আপডেট: এপ্রিল ১০, ২০২১
মেহেন্দিগঞ্জের কাজীরহাটে হত্যা মামলার জামিনে বের হওয়া আসামি ও তার স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টায় পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বাদী সহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ সময় তারা ঘরবাড়ি ভাঙচুর লুটপাট চালায়।
গত শুক্রবার দুপুর দেড়টায় কাজীর হাটের পশ্চিম রতনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলো ওই এলাকার মৃত আশরাফ আলীর ছেলে কালু শিকদার ওরফে আবুল কাশেম এবং কালুর স্ত্রী মোরশেদা বেগম।
বর্তমানে তারা গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদের মধ্যে কালু শিকদারের অবস্থা আশঙ্কাজনক রয়েছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান। কালুর বাম হাত ভেঙ্গে গেছে এবং তার স্ত্রী সমস্ত শরীরে এলোপাতাড়ি জখম রয়েছে।
তবে অবস্থার অবনতি হলে যে কোন সময় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ কর যেতে পারে বলে জানিয়েছেন সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক
সূত্রে জানা যায়, গত এক বছর পূর্বে রতনপুর গ্রামে একটা তুচ্ছ বিষয় কে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আহতরা মেডিকেলে ভর্তি হলে তাদের মধ্যে সৌরভ নামে একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় বিশ্রাম থাকার দুইদিন পর মারা যায়।
নিহত সৌরভ এলাকার মনির খানের ছেলে। এবং বাদী জলিল শিকদার ভাগিনা।
আহত কালু সিকদার জানান, গত রমজান মাসের শুরুতে কালু শিকদারের ছোট শালী আলিনুর সাথে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আফসার শিকদারের মেয়ে সুরমা বেগমের দ্বন্দ্ব হয়
দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। সেখানে কালু শিকদার ও তার পরিবারের কেউ ছিলনা। মারামারি ঘটনার দু’দিন পর সুরমা বেগমের ছেলে সৌরভ মারা যায়। সৌরভের এর মৃত্যুর ঘটনায় মামলার এজাহারে কালুর ছেলে আফজালকে ১ নং এবং কালু শিকদারকে ২ নং করে মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়। মামলার বাদী হয় সৌরভের মামা আঃ জলিল শিকদার।
জলিলের সাথে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কালু শিকদারের বিরোধ চলে আসছে।
সৌরভ এর মৃত্যু কে কাজে লাগিয়ে মামলায় কালু শিকদার ও তার পরিবারকে ফাঁসাতে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করার দাবি কালুর পরিবার।
নিহত সৌরভের মামলায় কালু শিকদার দুই মাস জেল হাজতে থাকার পর জামিনে মুক্তি পায়।
সম্প্রতি জামিন পেয়ে কালু শিকদার এলাকায় যাওয়ার পর বাদী জলিল শিকদার, আফছের সিকদারসহ তাদের পরিবারের সহযোগীরা তাকে এলাকা থেকে উৎখাত করার চেষ্টা চালায় এবং হত্যার হুমকি দেয়।
ঘটনার দিন শুক্রবার দুপুরে বাদী জলিল শিকদার এর নেতৃত্বে আফসের শিকদার, ও তার ছেলে আলি, হানিফ, সুজন, এবং তাদের সহযোগী সজীব, আরিফ, গিয়াস , মোস্তফা, মনির, জাহিদ, মানিক, আলামিন ইমরান, বাহাদুর সহ প্রায় অর্ধশতাধিক সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে কালু শিকদারকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। তাকে বাঁচাতে স্ত্রী মোরশেদা এবং মেয়ে আবিদ আসলে তাদেরকেও পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন আফসের সহ অন্যান্যরা সহযোগীরা। এ সময় তারা কালু শিকদারের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে মেহেন্দিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়।পরে আহতদের মধ্যে কালু ও তার স্ত্রী মোর্শেদার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় কাজিরহাট থানায় মামলার অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে স্বজনরা জানান।