আপডেট: মার্চ ১১, ২০২০
সংসার ভাঙার খবরে গণমাধ্যমগুলোতে শিরোনামে উঠে এসেছেন এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর।
সেসব অভিযোগের মধ্যে একটি হলো, ছেলে হওয়ার পর থেকে বাড়ি না এসে অন্য নারীর কাছে গিয়ে থাকতেন অনিক।
শাবনূরকে বিয়ে আগেই বিবাহিত ছিলেন তিনি।
এসব অভিযোগের পাল্টা জবাবে শাবনূরের বিরুদ্ধে অনিক অভিযোগ তুলেন, তিনি নন, শাবনূরই ছিলেন বিবাহিত।
তাকে বিয়ে করার আগে এক চীনা নাগরিককে বিয়ে করেছিলেন শাবনূর এবং ইস্কাটনের বাসায় ওই চীনা নাগরিকের সঙ্গে কয়েকবার হাতেনাতে ধরাও পড়েন শাবনূর!
এমন গুরুতর অভিযোগ প্রসঙ্গে এক গণমাধ্যমকে শাবনূর বলেন, ‘চীনা নাগরিককে বিয়ে করলে অনিককে কেন বিয়ে করব?
অনিক যার দিকে আঙুল তুলছে, সেই ব্যক্তি যে কোনো দিক থেকে অনিকের চেয়ে ভালো।
অনিক একটা বাজে ছেলে, নেশাগ্রস্ত।’
তবে অনিককে বিয়ে করতে গেলেন কেন প্রশ্নে শাবনূর এক কথায় জবাব দেন, ‘মোহে পড়ে তাকে বিয়ে করেছিলাম।
বড় ভুল করেছি আমি।’
অনিক নিজের পাপ ঢাকতে এই চীনা নাগরিকের প্রসঙ্গ টানছেন বলে দাবি করেন শাবনূর।
তিনি বলেন, ‘আমি নই, নতুন বউকে নিয়ে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছে অনিক।
সেসব ছবি আছে আমার কাছে।
অনিকের নতুন পাসপোর্টের কপিও আমার কাছে।
সেখানে স্ত্রী হিসেবে নাম লেখা- আয়েশা আক্তার।
আমার নাম তো কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর।
আয়শা কে তাহলে?
বিয়ে না করলে ওই নারীর নাম ব্যবহার করল কেন সে?’
শাবনূর বলেন, ‘ওই নারীকে নিয়ে অনিক যেসব হোটেলে ছিলেন, যেখানে ঘুরে বেরিয়েছেন সব রকম তথ্য সংগ্রহ করা আছে আমার।
তারপরই তার বিয়ের কথা ফাঁস করেছি।
আমি শাবনূর, পরিচিত ব্যক্তিত্ব।
আমি আর দশটা সাধারণ মানুষ নই যে, মিথ্যা অভিযোগ তুলে ফায়দা লুটব।
এসব আমাকে মানায় না।’
করোনাভাইরাসের কারণে দেশে ফিরতে পারছেন না জানিয়ে শাবনূর বলেন, ‘চেয়েছিলাম দেশে ফিরতে।
কিন্তু হঠাৎ এই করোনা পরিস্থিতিতে সব আটকে গেল।
তবে উকিলের সঙ্গে কথা হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেশে যাব।
এরপর নতুন আরো কিছু সিদ্ধান্ত নেব।
আইজানের ভরণ-পোষণের টাকা দাবি করব। ’
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরেই অবশ্য গুঞ্জন ছিল, স্বামী অনিকের সঙ্গে থাকছেন না শাবনূর।
সে সময় মিডিয়াপাড়ায় বলাবলি হয়েছিল, শাবনূরের সংসার ভেঙে গেছে।
তবে সেসব গুঞ্জন বরাবরই অস্বীকার করে এসেছিলেন শাবনূর ও অনিক দুজনই।
এবার সেসব গুঞ্জন নিজেই সত্যি প্রমাণ করলেন শাবনূর।
বনিবনা না হওয়ায় স্বামী অনিক মাহমুদ হৃদয়কে তালাক দিয়েছেন তিনি।
২৬ জানুয়ারি এ নায়িকার স্বাক্ষর করা একটি তালাক নোটিশ অ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে স্বামীর ঠিকানায়।
তালাক নোটিশের অনুলিপি অনিকের এলাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান এবং কাজী অফিস বরাবরও পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে সাক্ষী হিসেবে নুরুল ইসলাম ও শামীম আহম্মদ নামে দুজনের নাম উল্লেখ রয়েছে।
ডিভোর্স নোটিশে শাবনূর অভিযোগ করেছেন, ‘আমার স্বামী অনিক মাহমুদ হৃদয় সন্তান এবং আমার যথাযথ যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করে না। সে মাদকাসক্ত।
অনেকবার মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় এসে আমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে।
আমাদের ছেলের জন্মের পর থেকে সে আমার কাছ থেকে দূরে থাকছে এবং অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে আলাদা বসবাস করছে।’
‘একজন মুসলিম স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী যে ব্যবহার করে অনিক সেটা করছে না, উল্টো নানাভাবে আমাকে নির্যাতন করে।
এসব কারণে আমার জীবনে অশান্তি নেমে এসেছে।
চেষ্টা করেও এসব থেকে তাকে ফেরাতে পারিনি।
বরং আমার সন্তান এবং আমার ওপর নির্যাতন আরও বাড়তে থাকে।
উপরোক্ত কারণগুলোর জন্যই তার সঙ্গে আমার আর বসবাস করা সম্ভব নয় এবং আমি কখনও সুখী হতে পারব না।
তাই নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং সুন্দর জীবনের জন্য তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাই।
মুসলিম আইন এবং শরিয়ত মোতাবেক আমি তাকে তালাক দিতে চাই।
আজ থেকে সে আমার বৈধ স্বামী নয়, আমিও তার বৈধ স্ত্রী নই।’
শাবনূরের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অনিক জানিয়েছেন, তিনি নন, শাবনূরই মদ্যপ এবং কোনো এক চীনা নাগরিককে বিয়ে করেছিলেন তিনি।