আপডেট: মার্চ ২০, ২০২০
করোনা ভাইরাসের কারণে যে সব এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হবে, সেসব এলাকায় লকডাউন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘মাদারীপুর, শরিয়তপুর, ফরিদপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা লকডাউন করার কথা ভাবছে সরকার।
ওইসব এলাকায় বিদেশ থেকে বেশি প্রবাসী এসেছেন।
তারা অনেকে বিদেশ থেকে এসে কোয়ারেন্টাইনে না থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’
খবর বাসসের।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
লকডাউন হলে ওইসব এলাকার লোকজন প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ছাড়া সব ধরণের দোকানপাট ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ও কোয়ারেন্টাইনের জন্য রাজধানীর টঙ্গীর ইজতেমা মাঠকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতের জন্য ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীকে বলা হয়েছে।
সে জায়গা তারা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে।’
মন্ত্রী জানান, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ছাড়াও আরো কয়েকটি হাসপাতালে দুই হাজারটি বেড প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এরপরও যদি প্রয়োজন হয় আরো বড় জায়গা হিসেবে ইজতেমা মাঠকে ব্যবহার করা হবে।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘বিদেশ থেকে এসে অনেকে কোয়ারেন্টাইনে না থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
অনেকে মিথ্যা কথা বলছেন।
স্বীকার করছেন না তারা বিদেশ থেকে এসেছেন।
এর মাধ্যমে তারা নিজের ও অন্যদের ক্ষতি করছেন।’
প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশে যারা আছেন তারা দয়া করে এই সময়ে দেশে আসবেন না।
আপনার আপনজনদের ক্ষতি করবেন না।
দেশের স্বার্থে আপনারা এ কাজটি করুন।
আমরা দুইমাস ধরে চেষ্টা করছি।
এজন্য অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশ অনেক ভালো আছে।’
বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে তুলনামূলক ভালো অবস্থায় আছে দাবি করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি।
আমাদের আক্রান্তের সংখ্যা কম, মৃত্যু হয়েছে একজনের।
যে ব্যক্তি মারা গেছেন, তিনি কিন্তু অনেক বয়স্ক ছিলেন।
অনেক ধরনের রোগে ভুগছিলেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে দেশে কোনো রকম পর্যটন চলবে না।
ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান শিথিল করতে হবে।
এমনকি বিয়ের অনুষ্ঠানও বন্ধ করতে হবে।
বাস, লঞ্চ ও ট্রেনেও যেন কম যাত্রী-যাওয়া আসা করে।’
এ সংকট মোকাবিলায় সব মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব দেশ আমাদের সাহায্য করছে।
টেস্টিং কিট দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেয়ালে সতর্কীকরণ লেখা ঝুলিয়ে দিতে- সেটিও দেওয়া হবে।’
জ্বর হলে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জ্বর হলে কেউ যেন ভ্রমণে না বের হয়, বাইরে যেন বের না হয়- এ বিষয়টি সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে।
যাদের জ্বর হয়েছে তারা কোনোভাবে যেন ভ্রমণ না করে।
গাড়িতে না ওঠে।
এটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’
সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য সবাই লোকসমাগম এড়িয়ে চলবেন।
আমরা কক্সবাজারে মানুষের ঢল দেখেছি।
আপনারা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ করবেন না।
কোনো সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে বিরত থাকবেন।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানও সীমিত করবেন।
আমরা চাই, বিয়ের অনুষ্ঠানও যেন এখন বড় পরিসরে করা না হয়।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘কয়েকটি এলাকায় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেখলাম বিশাল বিশাল মিছিল হচ্ছে।
নির্বাচনি ক্যাম্পেইন বন্ধ করতে বলেছি।
কিন্তু দুঃখের বিষয় বুধবারও সমাবেশ হয়েছে।
এসব থেকে বিরত থাকুন।
আমাদের চেষ্টা চলছে।
করোনারোধে সবাই মিলে চেষ্টা করতে হবে।’