আপডেট: মে ২২, ২০২০
ঝালকাঠির নলছিটিতে ইয়াবা মামলার আসামি জামিনে বের হয়ে ইউপি সদস্য, ব্যবসায়ীসহ একই পরিবারের ১২ জন কে কুপিয়ে-পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ১৯ মে আহত আরমানের ভাই ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নলছিটি থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারনামীয় নামধারী আসামিরা হলো, আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার এর ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী মারিয়াস হাওলাদার, সেলিম পান্না, সুমন হাওলাদার, আক্তার কাজীর ছেলে রাজীব কাজী, মালেক কাজী, বাবুল তালুকদারের ছেলে রাকিব তালুকদার, মোজাম্মেল তালুকদারের ছেলে রাজু তালুকদার, মনাসের হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার, শাজাহান হাওলাদার, জামাল হাওলাদার, আবু লালের ছেলে জাকারিয়া, নুর আলীর ছেলে নুরুল হাওলাদার। এদের মধ্যে নলছিটি থানা পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। এদিকে হামলায় আহতরা হলো, ভৈরবপাশা ঢাপর গ্রামের ইট বালু পাথর ব্যবসায়ী আরমান হাওলাদার, তার চাচাতো ভাই শহীদ, আব্বাস আলী, ভাতিজা ইমন, কবির, চাচাতো বোন নয়ন বেগম, আসমা বেগম, হারুন হাওলাদার, অজ্ঞাতনামা সহ ১২ জন। এদের মধ্যে আরমান এবং নয়ন বেগম আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত দুই জনের অবস্থা গুরুতর তাদের একজনের ডান অন্যজনের বাম হাত ভেঙ্গে গেছে তবে সুস্থ হতে সময় লাগবে এমনটাই জানিয়েছেন শেবাচিম হাসপাতালের অর্থোপেডিকস এর কর্তব্যরত চিকিৎসক। বাদী আনোয়ার হোসেন জানান, নলছিটি উপজেলার ভৈরবপাশা ঢাপর কাঠি গ্রামে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন পরিবারের সাথে ব্যবসায়ীক কোন্দলের জের ধরে প্রতিবেশী মারিয়াস হাওলাদার ও তাদের পরিবারের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। গত ৯ মার্চ নলছিটি থানা গোয়েন্দা পুলিশ হাতেনাতে ইয়াবাসহ মারিয়াস হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। গত সোমবার ১৮ মে মারিয়াস জামিনে বের হয়।মারিয়াস ইয়াবা মামলায় জেল হাজতে যাওয়ার বিষয়টিকে দায়ী করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ তাদের পরিবারের লোকদের উপর। মারিয়াসের ধারণা গোয়েন্দা পুলিশকে আনোয়ার হোসেন সহ তাদের পরিবারের লোকজন ধরিয়ে দেয়। জামিনে বের হয়ে ঐদিন মারিয়াস সহ তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা দায়ী করে আনোয়ার হোসেনসহ তাদের পরিবারের উপর হত্যার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন সোমবার সন্ধ্যার পর আনোয়ার হোসেনের স্বজন জাহিদ এবং জুয়েল মোটরসাইকেলযোগে বের হলে ঢাপর গ্রামে হঠাৎ তাদেরকে পথরোধ করেন মারিয়াস, সেলিম পান্না, রাকিব তালুকদারসহ তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা। একপর্যায়ে মারিয়াস সহ অন্যান্যরা জাহিদ ও জুয়েল কে হামলা চালিয়ে তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জোরপূর্বক রেখে দেয়। পরে জুয়েল ও জাহিদ দৌড় দিয়ে পালিয়ে এলাকার সুতালড়ী ব্রিজের নামক স্থানে গিয়ে বসেন। রাত দশটার দিকে পুনরায় ইয়াবা ব্যবসায়ী মারিয়াস হাওলাদার, সেলিম পান্না, সুমন হাওলাদার, আক্তার কাজের ছেলে রাজীব কাজী, মালেক কাজী, বাবুল তালুকদারের ছেলে রাকিব তালুকদার, মোজাম্মেল তালুকদারের ছেলে রাজু তালুকদার, মনাসের হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার, শাজাহান হাওলাদার, জামাল হাওলাদার, আবু লালের ছেলে জাকারিয়া, নুর আলীর ছেলে নুরুল হাওলাদারসহ তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা হত্যার চেষ্টায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জুয়েল এবং জাহিদ এর উপর ফের হামলা চালায়, তাদের ডাক চিৎকারে আরমান হাওলাদার, শহীদ, নয়ন বেগম ইমন আব্বাস আলী, আসমা বেগম, কবির হাওলাদারসহ অজ্ঞাতনামা স্বজনরা আসলে তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে মারিয়াস সহ অন্যান্য এজাহারনামীয় আসামিরা। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক নলছিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। আহতদের অবস্থার অবনতি হলে আরমান, নয়ন বেগম, শহীদ, ইমন, আব্বাস আলী কে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বাদী আনোয়ার হোসেন আরো জানান, এজাহারনামীয় আসামিদের ভয়ে আমরা আতঙ্কিত আছি। মামলা করার জের ধরে আমাকে ও আমাদের পরিবারের উপর বিভিন্ন ভয় ভীতি সব প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আসামিদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।