আপডেট: মার্চ ১, ২০২১
সৈয়দ নূর-ই আলমঃ
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সরকারী খাস জমির মধ্যে “মুজিব শতবর্ষ” উপলক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভূমিহীন পরিবারের জন্য নির্মাণাধীন ভবনের ২৬টি পিলার ও ১টি ভবন আংশিক ভেঙ্গে ফেলায় রুজুকৃত মামলার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।
বরিশাল জেলার বানারীপাড়া থানাধীন সরকারী খাস জমির মধ্যে “মুজিব শতবর্ষ” উপলক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভূমিহীন পরিবারের জন্য ১০০ টি ঘর নির্মান প্রকল্পে ইতিমধ্যে ৪৪টি ঘর প্রাথমিকভাবে সম্পন্ন হয়। রাজমিস্ত্রি ইমদাদ ও সাইটের শ্রমিকদের নিয়োজিত নারী বাবুর্চি সুমাইয়া এর সাথে প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে স্থানীয় মোঃ সুমন কাজীর সাথে ইউপি সদস্য দীপু দত্তের বিরোধের জের ধরে দীপু দত্ত মোঃ সুমন কাজী দ্বারা লাঞ্চিত হয়।
স্থানীয় মোঃ সুমন কাজীকে ফাসানোর জন্য ইউপি সদস্য দীপু দত্ত গত ২২-০২-২০২১ খ্রিঃ তারিখ রাত্র ০২.০০ ঘটিকায় ঠিকাদার রাম প্রসাদকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শ্রমিক দিয়ে আবাসনের কয়েকটি পিলার ভেঙ্গে ফেলার জন্য কুপরামর্শ দেয়। দীপু দত্ত এর পরিকল্পনা অনুযায়ী ঠিকাদার রাম প্রসাদ মোবাইল ফোনে শ্রমিক সরদার মোঃ ইমরান সিকদার কে কয়েকটি পিলার ভেঙ্গে ফেলার জন্য বলে। ঠিকাদার রাম প্রসাদ এর নির্দেশনানুযায়ী শ্রমিক ইমরান, সাদিক শেখ ও মিসকাতদের নিয়ে উক্ত প্রকল্পের ২৬ টি পিলার ভেঙ্গে ফেলে পুনঃরায় রাম প্রসাদকে মোবাইল ফোনে জানায়।
ইউপি সদস্য দীপু দত্ত মোঃ সুমন কাজী দ্বারা লাঞ্চিত হওয়ার প্রেক্ষিতে তাকে শায়েস্তা করার জন্য এবং স্থানীয় এক নারী বাবুর্চির সাথে রাজমিস্ত্রি ইমদাদ এর প্রেমঘটিত বিষয়টি ধামা-চাপা দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে উল্লেখিত ঘটনা ঘটিয়ে ঠিকাদারকে দিয়ে জেলা প্রশাসক বরিশালসহ স্থানীয় প্রশাসনকে উল্লেখিত প্রকল্পের ঘর ভাঙ্গার বিষয়টি অবহিত করে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিষয়টি ফলাওভাবে প্রচার করে এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় গত ২২/২/২১খ্রি. তারিখে চাখার ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বাদশা মিয়াকে বাদী করে এজাহারনামীয় বিবাদী সুমন কাজীসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন কে বিবাদী করে বানারীপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
মামলাটি তদন্তকালে উল্লেখিত রহস্য উন্মোচিত হয়। পুলিশ সুপার বরিশাল জেলা পুরিশ সুডারের সার্বিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শাহজাহান হোসেন এর নেতৃত্বে উল্লিখিত মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে সংশ্লিষ্ট ১। দীপু দত্ত (৪৭)(স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য), পিতা-মৃত হীরা লাল দত্ত, সাং-সোনাহার, থানা-বানারীপাড়া, জেলা-বরিশাল, ২। রাম প্রসাদ মন্ডল (৩৩), পিতা-শ্যামল চন্দ্র মন্ডল, সাং-বাহির আকড়া, থানা-ডুমুরিয়া, ৩। মোঃ ইমরান সিকদার (২৭), পিতা-মোঃ এলাহি সিকদার, সাং-মহিষদিয়া, থানা-দিঘলিয়া, উভয় জেলা-খুলনা, ৪। মোঃ সাদিক শেখ (৩২), পিতা-মৃত লুৎফর শেখ, সাং-জামরুল ডাঙ্গা, থানা-কালিয়া, জেলা-নড়াইল, ৫। মোঃ মিশকাত মোল্লা (২৭), পিতা-মোঃ শহীদ মোল্লা, সাং-দড়ি মহিষদিয়া, থানা-দিঘলিয়া, জেলা-খুলনাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তারা উল্লিখিত ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করে । বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হলে ঠিকাদার রামপ্রসাদ ও লেবার সরদার ইমরান বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান হোসেন বলেন, সরকার কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের নির্মাণাধীন ঘর ভাঙ্গার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নে আঘাত করা। তিনি আরো বলেন আমরা দূস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতের নিকট কঠোর শাস্তির আবেদন করব যাতে ভবিষ্যতে কেউ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তথা সরকার কর্তৃক গৃহীত কোন উন্নয়ন প্রকল্পে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার দূঃসাহস না দেখাতে পারে।