২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

বানারীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্পের নির্মানাধিন ঘরের পিলার ভঙ্গার ঘটনায় তিন শ্রমিককে গ্রেফতার

আপডেট: মার্চ ২, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

জি.এম রিপন, বানারীপাড়া
বানারীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাকরাইল আবাসন প্রকল্পের নির্মানাধিন ১২টি ঘরের ৩৫টি পিলার ভেঙ্গে ফেলার ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য দিপু দত্ত ও সাবকন্টাক্টর রাম প্রসাদ সহ তিন জন নির্মাণ শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার রাতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সেপেক্টর (তদন্ত) মো.জাফর আহম্মেদ দীর্ঘ তদন্ত শেষে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে স্থানীয়দের পাশাপাশি ১২ জন নির্মান শ্রমিককে পৃথক ভাবে জ্ঞিাসাবাদের শিকারোক্তি অনুযায়ী উপজেলার চাখার ইউনিয়নের সোনাহার-সাকরাইল এলাকা থেকে ইউপি সদস্য দপু দত্ত, সাবকন্টাক্টর ও খুলনা এলাকার বাসিন্দা রাম প্রসাদ মন্ডল, একই এলাকার নির্মান শ্রমিক এমরান হোসেন, মো.সাদিক ও মিশকাত হোসেনকে গ্রেফতার করেণ।
এসময় বরিশাল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো.শাহ জাহান হোসেন, এএসপি (উজিরপুর সার্কেল) আবু জাফর মো.রহমত উল্লাহ, থানার অফিনার ইনচার্জ মো.হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
এব্যাপারে ইন্সেপেক্টর (তদন্ত) মো.জাফর আহম্মেদ যুগান্তরকে জানান, দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলার চাখার ইউনিয়নের সোনাহার গ্রামের সাকরাল আবাসন প্রকল্পের ৬৫টি ঘর নির্মান কাজ করছিলেন খুলনা এলাকার রাজ মিস্ত্রী মো.এমদাদ হোসেন সহ প্রায় অর্ধশত নির্মান শ্রমিক। তাদের এ কাজ করার সময় স্থানীয় এক নারীর সাথে ওই রাজমিস্ত্রী এমদাদ হোসেনের সাথে ওই নারী পারিবারীক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২১ ফেব্রুয়ারী রাতে রাজমিস্ত্রী এমদাদ হোসেন ওই নারীর বাড়ি সংলগ্ন বাগানে গিয়ে অবস্থান করার সময় স্থানীয় রবিউল তালুকদার ও খলিল শিকদার দেখে ফেলেন এবং ওই সময় তারা তাকে ধাওয়া করেণ। এসময় উক্ত রাজমিস্ত্রী এমদাদ হোসেন তার গায়ের গেঞ্জি খুলে ফেলে দিয়ে অন্যত্র দৌরে পালিয়ে যান। এসময় তারা ডাকচিৎকার দিলে স্থানীয় যুবক সুমন কাজী সহ ৩/৪ জন ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে তাদের সাথে যুক্ত হন। পরে তারা রাজমিস্ত্রীকে ধরতে না পেরে সাকরাইল আবাসন প্রকলের নির্মান শ্রমিকদের ব্যারাকে গিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা করেণ। এসময় সেখানে উপস্থিত স্থানীয় ইউপি সদস্য দিপু দত্তর সাথে তাদের বাকবিতন্ঠা ও কাটাকাটি হয়। এঘটনার দু’দিন পূর্বে দিপু দত্তর সাথে ওই প্রকল্পের কাজ নিম্নমানের হওয়ার অভিযোগ তোলেন স্থানীয় যুবক সুমন কাজী। এনিয়ে সুমন কাজী ও দিপু দত্তর মধ্যে উক্ত দু’দিন ধরে বিরোধ চলে আসা ও রাজমিস্ত্রী এমদাদকে নারী ঘটিত কারণে ধাওয়া করাসহ ব্যারাকে গিয়ে নির্মান শ্রমিকদের ওপর হামলা করার জের হিসেবে ওই রাতেই দিপুদত্ত তার মোবাইল ফোনে ১৭ বার কল করেন সাকরাইল আবাসন প্রকল্পের সাবকন্টাক্টর ও খুলনা এলাকার বাসিন্দা রাম প্রসাদ মন্ডলের কছে। এসময় তারা দু’জনেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই প্রকল্পের নির্মান কাজ নিয়ে তাদের কাছে আর কেউ কোন ধরণের প্রশ্ন তুলতে না পারে সে জন্য তারা সুমন কাজীসহ স্থানীয়দের ফাসাতে তিন শ্রমিককে দিয়ে নির্মানাধীন প্রকল্পের ১২টি ঘরের ৩৫টি পিলার ভেঙ্গে ফেলেন। পরে তারা রাতের আধারে দূর্বৃত্তদের বরাত দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা, ইউপি চেয়ারম্যান থিজির সরদার ও প্রকল্প কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো.মহসিনকে মোবাইল ফোনে ওই পিলার ভেঙ্গে ফেলার ঘটনাটি জানান। পরদিন সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা, সহকারী কমিশনার ভূমি মিশাত শারমিন, থানার অফিসার ইনচার্জ মো.হেলাল উদ্দিন, ইন্সেপেক্টর (তদন্ত) মো.জাফর আহম্মেদ, ইউপি চেয়ারম্যান খিজির সরদার ও প্রকল্প কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো.মহসিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেণ। পর ওই দিন রাতে এ ঘটনায় চাখার ইউনিয়ন ভূমী সহকারী কর্মকর্তা মো.বাদশা মিয়া বাদী হয়ে স্থানীয় সুমন কাজীসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেণ। থানার অফিসার ইনচার্জ প্রথমিক ভাবে ওই মামলাটি তদন্ত করার জন্য এস.আই মোক্তার হোসেনকে নির্দেশ দিলেও পরবর্তীতে উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে ইন্সেপেক্টর (তদন্ত) মো.জাফর আহম্মেদকে নতুন করে ওই মামলাটি তদন্ত করার নির্দেশ দেন।

