আপডেট: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০
করোনার কারণে এ বছর যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলে, তাহলে বিকল্প উপায় কী হতে পারে? বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে স্পষ্টতই আমরা শিক্ষার্থীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আছি।
চলছে পক্ষ-বিপক্ষে যুক্তি-পাল্টা যুক্তির লড়াই। অভিজ্ঞতা থেকে দেখে আসছি, প্রশাসন বরাবরই সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মতামতের প্রতি উদাসীন, যার দীর্ঘমেয়াদি ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই।
তবে যা পরিস্থিতি, তাতে ভাবলেশহীন কর্তৃপক্ষের মধ্যে আগামী দুই-তিন মাসেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিন্দুমাত্র লক্ষণ দেখছি না। শিক্ষার্থীদের স্থবির শিক্ষাজীবন সচল করতে এ অবস্থায় বিকল্প হিসেবে কী করা যেতে পারে- এ ব্যাপারে আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কপ্রসূত চারটি প্রস্তাব সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাই।
প্রস্তাব ১ : কর্তৃপক্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে আগ্রহী না হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেসব ব্যাচের পরীক্ষাগুলো আটকে আছে সেসব ব্যাচের পরীক্ষা নিয়ে নিতে পারে। একসঙ্গে না নিতে চাইলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথমে মাস্টার্স, এরপর চতুর্থ, তৃতীয়, দ্বিতীয় ও প্রথম বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে নেয়া যেতে পারে।
প্রস্তাব ২ : যদি কোনোভাবেই পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয়, তাহলে যেসব শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন পরীক্ষার কারণে আটকে আছে, তাদের পরের সেমিস্টার অথবা পরের বর্ষে অনলাইন ক্লাস করার সুযোগ দেয়া হোক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে না হয় আমরা দুই সেমিস্টারের/বর্ষের পরীক্ষা একসঙ্গে দিয়ে দেব।
প্রস্তাব ৩ : অনলাইন ক্লাস প্রক্রিয়াকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে আরও কার্যকর করা হোক। ইন্টারনেট সংযোগ নেই, ডিভাইস নেই- এ ধরনের সমস্যা আছে অনেক শিক্ষার্থীর। তবে সবাই আন্তরিক হলে এ সমস্যাগুলো সহজেই সমাধান করে অনলাইন ক্লাসগুলো আরও কার্যকর করা যায়। ক্লাসে উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনে অ্যাটেন্ডেন্স নেয়া হোক। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাজেটের উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় করা হোক।
প্রস্তাব ৪ : ক্যাম্পাসে যেসব শিক্ষার্থী টিউশনি করে পেট চালাত, তারা গত ছয় মাসের এই দুর্যোগে কে কোথায় কীভাবে দিন কাটাচ্ছে তার খবর কেউ রাখেনি! অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী-কর্মকর্তারা বসে বসে বেতন ভাতা নিচ্ছেন। অথচ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর এক সপ্তাহের বেতন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অসহায় শিক্ষার্থীদের তিন মাসের আহারের ব্যবস্থা করা যায়।
আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কোনো আগ্রহ কর্তৃপক্ষের না থাকলে অথবা খোলা সম্ভব না হলে অন্তত বিশ্ববিদ্যালয়ের অসহায় শিক্ষার্থীদের জন্য একটি তহবিলের ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাই।
শফিকুল ইসলাম : শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়