২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শিরোনাম
মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই শিক্ষার মান নেমে যাওয়ায় উদ্বেগ শিক্ষার মান উন্নয়ন না হলে শুধু বদলী নয় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে-মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষন পাঠ করলো ৭’শ শিক্ষার্থী

দুর্নীতি, টেন্ডার-চাঁদাবাজি ও দখলদার : জেলা-উপজেলায় তালিকা হচ্ছে

আপডেট: মার্চ ৫, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের প্রায় ছয় মাস পর এবার সব জেলা-উপজেলায় দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হচ্ছে।

এরই অংশ হিসেবে একটি তালিকা তৈরি করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এতে ক্ষমতার অপব্যবহার, টেন্ডার ও চাঁদাবাজি, সাধারণ মানুষকে হয়রানি, অবৈধ দখলদারসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

যেখানে জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে স্থানীয়ভাবে প্রভাববিস্তারকারী নেতারাও থাকছেন।

এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট।

খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

দুদকের একজন পরিচালক জানান, এসব গোয়েন্দা কর্মকর্তা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে- এমন কর্মকর্তাদের ঘুষ-দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করে নিয়মিত প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করবেন।

দুদকের কাছে এরই মধ্যে যেসব তথ্য-উপাত্ত এসেছে, সেই তথ্যের সঙ্গে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের তথ্য মিলিয়ে দেখা হবে।

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি, ক্ষমতার অপব্যবহার-দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনৈতকতার মাধ্যমে যে বা যারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করছেন, তাদের বিরুদ্ধেই গোপন অনুসন্ধান ও তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

আধুনিক গোয়েন্দা ব্যবস্থাপনায় যেভাবে তথ্যবিন্যাস করা হয়, ঠিক একইভাবে তা সংরক্ষণ করা হবে।

একটি বিশেষ গোপন কোডের মাধ্যমে ওই কর্মকর্তারা কমিশনে গোয়েন্দা তথ্য পাঠাবেন।

কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের গোয়েন্দা শাখা এসব তথ্য নিয়মিত কমিশনে উপস্থাপন করবে।

পূর্ণাঙ্গ কমিশন এসব তথ্য বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘নির্মোহ গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে দুর্নীতির বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সংগ্রহ করা সহজ হবে।

এর মাধ্যমে অনুপার্জিত আয় অর্জনকারীদের সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।

ফলে অনুপার্জিত আয় ভোগ করার পথ আরও কণ্টকাকীর্ণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, কেউ দুর্নীতি করে ছাড় পাবে না।

দুর্নীতি করবে আবার এলাকায় দাপটের সঙ্গে চলবে, এমন লোকজনকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি যত বড় প্রভাবশালীই হোন না কেন।

যদি কেউ দুর্নীতিবাজের পক্ষ নিয়ে তাকে রক্ষা করতে চায়, তদন্তে তাকেও আনা হবে।

৬ জানুয়ারি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের ছাড় দেয়া হবে না।

দুর্নীতিবাজ যে-ই হোক, যত শক্তিশালীই হোক না কেন।

দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি তখন জানিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরও বলেছিলেন, ‘যে-ই অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে জড়িত থাকুক, তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।

সাধারণ মানুষের ‘হক’ যাতে কেউ কেড়ে নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’

জানা যায়, দুদক তখন থেকেই ঢাকার বাইরের দুর্নীতিবাজদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজটি শুরু করে।

তবে মাঝখানে কাজটি একটু শিথিল হয়ে পড়েছিল।

নরসিংদীর যুবলীগ নেত্রী পাপিয়া গ্রেফতারের পর অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে দুদকও নড়েচড়ে বসে।

এ পর্যায়ে নতুন করে শুরু হয়েছে তালিকা তৈরির কাজ।

টিমের একজন সদস্য জানান, গত এক সপ্তাহে অন্তত ২৫টি জেলা ও ১৫৫ উপজেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্টে আসা নাম, দুদকসহ প্রশানের বিভিন্ন স্তরে জমা পড়া অভিযোগ, দুদকের জেলা ও সমন্বিত জেলা অফিস, স্থানীয় সোর্স, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর- এই পাঁচ সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তালিকা চূড়ান্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

গত বছর সেপ্টেম্বরে রাজধানীতে শুরু হওয়া ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক ব্যক্তি তালিকাভুক্ত হয়েছেন।

দুদকের দায়ের করা ২৯ মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা সম্রাট, খালেদ, জি কে শামীমসহ অন্তত ৬১ জন।

অপরদিকে চাঁদাবাজি, মানি লন্ডারিং, দখল, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধে ক্যাসিনো তালিকাভুক্তদের বিরুদ্ধে সিআইডির পক্ষ থেকেও প্রায় ৫০টি মামলা করা হয়েছে।

অনেক মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও দেয়া হচ্ছে।

এ অবস্থায় নরসিংদীর যুবলীগ নেত্রী পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন দেশ ছেড়ে পালানোর সময় গ্রেফতার হলে নতুন করে সরকারদলীয় বিভিন্ন কমিটির নেতাদের দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে।

এ কারণেই দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্নীতিবাজদের তালিকা তৈরির কাজটি শুরু হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, পাপিয়ার ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

যদিও প্রধানমন্ত্রী শক্ত অবস্থানে থাকায় পাপিয়ার মতো প্রভাবশালী নেত্রীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের নেতাদের ব্যাপারে খুব সতর্ক এবং ছাড় না দেয়ার পক্ষে মনোভাব ব্যক্ত করেছেন বলে জানান দলের একজন সিনিয়র নেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নেতা যুগান্তরকে বলেন, পাপিয়া গ্রেফতারের পর রিমান্ডে যাদের বিষয়ে তথ্য দিচ্ছে, তা কোনোভাবেই প্রত্যাশা ছিল না।

তাকে নেত্রী করা হয়েছে অপরাধ করার জন্য নয়।

জনগণের সেবা করার জন্য।

মহিলা যুবলীগের কাজ কী জানতে চাইলে ওই নেতা বলেন, এটা নিয়ে আমি কথা বলব না।

এদের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে দলের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে।

এদিকে দুদকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আমরা জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দুর্নীতিবাজদের বিষয়ে যেসব তথ্য সংগ্রহ করছি, তাতে শুধু দলের নেতাই নন, উপজেলা বা ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি এমনকি স্থানীয় সংসদ সদস্যের নামও যদি ওঠে আসে, তাদেরও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

প্রায় এক ডজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে নানা মাধ্যম থেকে দুদকের কাছে দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্য এসেছে।

তাদের মধ্যে কয়েকজনের ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছে।

এছাড়া কয়েকটি জেলার নেতাদের বিরুদ্ধেও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

সব অভিযোগ একত্র করে ক্যাসিনোকাণ্ডের বাইরে আরেকটি তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network