আপডেট: আগস্ট ২০, ২০২০
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে ফেরা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারাগারে যাওয়ার পর দলের অধিকাংশ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অবগত ছিলেন না দলীয়প্রধান।
দুই বছরের বেশি সময় জেলে থাকার পর পরিবারের চেষ্টায় চলতি বছরের ২৫ মার্চ শর্তের বেড়াজালে মুক্ত হন তিনি। দলের নেতাকর্মীরা আশা করেছিলেন, দলীয় কার্যক্রমে তিনি ফের সক্রিয় হবেন। কিন্তু সেটা এখন সম্ভব হচ্ছে না— এমনটি মনে করছেন অনেকে।
দলীয় সূত্র মতে, দীর্ঘ সময় রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি প্রভাব ফেলছে নেতাকর্মীদের মনোবলে। তাই দলকে আরও শক্তিশালী করতে চেয়ারপারসনের সক্রিয় নেতৃত্ব এবং তার সুচিন্তিত দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। সেই নির্দেশনায় সামনের পথ পাড়ি দিতে চান নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে দলের সিনিয়র ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
এমনও জানা গেছে, রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চান খালেদা জিয়াও। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গুলশান কার্যালয়ে নিয়মিত বসারও ইচ্ছা রয়েছে তার। কারামুক্তির পর কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে একান্তে আলাপে বিএনপি নেত্রী এমন আশার কথাও জানান।
এদিকে ঈদুল-আজহার দিন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খালেদা জিয়া। সেসময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন এবং ২০ দলীয় জোট নিয়ে বিএনপিপ্রধানের মন্তব্যের পর দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে নতুন চিন্তার খোরাক। তার (খালেদা জিয়া) মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে অনেক নেতাই মনে করেন, সামনের দিনগুলোতে তার নেতৃত্বেই সকল দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। দল ও জোটের বিষয়ে তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হওয়া উচিত।
তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ বিরোধিতা না করলেও তার ওপর আস্থার সঙ্কট রয়েছে অধিকাংশের। দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিই বেশি আস্থা রাখেন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তার নেতৃত্বে নতুনভাবে দল ও জোট গোছাতে চান নীতিনির্ধারকরাও।
অনেকেই মনে করেন, বিএনপি বর্তমানে যে ধারায় রয়েছে, সেখান থেকে অবশ্যই ফিরে আসতে হবে। কারণ বর্তমান ধারাটা জাতীয়তাবাদী ধারা নয়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে বিএনপি চলতে পারে না। বিএনপিকে জাতীয়তাবাদী ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী শক্তিকে নিয়েই চলতে হবে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নতুন কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
দলীয়প্রধান কারাগারে যাওয়ার পর দল থেকে কখন, কোথায়, কী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে— তার কিছুই জানতেন না অধিকাংশ সিনিয়র নেতা। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং তার কাছ থেকে আসা মন্তব্যের পরই ভেতরের খবর কিছুটা জানতে পেরেছেন তারা।
ঈদের দিন কয়েকটি বিষয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পর জাতীয়তাবাদী শক্তিকে টিকিয়ে রাখতে হলে কী করতে হবে, তার একটা গাইডলাইন পেয়েছেন বলেও মনে করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।