আপডেট: ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
নানা ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে পুরো বছর অতিক্রম করার পণ করেন নাটকের অভিনয়শিল্পীরা। কিন্তু সব পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখে না কিংবা বাস্তবায়ন করতে পারেন না অনেকেই। প্রতিযোগিতার দৌড়ে অনেক অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীও পেছনে পড়েছেন এ বছর।
চলতি বছর হাতেগোনা কয়েকজন অভিনয়শিল্পীকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখানো হয়েছে নাটকে। তাই দর্শকপ্রিয়তাও তাদের জন্যই বরাদ্দ! এদের মধ্যে অন্যতম হলেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, আফরান নিশো, জাকিয়া বারী মম, মেহজাবিন ও তানজিন তিশা।
বছরজুড়ে নাটকে নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেকে ভেঙেছেন আফরান নিশো। এ বছর প্রায় শতকের কাছাকাছি সংখ্যক নাটকে অভিনয় করেন তিনি। দর্শকের কাছেও নাটকের সুপারস্টার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এ অভিনেতা। তবে নির্দিষ্ট কয়েকজন সহশিল্পীর সঙ্গে বারবার জুটি বেঁধে অভিনয় করার কারণে দর্শক মহলে সমালোচনাও হয়েছে তাকে নিয়ে। তবে নাটক থেকে শিগগিরই তার সিনেমায় পাড়ি জমানোর পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে।
প্রায় একদশক ধরে জনপ্রিয়তা ধরে রেখে কাজ করছেন অপূর্ব। এবারও কাজের মাধ্যমে শীর্ষস্থানেই ছিলেন এ অভিনেতা। তবে একই ধরনের চরিত্রে বিশেষ করে বেশিরভাগ নাটকেই তাকে রোমান্টিক হিরোর চরিত্রে দেখা গেছে।
জাকিয়া বারী মম গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বেশি সপ্রতিভ ছিলেন। আগের বছরের কাজের অনুপাতের চেয়ে এ বছর চরিত্র নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছেন বেশি। পর্দায় তার এ অভিনয় রসায়ন দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে। অভিনয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা এ অভিনেত্রীর অভিনয় দক্ষতাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আলোচনা ছিল নাটকপাড়ায়।
তাকেও ধারাবাহিক নাটকে সেভাবে পাওয়া যায়নি। তবে বলিউডের একটি ছবিতে অভিনয়ের কারণে তার অভিনয় ক্যারিয়ার নতুন মাত্রা পেয়েছে। দেশেও ছবির কাজ নিয়েও ব্যস্ত ছিলেন এ অভিনেত্রী। নৃত্যশিল্পী হিসেবে পারদর্শী হলেও সেদিকে এবার কম সময় দিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে এ বছর অভিনয়ের মাধ্যমে মম নিজেকে আরেকধাপ এগিয়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি নতুন বছরে নতুন পরিচয়ে আবির্ভূত হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে মিডিয়ায়।
মডেলিং দিয়ে মিডিয়া ক্যারিয়ার শুরু করলেও এখন পুরোদস্তুর অভিনয়শিল্পী মেহজাবিন চৌধুরী। বিশেষ করে খণ্ডনাটকে তিনি নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। গত বছরের মতো এবারও তার অভিনয় ক্যারিয়ার ছিল সাফল্যে পরিপূর্ণ।
ঈদ, ভালোবাসা দিবসসহ অন্য উৎসব আয়োজনের পাশাপাশি বছরজুড়ে অভিনয় নিয়েই আলোচনায় ছিলেন এ অভিনেত্রী। তবে গত বছর ভিন্নধর্মী চরিত্রে একাধিক নাটকে অভিনয়ে দেখা গেলেও এবার সেটি কম দেখা গেছে। বেশিরভাগ রোমান্টিক গল্পের নাটকেই কাজ করতে দেখা গেছে তাকে। তারপরও ফোকাস সবচেয়ে বেশি ছিল তার দিকেই। কিন্তু জনপ্রিয়তার এ ধারাবাহিকতা আগামী বছর কতটুকু ধরে রাখতে পারবেন তিনি তা নিয়ে কেউ কেউ সন্দিহান।
নাটকের মাধ্যমে মডেল থেকে অভিনেত্রী হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছেন তানজিন তিশা। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর তার অভিনীত নাটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তার বেশিরভাগ নাটকের গল্প গতানুগতিক হলেও অল্প কিছু নাটকে তাকে ভিন্নরূপে দেখা গেছে। তবে রোমান্টিক গল্পের নাটকের বৃত্তে তিনিও ঘুরপাক খেয়েছেন বছরজুড়েই। কাজের এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে নতুন বছরে হয়তো শীর্ষস্থানটি তার দখলেই চলে আসবে বলে মনে করেন অনেকে।
অন্যদিকে সিনিয়র অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে মোশাররফ করিম, জাহিদ হাসান চলতি বছর আগের বছরগুলোর তুলনায় কম কাজ করেছেন। দুটি ঈদ, পহেলা বৈশাখ এবং অন্য কিছু বিশেষ দিবসের নাটকেই তাদের উপস্থিতি চোখে পড়েছে বেশি। মোশাররফ করিম এ বছর ধারাবাহিক নাটকে বেশি ব্যস্ত থেকেছেন।
দুটি নতুন সিনেমায় অভিনয়ের কারণে তুলনামূলক কম কাজ করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। ধারাবাহিক এবং খণ্ডনাটক- দুই মাধ্যমেই সমানতালে কাজ করেছেন তিনি। তবে ঈদের নাটকগুলোয় তার অভিনয়শৈলী ছিল চোখে পড়ার মতো।
অন্যদিকে সিনেমায় অভিনয়ের কারণে নাটকে খুব বেশি সময় দেননি নুসরাত ইমরোজ তিশা। তারপরও বিশেষ দিবসের নাটকে তার সরব উপস্থিতি চোখে পড়েছে দর্শকের। প্রতিযোগিতা না করে নিজের স্টাইল ঠিক রেখে মানসম্মত গল্পের নাটকে তিনি অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন।
এ ছাড়া এ বছর বেশ কয়েকজন অভিনয়শিল্পী আলোচনায় ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম শামীম হাসান সরকার, মনোজ প্রামাণিক, সারিকা সাবাহ, জিয়াউল হাসান পলাশ। তবে তরুণ অভিনেতাদের মধ্যে তৌসিফ মাহবুব, ফারহান আহমেদ জোভানদের জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা দেখা গেছে।