এদিকে সাকরাল আবাসনের নবনির্মিত ১২টি ঘরের ৩৫টি পিলার ভেঙ্গে ফেলার খবর পেয়ে সোমবার বেলা ১১টায় বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার সরেজমিন পরিদর্শন করেণ। এসময় তিনি সাকরাল আবাসন প্রকল্পের পিলার ভাঙ্গার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি আবাসন প্রকল্পের চলমান নির্মান কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এসময় এডিসি রেভেনিউ মো. রাজিব আহম্মেদ, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রের্ট সুব্রত বিশ^াস, উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা, প্রকল্প কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মহসিনসহ সদ্যযোগদান করা কয়েকজন পুরোবী ম্যাজিষ্ট্রের্ট উপস্থিত ছিলেণ।
অপরদিকে আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাকরাল আবাসন প্রকল্পের নির্মানাধীন ঘরের পিলার ভেঙ্গে ফেলার ঘটনায় থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারভূক্ত আসামী সুমন কাজী সোমবার আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। ওই দিন সন্ধ্যায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সেপ্ক্টের (তদন্ত) মো.জাফর আহম্মেদ যুগান্তরকে এবিষটি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা যুগান্তরকে জানান, মুজিবশতবর্ষের অঙ্গিকার “কেউ রবেনা গৃহহীন আর” এবিষয়কে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে সম্প্রতি বানারীপাড়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ২০০টি গৃহহীন পরিবারকে দুই কক্ষ বিশিষ্ট ১টি করে ঘর বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারী ভাবে প্রতি ঘরের ব্যয় হিসেবে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ওই ঘরগুলো তিনি ও প্রকল্প কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো.মহসিন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সার্বক্ষণিক ভাবে তদারকী করছেন। তাদের নেতৃত্বে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের চাখার ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সাকরাল আবাসন প্রকল্পের ৬৫টি ঘর নির্মান কাজ শুরু করা হয়। এক্ষত্রে ওই ঘর নির্মান করার জন্য খুলনার রাম প্রসাদ মন্ডলকে সাব কন্টাক্ট দেয়া হয়। সে নিজ এলাকার রাজ মিস্ত্রী মো.এমদাদ হোসেনকে দিয়ে ওই ঘর নির্মান কাজ করেছেন বলে তিনি জানান।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network