আপডেট: মে ২৫, ২০২০
“ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ…”।
রমজানের শেষে আকাশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলেই এই গানের সুরে আনন্দে দুলে উঠতো প্রত্যেক রোজাদারের মন।
এবারও এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে শাওয়ালের চাঁদ উঠেছে আকাশে। আগামীকাল সোমবার (২৫ মে) উদযাপিত হতে যাচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
কিন্তু রোজাদারদের মনে যেন সেই আনন্দ নেই।
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি ঈদের আনন্দেও ফেলেছে মন খারাপের ছায়া।
আগে গোটা রমজানে গ্রাম-গঞ্জের মার্কেটগুলোয় থাকতো ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটার তুমুল ব্যস্ততা। ঈদের পূর্বের কদিনে বাস, রেল ও লঞ্চ টার্মিনালে থাকতো নাড়ির টানে বাড়িমুখো মানুষের ভিড়।
ঈদের আগের দিন বা চাঁদরাতে সেই ভিড়ে নাকানি-চুবানি খেলেও মানুষের চোখে-মুখে থাকতো প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারার অগ্রিম আনন্দ।
পাড়ায়-মহল্লায় শহরফেরত মানুষের কুশল বিনিময়ে থাকতো মুখরতা। থাকতো মসজিদ-ময়দানে ঈদের জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি-ব্যস্ততা।
তাছাড়া জাতীয় ঈদগাহ, শোলাকিয়া ময়দানসহ অনেক বড় বড় ঈদগাহে এবার ঈদের জামাতের আয়োজন নেই।
যেসব ঈদ জামাত আয়োজন হচ্ছে, সেখানে মুসল্লিদের তিন ফুট দূরত্বে দাঁড়িয়ে অংশ নেয়ার কথা বলা হয়েছে। মানা করা হয়েছে কোলাকুলি ও করমর্দন করতে। বারণ করা হয়েছে বাইরের খাবার-দাবার গ্রহণেও।
এমনকি প্রতি ঈদে ঘরে ঘরে মানুষ ফিরনি-সেমাইয়ের দাওয়াত দেয়া-নেয়া করলেও এবার হচ্ছে না সেসব আয়োজনও।
মন ভার হওয়ার এমন নানা কারণ থাকলেও সবাই আশাবাদী এই দুর্দিন কেটে যাবে বলে।
রোববার (২৪ মে) সন্ধ্যায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘ঝড়-ঝঞ্ঝা-মহামারি আসবে। সেগুলো মোকাবিলা করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজন জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। সঙ্কট যত গভীরই হোক জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে তা উতরানো কোনো কঠিন কাজ নয়।’
তিনি জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এ বছর আমরা সশরীরে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হতে বা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে না পারলেও টেলিফোন বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজনের খোঁজখবর নেব।
এভাবেই সবার সঙ্গে একযোগে আল্লাহ প্রদত্ত এই মহান নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করব।’