১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

জীবনানন্দ দাশ : কবিতা এবং দরিদ্র্যতা

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

জীবনানন্দ দাশ’র ১২০ তম জন্ম বার্ষিকী

  • অপূর্ব গৌতম

জীবনানন্দ দাশের একমাত্র পরিচয় তিনি কবি। তার মা কুসুম কুমারী দাশও ছিলেন সাহিত্যের অনুরাগী। মায়ের প্রভাবেই জীবনানন্দ ছোটবেলায় বেশ কয়েকটা পদ্য লিখেছিলেন। পদ্য মানে কবিতা। আমরা এখন আর কবিতাকে পদ্য বলিনা। ১৯১৯ সালে বরিশাল থেকে প্রকাশিত ব্রহ্মবাদী পত্রিকায় তার প্রথম পদ্য (কবিতা) ছাপা হয়। নাম ছিল বর্ষা আবাহন।

সাতটি তারার তিমির প্রকাশিত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুবোর্ধ্যতার অভিযোগ ওঠে। নিজ কবিতার অবমূল্যায়ন নিয়ে জীবনানন্দ খুব ভাবিত ছিলেন। কবি নিজেই তার রচনার মর্মকথা একটু প্রাঞ্জল এবং সাবলীল ভাষায় প্রকাশ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন যদিও শেষাবধি তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে কবি নিজেই নিজ রচনার কড়া সমালোচক ছিলেন। জীবনানন্দ দাশ জীবদ্দশায় প্রায় সাড়ে আটশ’র বেশি কবিতা লিখলেও মাত্র ২৬২ টি কবিতা পত্রিকায় দিয়েছিলেন প্রকাশের জন্য। অর্থের প্রয়োজনে বেশ কিছু প্রবন্ধ লিখেছিলেন এবং প্রকাশ করেছিলেন। মনোতৃষ্ণা মেটাতে বেশ কিছু গল্প উপন্যাস লিখলেও প্রকাশের ব্যবস্থা নেননি কবি।

জীবনানন্দ দাশ বিংশ শতাব্দীর আধুনিক বাঙালি কবি। বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়েছেন যে ক’জন কবি সাহিত্যিক জীবনানন্দ দাশ তন্মধ্যে অন্যতম। বর্তমান সময়ের একজন জনপ্রিয় কবির নাম জীবনানন্দ দাশগুপ্ত (মিলু)। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ জীবনানন্দের কাব্যে হয়ে উঠেছে চিত্ররূপময়। একারণেই তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি’ অভিধা পেয়েছেন। বুদ্ধদেব বসু তাকে নির্জনতম কবি বলেছেন। অন্নদাশঙ্কর রায় তাকে ‘শুদ্ধতম কবি’ অভিধা দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল-পরবর্তী বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি বলতে আমরা জীবনানন্দ দাশকেই বুঝে নেই।

যৌবনের প্রারম্ভেই আমরা জীবনানন্দের কবি প্রতিভা লÿ্য করছি। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম প্রবন্ধ ‘স্বর্গীয় কালীমোহন দাশের শ্রাদ্ধবাসরে’ বরিশালের ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার পরপর তিনটি সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ঐ বছরেই কল্লোল পত্রিকায় ‘নীলিমা’ কবিতাটি প্রকাশিত হলে তা অনেক তরুণ কাব্যরসিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অত:পর ঢাকা, কলকাতা এবং অন্যান্য জায়গা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন সাহিত্যপত্রিকায় তার লেখা ছাপা হতে থাকে; যেগুলির মধ্যে ছিল সে সময়কার সুবিখ্যাত পত্রিকা কল্লোল, কালি ও কলম, প্রগতি প্রভৃতি। ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝরা পালক’ প্রকাশিত হয়। সে সময় থেকেই তিনি তার পারিবারিক উপাধি ‘দাশগুপ্তের’ বদলে কেবল ‘দাশ’ লিখতে শুরু করেন। জীবনানন্দ দাশ’র জীবন কেটেছে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে। কবিতা এবং দারিদ্র্যতা কবির সাথে মিশেছিল আজীবন। জীবদ্দশায় এরা কেউই ছেড়ে যায়নি কবিবে।

শুদ্ধতম এই কবির ১২০ তম জন্ম বার্ষিকী আগামীকাল ১৭ ফেব্রæয়ারি সোমবার। কবির প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ ভিত্তিক সংগঠন ‘উত্তরণ’ শুরু করেছে তিন দিনব্যাপী ‘জীবনানন্দ মেলা’। প্রগতি লেখক সংঘ, বরিশাল জেলা কমিটি কবির জন্মদিনে পুষ্পিত শ্রদ্ধা জানাবে জীবনানন্দ সড়কের জীবনানন্দ অঙ্গণের প্রতিকৃতিতে। শ্রদ্ধা জানাবে জাতীয় কবিতা পরিষদ, বরিশাল। বাংলা সাহিত্যের এই আধুনিক কবির জন্মদিনে শ্রদ্ধা ভালোবাসা অবিরাম।

অপূর্ব গৌতম
সম্পাদক, মালবিকা (সাহিত্যের ভাঁজপত্র)
০১৭৬৮-৯৫৫৩০১
apurbagautam@gmail.com

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network