্লিকে শুদ্ধ করে কোরআন পড়া শিখিয়েছি? নামাজের জন্য কতটি সূরা শুদ্ধ করে শিখিয়েছি? কিংবা নামাজের কতটি বিধি-বিধান শিখিয়েছি? কোনোদিন কি খোঁজ নিয়েছি কতজন মুসল্লি শুদ্ধ করে কোরআন পড়তে পারেন কিংবা কতজন পারেন না।

ইমাম হিসেবে আমার মুসল্লিদের কোরআন শেখানোর দায়িত্ব কি আমার নয়? এখন আমিই তো আমার মসজিদে ব্যর্থ, তাহলে সমাজ মেরামতে কীভাবে সফল হব?

আমি সব ইমামদের কথা বলছি না, প্রথমে আমি আমাকে বলছি, অতঃপর বলছি শুধু আমরা যারা দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করছি। আর এ কাজগুলো ওইসব ইমাম দিয়েই সম্ভব যেই ইমাম নিজেকে প্রথমে মুজাক্কি হিসেবে তৈরি করেন। তাই সমাজ থেকে সন্ত্রাস, জুলুম ইত্যাদি কাজকর্ম দূর করার জন্য আমরা মসজিদে কোরআন চর্চার পরিবেশ কায়েম করি।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network