২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

পদ্মা সেতুর কাজ কি আবারও পেছাবে

আপডেট: এপ্রিল ৫, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

করোনার প্রভাবে পদ্মা সেতুতে জনবল সংকট না থাকলে চট্রগ্রাম ও মোংলা বন্দরে আটকে পড়া মালামাল খালাস করতে না পরায় সেতুর কাজে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি-রপ্তানিকারকের কার্যালয় ও সিঅ্যান্ডএফ কম্পানি বন্ধ থাকায় পদ্মা সেতুর আটকে পড়া বড় বড় বেশ কয়েকটি চালান খালাস করা সম্ভব হচ্ছেনা।

দ্রুত এ চালান খালাস করতে না পারলে পদ্মা সেতুর কাজে তা ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

আর তা হলে সেতুর কাজ পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এখন পুরোদমে কাজ চলছে দেশের এই বৃহৎ প্রকল্পে। কাজের লোকের অভাব নেই।

পর্যাপ্ত লোক পাওয়া যাচ্ছে এখন পদ্মা সেতুর কাজে।

চীন থেকেও প্রায় অধিকাংশ প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও কর্মী ফিরে এসে কাজ যোগ দিয়েছে।

তাই বিশ্বজুড়ে করোনার প্রভাব বাংলাদেশের পদ্মা সেতুর কাজকে লোকবল নয় বরং দুটি বন্দরে আটকে পড়া মালামালই কাজকে পিছিয়ে দিতে পারে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, আমাদের আশঙ্কা অনেকটা দূর হয়ে গেছে।

নোভেল করোনাভাইরাসের মধ্যেও পুরোদমে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ।

জনবলের অভাবে সেতুর কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করলেও তা এখন কেটে গেছে।

আমাদের শ্রমিক-কর্মীর অভাব নেই। পর্যাপ্ত কর্মী পাচ্ছি।

কারণ সারা দেশে সরকারি ছুটির কারণে অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন।

শ্রমিকদের কাজ নেই। তাই তারা কাজের সন্ধানে ছুটে আসছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পে।

কারণ আমাদের প্রকল্প এলাকা করোনাভাইরাস মুক্ত।

দেশি-বিদেশি কর্মীরা স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছেন।

নদী এবং তীরে সবখানেই কাজ আর কাজ।

কর্মীদের সবাই মাস্ক ব্যবহার করছেন।

মাথায় নিরাপত্তা ক্যাপ আর মুখে মাস্ক।

হাতে গ্লাভস নিয়ে হরদম কাজ করছেন।

নিয়মিত স্প্রে করে ভাইরাসমুক্ত রাখা হচ্ছে সেতু এলাকা।

তাই এখানে কাজ করতে কোনো অসুবিধা নেই।

তিনি আরো জানান, জাজিরা প্রান্তে এখন সেতুর ওপর দিয়ে নির্মাণ কাজের (মালবাহী) যানবাহন চলাচল করছে।

ভারি ভারি লরি, ট্রাক যাচ্ছে সেতুর ওপর দিয়ে।

বসে যাওয়া স্প্যানের ভেতরে নিচ তলায় বসছে রেলওয়ে স্ল্যাব।

আর ওপর তলায় বসছে রোডওয়ে স্ল্যাব।

৬.১৫ কিলোমিটা দৈর্ঘ্যরে এই সেতুতে রোডওয়ে স্ল্যাব স্থাপন হবে মোট ২৯১৭টি।

এর মধ্যে ২৬০০ স্ল্যাব তৈরি হয়ে গেছে।

বাকি ৩১৭ রোডওয়ে স্ল্যাব এখন তৈরির কাজ চলছে।

এ পর্যন্ত রোডওয়ে স্ল্যাব স্থাপন হয়ে গেছে ৪ শ।

আর রেলওয়ে স্ল্যাব স্থাপন হয়েছে ২৯৫৯টি।

রেলওয়ের সব স্ল্যাবই তৈরি হয়ে গেছে।

এর মধ্যে রেলওয়ে স্ল্যাব স্থাপন হয়েছে ৮৪৩টি।

দেওয়ান আব্দুল কাদের বলেন, লোকবল সংকটের এখন আর কোনো ভয় নেই।

তবে চীন থেকে আসা পদ্মা সেতুর মালামালের বৃহৎ কয়েকটি চালান করোনার কারণে দেশে সরকারি দুটি ঘোষণা থাকায় চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে আটকে গেছে।

