আপডেট: মার্চ ৮, ২০২০
অগ্নিদগ্ধ পপি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
পপি জানান, স্বামী সংসার খরচ না দেয়ায় হতাশায় দুই মেয়েকে খুন করেছেন তিনি।
সেই সঙ্গে কীভাবে মেয়েদের হত্যা করেছেন তার রোমহর্ষক বর্ণনাও দিয়েছেন পপি।
শনিবার ঢামেক বার্ন ইউনিটের অবজারভেশন কক্ষে সাংবাদিকদের পপি বলেন, শুক্রবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ঘুমন্ত দুই শিশু জান্নাত ও আলভীকে হত্যার পরিকল্পনা করি। প্রথমে আগুনে পুড়িয়ে ও পরে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করি।
এর পর নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালাই।
অগ্নিদগ্ধ এই নারী আরও বলেন, সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারছিলাম না।
সংসার চালানো যাচ্ছিল না।
স্বামী সংসার খরচ দিত মাত্র এক হাজার ১০০ টাকা।
ওই টাকায় কিছুই করা যাচ্ছিল না। এ নিয়ে হতাশা, বেঁচে থাকার নিরাশা থেকেই দুই সন্তানকে খুন ও নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
১৩ বছর আগে পপির বিয়ে হয়।
তার স্বামী মোজাম্মেল হক বিপ্লব মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের বাজারে ইলেকট্রনিকসের ব্যবসা করেন।
বিয়ের পর থেকে পপি গোড়ানে তার বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকতেন।
পরে সেখানেই বাসা ভাড়া নেন তার স্বামী। মাঝে মাঝে গোড়ানে পরিবারের কাছে আসতেন মোজাম্মেল।
তাদের দুই মেয়ে আলফি ও জান্নাতুল।
তারা দুজনেই ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলে পড়ত।
আলফি চতুর্থ শ্রেণিতে ও জান্নাতুল প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পপি বলেন, টাকা চাইতে গেলেই তিনি আমাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে হুমকি দিতেন।
বাচ্চাদের পড়াশোনার কথা বললে বলেন, তুমি বাচ্চাদের নিয়ে শ্রীনগরে চলে আসো।
বাচ্চাদের এখানে ভর্তি করাব। এখানে ভালো মাদ্রাসা আছে।
তিনি বলেন, গত মাসের ২৮ তারিখে সর্বশেষ ঢাকায় আসেন বিপ্লব।
শুক্রবার আবার আসার কথা থাকলেও আসেননি। মোবাইলে বলেন রোববার আসবেন।
এর পর মেয়েদের পড়াশোনার টাকার কথা বললে খারাপ ব্যবহার করেন।
তবে এই খুনের নেপথ্যে আরও কেউ জড়িত কিংবা অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
খিলগাঁও থানার এসআই রুহুল আমিন বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা যায়, পপিই দুই সন্তানকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
তাদের পারিবারিক কলহ চলছিল।
তবে খুনের নেপথ্যে আরও কেউ জড়িত কিনা কিংবা অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।