১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

রাজনীতির উর্ধ্বে থেকে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা সংকট মোকাবেলা করতে হবে: রুহুল আমিন হাওলাদার

আপডেট: এপ্রিল ১৩, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

দানিসুর রহমান লিমন-
রাজনীতির উর্ধ্বে থেকে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা সংকট মোকাবেলা করতে হবে বলে জানিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।

সোমবার (১২ এপ্রিল) রুহুল আমিন হাওলাদার তার গুলশানের বাসভবনে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। নিম্নে সাক্ষাতকারটি তুলে ধরা হলো-

সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে সাক্ষাৎয়ের বিষয়ে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনএরাইভেল ভিসার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে চিকিৎসা ও ব্যবসার জন্য এটা বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। ভারত আমাদের প্বার্শবর্তী রাষ্ট্র। আমরা প্রতিবেশীর সহযোগিতা পাবো এটা আশা করি, তারাও আশা করে। স্বাধীনতার পর কখনোই এ দুই দেশের মাঝে দুরত্ব সৃষ্টি হয়নি। আমরা তিস্তার পানির কথা বলেছি। এটা আমাদের প্রাণের দাবি।

মোদীর সফরে হেফাজতের বিরোধিতা ও বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বলেন, নরেন্দ্র মোদী একজন ব্যক্তি নন। তিনি একজন রাষ্ট্রের প্রধান। আমাদের মেহমান। বাংলাদেশ সবসময়ই অতিথি পরায়ন দেশ। ৭১ সালে ১কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল এই ভারত। মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র দিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছে, আমি নিজেও ট্রেনিং নিয়েছি। আর সেই দেশের রাষ্ট্র প্রধানকে সম্মান আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। যারা বিরোধিতা করেছেন তারা অন্তত নরেন্দ্র মোদী যখন দেশের মেহমান সেই সময়ে চুপ থাকা দরকার ছিল।

হেফাজতের ভাংচুর ও তাণ্ডব প্রসঙ্গে বলেন, রাষ্ট্রের সম্পদ বিনষ্ট, শান্তি বিনষ্ট অবশ্যই অপরাধ। এ বিষয়ে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

এরশাদবিহীন জাতীয় পার্টি কেমন চলছে জানতে চাইলে পার্টির সাবেক এই মহাসচিব বলেন, এটা মূল্যায়ন করবে দলীয় নেতাকর্মীরা। আমি দীর্ঘদিন পার্টির মহাসচিব ছিলাম। কেমন ছিলাম তাও মুল্যায়ন করবে নেতাকর্মীরা। চলার পথে আমার হয়ত কিছু ভুল ছিল। তারজন্য আমি ব্যাথিত। আমি এই পার্টির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আছি। তাই আমি চাই দলটা আরো বিকশিত হোক। অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌছে দেশ ও জনগণের সেবা করার সুযোগ পাক। এখানে আমিও আমার দায়িত্ব এড়াতে পারিনা। যতদিন বেচে আছি পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতিষ্ঠিত এ দলের প্রতি আনুগত্য রেখে সকল নেতাকর্মীর মাঝে বেঁচে থাকতে চাই। মানুষতো চিরকাল বেঁচে থাকেনা। একদিন চলে যেতে হবে। যেদিন আমি থাকবো না, আমার পায়ের চিহ্ন থাকবেনা তখন যেনো নেতাকর্মী ও জনগণ আমাকে স্মরণ এই ভেবেই আমি চলছি।

করোনাকালীন সময়ে দেশের রাজনীতি প্রসঙ্গে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীকে ঘিরে ফেলছে। জনজীবনকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। বহু জ্ঞানীগুনী মানুষও এর থাবা থেকে রক্ষা পায়নি। এই নির্মম চিত্র জাতি হিসেবে আমাদের ক্ষত-বিক্ষত করেছে। আমি একজন সচেতন রাজনীতিবিদ হিসেবে বলবো, এই মুহুর্তে সকল দলকে রাজনীতির উর্দ্ধে থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই মহাবিপর্যয় থেকে কিভাবে আমরা জাতিকে রক্ষা করতে পারি তার জন্য আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।

করোনা মোকাবেলায় সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক দেশে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তবে সরকার প্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার অভাব আছে বলে আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বিশ্বাস করিনা। আমি এখানে উল্লেখ করতে চাই, এই তৃতীয়বিশ্বের মধ্যে আমরাই প্রথম করোনা ভ্যাকসিন ব্যবহার শুরু করেছি। এটা অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা, আন্তরিকতা ও জনগণের প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ।

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলহাজ্ব এবিএম রুহুল আমিন বলেন, অনেকদিক বিবেচনা করলে দেখা যায়, আমরা করোনার কারণে গভীর সংকটময় সময় অতিক্রম করছি। যে কারণে আমাদের অর্থনীতি এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নও কিছুটা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তা সত্বেও উন্নয়ন কিন্ত থেমে নেই। এখানেই আমাদের সফলতা।

আপনার দৃষ্টিতে জাতীয় পার্টি বিরোধীদল হিসেবে কেমন ভূমিকা রাখছে? তার জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি সংসদে তার গঠনমূলক সমালোচনা বা গনবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে আসছে। আমাদের দলের নীতিনির্ধারণ হচ্ছে, আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করি। অতীতের ন্যায় সংসদে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হোক এটা আমাদের কখনোই কাম্য নয়। জাতীয় পার্টি হরতাল, অবরোধ, ভাংচুর, জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমি বিশ্বাস করি সময়ের ব্যবধানে দেশবাসীও এগুলো প্রত্যাখান করেছে।

সম্প্রতি জাতীয় পার্টি সরকারের কঠোর সমালোচনা করছে, কিন্তু অনেকে মনে করে সরকারের সাথে সমাঝোতার ভিত্তিতেই এই বিরোধিতা.. এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিরোধীদল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে। কোথাও কোথাও কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দেশের জনগণের স্বার্থে গঠণমূলক বিরোধিতা করাকে যদি কেউ অন্যভাবে ব্যাখা দেয়, সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেটাও গণতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যেই পড়ে। চুড়ান্ত বিবেচনায় আমি মনে করি এ বিষয়ে ভুলবুঝির কোনো অবকাশ নেই।

উপ-নির্বাচন, স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী সংকট ও নির্বাচনে ভরাডুবি, তাহলে কি বলা যায় পার্টি দিনে দিনে ছোট হয়ে আসছে? এর উত্তরে হাওলাদার বলেন, ছোট হয়ে আসছে আমি তা মনে করিনা। দল ভবিষ্যতে আরো সুসংগঠিত হলে আমাদের উত্তরোত্তর জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে এবং নির্বাচনে আশানুরূপ ফলাফল আসবে। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে ভালবাসে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network