এসব মালামাল ছাড় করাতে হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি-রপ্তানিকারকের কার্যালয়ের অনুমতি লাগে।

তা ছাড়া সিঅ্যান্ডএফ কম্পানিও লাগে মালামাল খালাস করতে।

দুটি বন্দরে স্প্যান, কেমিক্যাল, নদীর ওপরে বিদ্যুৎ টাওয়ারে জন্য ভারী স্টিলের পাতসহ কয়েকটি চালানের অনেক মালামল আটকে পড়েছে বন্দর দুটিতে। বলতে গেলে পদ্মা সেতুর বাকি সকল মালামালই এখন আটকা পড়েছে এ দুটি বন্দরে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও এসব মালামাল খালাস করার জন্য চিঠি দিয়ে তাগাদা দিচ্ছে।

দ্রুত এসব মালামাল ছাড়াতে না পারলে আবারো পিছিয়ে যেতে পারে পদ্মা সেতুর কাজ।

সরেজমিন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, করোনার মধ্যেও নির্মাণ কাজ চলছে। সেতুর একবারে ওপরে জাজিরা প্রান্তে বসানো হচ্ছে রোডওয়ে স্ল্যাব। সেতুটির ওপরে এখন সড়কপথ এতটাই দীর্ঘ হয়ে গেছে, হেঁটে শেষ করা কষ্টসাধ্য।

তাই ব্যাটারিচালিত তিনচাকার একটি অটোরিকশা রাখা হয়েছে। এটিতে করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাইটে যাতায়াত করছে। স্প্যানের ভেতরে নিচতলায় বসছে রেলওয়ে স্ল্যাব।

এসব স্ল্যাব নিচ থেকে ওঠানো এবং বসানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি।

বড় বড় ক্রেন খুব অল্প সময়েই ভারি ভারি স্ল্যাব যথা স্থানে নিয়ে আসছে। আর বড় বড় রডসহ নানা রকমের ভারি উপকরণে শক্তভাবে খাপে খাপে বসিয়ে দিয়ে সিমেন্টসহ নানা রকমের সামগ্রী ব্যবহার করছে। এই চিত্র শুধু স্প্যানের ওপরে আর নিচেই নয়, এখন ৯ কিলোমিটার সেতু এলাকার সবখানেই কর্মব্যবস্ততা।

এ ব্যস্ততা বেশি লক্ষ করা গেছে মাওয়া প্রান্তের কুমারভোগের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে। এখানেও স্প্যান ফিটিংসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কর্মীরা।

এদিকে পদ্মা সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৭টি স্প্যান বসানো সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে ৬.১৫ দৈর্ঘ্যরে এই সেতুর ৪ হাজার ৫০ মিটার এখন দৃশ্যমান হয়েছে। আর মাত্র ১৪টি স্প্যান বসানো হলেই এ সেতুর পুরোপুরি দৃশ্যমান হবে।

এ বছর জুন/জুলাইয়ের মধ্যে বাকি স্প্যানগুলো বসানোর কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষের। মূল সেতুর পিয়ার সংখ্যা ৪২টি। যার সবক’টিই সম্পন্ন হয়ে গেছে।

মাওয়া ভায়াডাক্টে (সংযোগ সেতু) পিয়ার ৪৪টি, জাজিরা ভায়াডাক্টে (সংযোগ সেতু) পিয়ার ৪৭টি।

দ্বিতল এ সেতুটি বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করছে চায়না মেজর ব্রিজ কম্পানি। কর্তৃপক্ষ এখনও আশাবাদী আগামী বছরই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল সম্ভব হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network