আপডেট: মে ৮, ২০২১
চরফ্যাশন প্রতিনিধি॥
সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত চরফ্যাশন উপজেলার গ্রামীণ জনপদ। গ্যাসচালিত বিদ্যুতের ওপর চাপ কমাতে উপজেলার হাট-বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে স্থাপন করা হয়েছে এসব স্ট্রিট লাইট নামক সৌর বাতি। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠছে বাতি। ফলে চাপ কমছে গ্যাসচালিত বিদ্যুতের ওপর। লোড শেডিংয়ের ঝামেলা না থাকায় সড়ক বাতিগুলো একটানা আলো দেয় সারা রাত। এর ফলে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই আগের তুলনায় কমেছে অনেক। পাল্টে গেছে উপজেলার গ্রামীণ জীবনমান। গ্রামের মানুষের জীবনেও শহরের পরিবেশের ছোঁয়া লেগেছে।
জানা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি টিআর ও কাবিটার আওতায় উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও নির্জন অন্ধকার সড়কে সৌর বিদ্যুতের (স্ট্রিট লাইট) সড়ক বাতি স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১ম ও ২য় পর্যায়ে ২১টি ইউনিয়নে মোট ১৪৮৩টি সড়ক বাতি স্থাপন করা হয়।
এছাড়া, একই প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজসহ দুঃস্থ পরিবারে ১৮০৩টি সোলার হোম সিষ্টেম লাগানো হয়েছে। এতে ১৬কোটি ৭৮ লাখ ৪ হাজার ৬৬০ টাকা ব্যয় হয়েছে। আগের বছরও বিভিন্ন স্কুল কলেজ মসজিদ মন্দিরে সোলার হোম সিষ্টেম বিতরণ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে স্ট্রিট লাইট নামক সৌর বাতি। চলতি অর্থবছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো সোলার বাতি বসানোর স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে। শেখ হাসিনার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার চরফ্যাশন বাস্তব রূপ লাভ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দ্বীপচর কুকরির দক্ষিণে মনুরা বাজারে যাওয়ার পথে মনির হোসেনের দোকানের সামনে জ্বলজ্বল করে আলো ছড়াচ্ছে সড়ক বাতি। আমিনপুরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার দিকে, কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের আশপাশের রাস্তায় সন্ধ্যার পর ঝকঝকে আলো দেখা যায়। এছাড়াউপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগানো হয়েছে সৌর বাতি। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিগুলো জ্বলছে। আবার সকালের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
চরফ্যাশনের উপকূলের দ্বীপচরগুলিতে সন্ধ্যায় সূর্যবাতির আলোতে আলোকিত হচেছ, চরকুকরিমুকরি ইউনিয়নের শরিফ পাড়া গ্রামের লোকজন জানান, আমাদের চরের রাস্তায় বাতি দেওয়া হয়েছে। গ্রামের মানুষ যে এই সুবিধা পাবে আমরা কল্পনাও করিনি। কিন্তু এখন সৌর বিদ্যুতের কল্যাণে আমাদের গ্রামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অন্ধকার রাস্তায় আলো জ্বলছে। পাল্টে গেছে গ্রামের মানুষের জীবনমান। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনাও অনেক কমে এসেছে। আগে অন্ধকার রাস্তায় চলাচল করতে ভয় পেতাম। গ্রাম আর গ্রাম নাই, মনে হয় যেন শহরেই থাকি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো রুহুলআমিন বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি সরকারের সকল বরাদ্দে সর্বোচ্চ জনস্বার্থ নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। তাই তিনি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সৌর বিদ্যুতের বাতি বসানোর নিন্দেশ দেন। গ্রামের মানুষ এতদিন সড়ক বাতির সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। সন্ধ্যা হলেই গ্রামগুলোতে ভূতুরে পরিবেশ তৈরি হতো। রাস্তায় আতঙ্কে মানুষ চলাফেরা করতে পারতো না। সৌর বাতি বসানোর ফলে রাতেও মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারছে। এতে গ্রামের মানুষের জীবনেও শহরের ছোঁয়া লেগেছে।