২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

বলেশ্বরের ভাঙনে হুমকির মুখে বেড়িবাঁধ : আতংকে ১০ গ্রামের মানুষ

আপডেট: মে ৩০, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

শাকিল আহমেদ, মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের জলোচ্ছ¡াসে উপকুলীয় মঠবাড়িয়ার বলেশ্বরের ভাঙ্গনে ব্যাপক হুমকির মুখে রয়েছে নদ তীরবর্তী পাঁচটি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ। যে কোন সময় অতিরিক্ত পানির স্রোতে উপজেলার খেতাছিড়া, কচুবাড়ীয়া, সাংরাইল, মাঝেরচর, ভোলমারা, খেজুরবাড়ীয়াসহ বড়মাছুয়া লঞ্চ ও স্টীমার ঘাট সংলগ্ন বেড়িবাঁধ নদী গর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যেতে পারে। এমন আশংঙ্কায় ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ আতংকের মধ্যে রয়েছে। এদিকে আম্পান পরবর্তী সাগরের নিম্নচাপের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫/৬ ফুট পানি বৃদ্ধিতে নতুন করে আতংক বিরাজ করছে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দা ও নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বড়মাছুয়া লঞ্চ ঘাট থেকে স্টীমার ঘাট পর্যন্ত বাঁধের ২/৩ অংশ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় এ বাঁধটি সম্পূর্ণ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ইতিমধ্যে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে স্টীমার ঘাটের পল্টনটি নদীতে ভাসছে। পাশাপাশি স্টিমার ঘাট হয়ে কাটাখাল পর্যন্ত দেড় কিলোমিটারের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনে ঘরবাড়ী ও গাছপালা বিলীন হয়ে এ বেড়িবাঁধটিও রয়েছে সম্পূর্ণ ঝুঁকির মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় আম্পান পরবর্তী সাগরের আবারও নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫/৬ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় খেজুরবাড়ীয়া ও বড়মাছুয়া দুই গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ নদীগর্ভে সর্বস্ব হারানোর ভয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। বলেশ্বরের বুকে জেগে ওঠা বেতমোর রাজপাড়া ইউনিয়নের মাঝেরচরের বেড়িবাঁধের পশ্চিম অংশের এক কিলোমিটার বাঁধের বিভিন্ন স্থান ঝড়ের রাতে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় চরের প্রায় এক হাজার মানুষ আতংকে দিন কাটাচ্ছে। ওই সময় চরের মিষ্টি কুমার, মিষ্টি আলু, ফুট, তরমুজসহ ৬০ একর জমির ফসল নষ্ট হয়। এছাড়াও উলুবাড়ীয়া সাংরাইল সাইক্লোন শেল্টারের উত্তর পাশের বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কালিরহাট বাজার কালভার্ট সংলগ্ন বাঁধের দু’শ ফুট জায়গা বিলীন হওয়ায় বলেশ্বরের জোয়ারের স্রোত ঢুকে প্রায় ২’শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বেতমোর ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন আকন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপজেলার সাপলেজা ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিরাজ মিয়া বলেন, বলেশ্বর নদীর মোহনা সিডর ও আয়লা বিধ্বস্ত স্থানীয় বলেশ্বর বাজার ও কচুবাড়ীয়া পুরান লঞ্চঘাট সংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ না করায় আম্পানের জলোচ্ছ¡াসের পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল গত কয়েকদিন ধরে প্লাবিত রয়েছে। যে কারনে এলাকার প্রায় ২’শ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাজ না করা ও দুর্ণীতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করলেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারের দুর্ণীতির বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন। মিরাজ মিয়া আরও বলেন, বলেশ্বরের প্রবল স্রোতে গত কয়েক বছরের ভাঙ্গনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পাঁচ শতাধিক বসত ঘর ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় বড়মাছুয়ার বাসিন্দা ও মৎস্য আড়ৎদার ফারুক তালুকদার জানান, বলেশ্বর নদের অব্যহত নদী ভাঙ্গন ও বর্ষা মৌসুমে এর তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। মুল বেড়িবাঁধ থেকে নদী প্রায় আধা কিলোমিটার দূরত্বে ছিলো। যা ভেঙে বেড়িবাঁধ ধরে গেছে। এ ভাঙনে বসত ঘরসহ দুই শতাধিক দোকানপাট নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। লঞ্চঘাট সংলগ্ন বাজার অর্ধেক বিলীনি হয়ে গেছে। স্টীমারের যাত্রী ছাউনী, টিকেট বুকিং কাউন্টারসহ বেশ কয়েকটি দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মি ভৌমিক বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের কাছে কোন সহযোগিতা চাইলে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব।
পিরোজপুর জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস জানান, উপকূলীয় মঠবাড়িয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১শ ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। যা ঘুর্ণিঝড় আম্পানের জলোচ্ছ¡াসে অনেক স্থানেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এদিকে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক স¤প্রতি মঠবাড়িয়ার বড়মাছুয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্থ বড়মাছুয়া স্টিমার ঘাট সংলগ্ন ৫০ মিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য জরুরী ভিত্তিতে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্ধের আশ্বাস দেন।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network