১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

বেতাগীতে নির্বাচনি সহিংসতা বেড়েই চলছে খুন হামলা-মামলা, ভাঙচুর আতঙ্কে সাধারণ ভোটার

আপডেট: জুন ১৯, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

সৈয়দ নূর-ই-আলমঃ
বরগুনার বেতাগী সাতটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা নিয়ে গঠিত একটি ছোট্ট উপজেলা। তবে আসন্ন ২১জুন উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নির্বাচনকে ঘিরে একের পর এক নির্বাচনি সহিংসতায় আতঙ্কে সময় পার করছেন সাধারন ভোটার। খুন,হামলা-মামলা,ভাঙচুর নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। এমন ঘটনায় সাধারণ ভোটার সহ প্রার্থীরাও আতঙ্কে সময় পার করছেন।
গত ১১জুন রোজ শুক্রবার উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সংলগ্ন উত্তর করুণা গ্রামে প্বার্শবর্তি খাল থেকে একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই লাশ ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী মোতালেব হোসেন মধুর সমর্থক ইউসুফ আলীর। রাতে প্রার্থীর বাড়ি থেকে ফেরার পথে নির্বাচনি সহিংসতায় সে খুন হয়। ওই ঘটনায় অজ্ঞতানামায় বেতাগী থানায় মামলা হয়। পরে আতঙ্ক কাজ করে পুরো উপজেলাব্যাপী। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য সহ একাধিক প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট এলাকার একাধিক ভোটারদের বারংবার আসতে হয় থানায়। তবে এখনো কোন আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এছাড়াও নির্বাচনি জেরে বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সিপন জমাদ্দারকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখমসহ হাত-পাযের রগ বিচ্ছিন্ন করেন ওই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র¿ প্রার্থী ইউসুফ শরিফ ও তার সমর্থকরা। এ ঘটনায় করা হয় পাল্টাপাল্টি হামলা ও মামলা,আহত হন অর্ধশত সমর্থক। স্বতন্ত্র প্রার্থী এখন পর্যন্ত রয়েছেন কারাবন্দি।
এদিকে, নির্বাচনি সহিংসতার জেরে কুপিয়ে জখমসহ এশর পর এক বসতঘর ভাঙচুর করা হয়। উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের মোল্লার হাট বাজারের সর্দার বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। গুরতর আহত হয় ওই এলাকার বাসিন্দা মন্নান মৃধাসহ(৫০) আরো তিনজন, ভাঙচুর করা হয় একাধিক বসতবাড়ি। থানায় আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। সপ্তাহ যেতে না যেতেই সম্পূর্ণ চিত্র উল্টো । পূর্বের ঘটনার জেরে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পাঁচ কর্মীকে কুপিয়ে জখমসহ একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। থানায় করা হয় পাল্টা মামলা। নিজ এলাকা থেকে বেপাত্তা হয় দুই প্রার্থীর অর্ধশত সমর্থক।এলাকায় শুরু হয় আতঙ্ক, প্রতিদিন চলে পুলিশ,র‌্যাব, ডিবি,সিআইডি সহ পিবিআই’র টহল। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম সুজনকে নৌকা মার্কার প্রার্থী মো. জালাল গাজীর সমর্থকরা আপহরণের চেষ্টা চালিয়েছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ওই স্বতন্ত্রপ্রার্থী। আত্মরক্ষার জন্য তিনি থানায় আশ্রয়ও নিয়েছেন বলে জানান। স্বতন্ত্রপ্রার্থীসহ তার কর্মীদের নিজ বাড়িতে অবরুদ্দ করে রাখারও অভিযোগ রয়েছে নৌকা মার্কার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্বতন্ত্রপ্রার্থী সুজন মল্লিকের বৃদ্ধা মা কহিনুর বেগম প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলের জীবন ভিক্ষা চায় যা ভিডিওতে ভাইরালও হয়েছে। উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের উপর একের পর এক হামলার ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার এতে আহত হয়েছে প্রায় ২০জন দলীয় কর্মী,ভাঙচুর করা হয়েছে বসতবাড়ি সহ একাধিক গাড়ি তবে কোন মামলা হয়নি থানায়।

এমন ঘটনায় থেমে নেই ইউপি সদস্যরাও উপজেলার বেতাগী সদর ইউনিয়নের (৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের) মহিলা সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য প্রার্থী খাতুনে জান্নাত পাখি(প্রতিক-কলম) ও খাদিজা আক্তার নিলুফা(প্রতিক-হেলিকাপ্টার) এদের অর্ধশতাধিক সমর্থকদের মধ্যে বুধবার রাতে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন দুই পক্ষের ১০জন ভাঙচুর করা হয় বসতবাড়ি। রাতে খরের কুড়ে হয় দেয়া হয় আগুন। পওে ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেন দুইপক্ষর প্রার্থী।

খুন হামলা-মামলা ও ভাঙচুর আতঙ্কে থাকা একাধিক ভোটার মো.সাইফুল ইসলাম,আ. রহিম,সাদ্দাম,মো.হোসাইন সহ বেশ কয়েকজন বলেন, নির্বাচনে ভোট দিবো কি? হামলা আর মামলার ভয়ে ঘর থেকেই বের হই না। এমন চলতে থাকলে সাধারণ জনগন ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রেই আসবে না।

নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী একাধিক চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য প্রার্থী বলেন,‘ ইউপি সদস্য বশির আলম-খুনের ঘটনায় বারবার থানায় ডাকে নির্বাচনে প্রচারণা চালানোই তো সম্ভব হচ্ছেনা।নির্বাচন করবো কি!’ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুব আলম সুজন-অহেতুক বহিরাগত লোকজন দিয়ে সমর্থকদের উপর একের পর এক হামলা করে যাচ্ছে, আমাকে অপহরণ করার চেষ্টাও চালিয়েছে আ.লীগের প্রার্থী, নির্বাচন করবো কি আতঙ্কে সময় পার হচ্ছে।’ আ.লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী জালাল আহম্মেদ -স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজেরা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে, থানায় মামলা দিয়ে হয়রানী করে যাচ্ছে। জনগনের সমর্থন দেখে তারা ভোট হারানোর ভয়ে এমন মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।

এমন সকল ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জানতে চাইলে বেতাগী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু যুগান্তরকে বলেন,আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অটুট রাখতে বেতাগী থানা পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য পদে নির্বাচনে অংশগ্রহন করা সদস্যদের নিয়ে মিটিং করা হয়েছে। তবে তারা যদি কোনভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network