আপডেট: জুলাই ৪, ২০২০
স্টাফ রিপোর্টার
বাকেরগঞ্জের ৬নং ফরিদপুর ইউনিয়নের বাঁশসলা গ্রামের এক দম্পতিকে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আহত দুজন হলেন ঐ এলাকার এখলাস উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মনির উদ্দিন হাওলাদার (৪০) ও তাঁর স্ত্রী কুলসুম বেগম(৩৫)। আহত দম্পতি বর্তমানে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) তিনতলার অর্থোপেডিক্স বিভাগে চিকিৎসারত আছেন।
অভিযোগ উঠেছে গত ২৮ জুন বাকেরগঞ্জ থানায় স্থানীয় গোলাম সরোয়ার সবুজ সহ কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে হওয়া মামলার সাক্ষী হওয়ায় আহতদের ওপর এই হামলা চালানো হয়।হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে আহত একজনের অবস্থা সংকটাপন্ন ।
হামলার শিকার মনির উদ্দিন জানান, ৪ জুন দিবাগত রাত ২ টার দিকে তাঁর মাটির ঘরের সিঁদ কেটে ভিতরে প্রবেশ করেন কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা একজন। অতঃপর সে ভিতর থেকে দরজা খুলে দিয়ে বাইরে অবস্থানরত আরো ১০-১২ জনকে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করায়। এসময় তাঁর ঘুম ভেঙে গেলে দেখতে পান চার পাঁচ জন হাতে ধারালো রামদা – চাপাতি নিয়ে তার স্ত্রী কে খুঁজছে৷ বিছানা থেকে উঠে পড়লে তাকে কোপানো শুরু করে দুর্বৃত্তরা।
তাঁর চিৎকারে স্ত্রী কাছে চলে এলে তাকেও কোপানো শুরু করে৷ তিনি উল্লেখ করেন, তাদেরকে উপর্যুপরি কোপানো শেষে দুর্বৃত্তরা চলে গেলে আহত অবস্থায় মোবাইল ফোনে কল করেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জহিরুল ইসলাম মামুনকে। তাকে ঘটনা খুলে বলে বাঁচানোর আকুতি জানালে তিনি তার লোকজন পাঠিয়ে দিচ্ছেন বলে জানান৷ পরবর্তীতে আহত কুলসুমের বোন, স্থানীয় পুলিশ ও জহিরুল ইসলামের লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
আহত বিলকিসের বোন তাসলিমা বেগম জানান, রাত আড়াইটার দিকে খবর পেয়ে তিনি তাঁর বোনের বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। এসময় তার বোনকে কারা এ হামলা করেছে জানতে চাইলে তিনি নাকি এলাকার সবুজ, সোহেল ও রনিকে চিনতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে বেলা এগারোটার দিকে বরিশাল শেবাচিমে প্রেরণ করেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা। আহতদের উদ্ধারের জন্য এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মাইনুল ইসলাম সুমন৷
তিনি জানান,আহত দম্পতির বাড়ির সামনে গত ২০ জুন জনৈক নজরুল ইসলামের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ঐ ঘটনায় যে মামলা হয় সেটার প্রধান সাক্ষী ছিলেন কুলসুম বেগম। তাকে ঘায়েল করতেই ঐ মামলার আসামী স্থানীয় মোসলেম আলীর ছেলে সবুজ স্বর্ণপাত ও ইয়াসিন মোল্লার ছেলে সোহেল মোল্লা ও রনি মোল্লার নেতৃত্বে পুনরায় এ হামলা চালানো হয়।
তবে এ ঘটনায় শনিবার বিকেল পর্যন্ত কোন মামলা হয় নি বলে জানিয়েছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম। আর ২৮ জুন হওয়া মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে শেবাচিম অর্থোপেডিক্স বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, ধারালো অস্ত্রের গভীর আঘাত, অতিরিক্ত রক্তক্ষরন ও দ্রুত চিকিৎসা না পাওয়ায় আহত কুলসুম বেগমের অবস্থা সংকটাপন্ন।।