হিজলা প্রতিনিধি
বরিশালের হিজলা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসীম কুমার শিকদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ও অপসারণের দাবিতে বরিশাল পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেছেন হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনায়েত হোসেন হাওলাদার। গত 18 জুলাই রবিবার বরিশাল পুলিশ সুপারের বরাবর তিনি এ অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়।হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসীম কুমার সিকদারহিজলা থানায় যোগদানের পর থেকেই স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ নাথ ও তার অনুসারীদের পক্ষ অবলম্বন করে।মূলধারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে একাধিক মামলা হয়েছে। গত 14 ই জুলাই হিজলা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসীম কুমার সিকদার নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন হাওলাদার কে উপজেলা পরিষদ মাঠে ও নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় বিভিন্নভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়।এমনকি ওই সময় অসীম অসীম কুমার সিকদার এনায়েত হোসেন হাওলাদার কে বলেন তাকে জীবনে আওয়ামী লীগ করার শিক্ষা ও চেয়ারম্যান গিরি করার সাধ মিটিয়ে দিবেন বলে হুমকি দেয়। ওই মারামারি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যানের দুই ছেলে এক ভাগ্নে এক খালাতো ভাই সহ তার 8 নেতাকর্মীর নামে একটি মিথ্যা মামলা করেন।এছাড়াও হিজলা থানার ওসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভের সাথে জানান।তারা থানায় আইনের আশ্রয় নিতে আসলে স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ নাথ ও তার অনুসারীদের কথায় তিনি কোনো মামলা নেননি। মামলা করতে আসলে উল্টো তারা হয়রানির শিকার হয়েছেন। ওসি অসীম কুমার সিকদার গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এমপির নির্দেশে তার পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন। এমপিকে খুশি করতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নের এমপি বিরোধী ব্যানারের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করছেন।নির্বাচনের সময় বিভিন্ন সহিংসতায় ঘটনায় তার কাছে এমপি বিরোধীরা অভিযোগ দিলেও তিনি তা আমলে নেয়নি। এ ব্যাপারে গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মুন্সী মোহাম্মদ ইসহাক আমিন জানান।ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার নির্বাচনী কার্যালয় ও প্রচারণার মাইক ভাঙচুর করার অভিযোগ দিলেও তিনি সেই মামলা না নিয়ে উল্টো এমপির অনুসারীদের নির্দেশে তার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। হরিনাথ পুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ খান জানান।নির্বাচনের সময় তার বহু নেতাকর্মীদের উপর একাধিকবার এম পির সমর্থক রা হামলা করেছে। সেই ঘটনায় হিজলা থানার ওসি কোন অভিযোগ গ্রহণ করেননিএবং প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নির্বাচনের পরে তার সমর্থক কামাল শিকদার নৌকা মার্কা নির্বাচন করার অপরাধে তার দুটি মাছ ঘাটের ঘর এবং আসবাবপত্র রাতের অন্ধকারে নিয়ে নিয়ে যায় বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকরা।ওই ঘটনায় হিজলা থানায় লিখিত অভিযোগ দিল কোন অভিযোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তিনি।এছাড়াও তার ইউনিয়নে নৌকা মার্কার সমর্থক রা একাধিক অভিযোগ করেও আইনি সহায়তা পায়নি।এবং এখনো ওই এলাকার দুই শতাধিক নৌকা মার্কার সমর্থক রা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।মেমানিয়া ইউনিয়নের পরাজিত নৌকা মার্কার সমর্থক প্রার্থী অলি উদ্দিন তালুকদার ক্ষোভের সাথে জানান। তার ইউনিয়নে এমপির অনুসারিপ্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই ওই ইউনিয়নের চালাচ্ছেন বিভিন্ন হামলা মামলা তান্ডব।তারা অভিযোগ দিলেও ওসি কোনো সহযোগিতা বা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। নির্বাচনের পরদিন থেকেই বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ওই ইউনিয়নের চালাচ্ছেন তান্ডব লীলা।যা স্বাধীনতার যুদ্ধ কে হার মানিয়েছে। নৌকা মার্কা নির্বাচন করার কারণে তার ইউনিয়নের তিনশতাধিক নৌকা মার্কার সর্মথকরা এখনো এলাকাছাড়া।এ ব্যাপারে হিজলা থানার ওসিকে বহুবার জানানো হলেও তিনি কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয় নি। নৌকা মার্কার নির্বাচন করার অপরাধে ওই ইউনিয়নে এখনো চলছে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের অঘোষিত যুদ্ধ।তাদের হামল ও নির্যাতনের শিকার হয়েও অনেক নেতাকর্মী চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারেননি হাসপাতালে।গত 15 জুলাই নৌকা মার্কা নির্বাচন করার অপরাধে ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ ঢালী ও তার ছেলে শাকিল ঢালী কে হামলা করে বেদম মারপিট করে। তিনি এখনও হিজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। ওই ঘটনায় হিজলা থানায় অভিযোগ দিলে ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ সত্যতা পাওয়ার পরও ওসি কোনো মামলা গ্রহণ করেননি। হিজলা থানার ওসি অসীম কুমার সিকদার হিজলায় যোগদানের পর থেকেই স্থানীয় সংসদ সদস্য অস্ত্র ও ডাল হিসেবে কাজ করছেন। এমপির কথা ছাড়া তিনি কোন মামলা গ্রহণ করেন না।এছাড়া হিজলা থানার ওসির নিকট মামলা করতে এসে হয়রানির শিকার হয়েছেন সাধারণ জনগণ। ধুলখোলা ইউনিয়নের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়।ওই ঘটনায় হিজলা থানায় ধর্ষণ মামলা করতে আসলে ওসি তার রুমের ভিতর ওই ছাত্রী ও তার পরিবারকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে সত্য ঘটনাকে গোপন করে একটি ধর্ষণের চেষ্টা মামলা এজাহার করেন।পরবর্তীতে ভিকটিম আদালতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। যা বিভিন্ন পত্রিকায় ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় বরিশালের পুলিশ সুপার মারুফ কামাল হোসেন ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগ ও সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের মামলা না নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার মামলা নেওয়ায় অভিযোগ সম্পর্কে। বরিশাল পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা বিভাগ ডিএসবি কে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ করা হয়েছে।