২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

লকডাউন না মানা অন্যায়: কান ধরানো-লাঠিচার্জ মহা অন্যায়!

আপডেট: জুলাই ৩১, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

লকডাউনে অনেক জায়গায় ই শোনা যায় ম্যাজিস্ট্রেট/পুলিশ কান ধরিয়েছে/লাঠিচার্জ করছে!
এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক, বে আইনি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার।
চলুন একটু ব্যাখা দেয়া যাকঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান এর অনুচ্ছেদ ৩১ অনুযায়ী,
” আইনানুযায়ী ও শুধুমাত্র আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য মৌলিক অধিকার এবং আইন বহির্ভূত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না, যাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।”

এবার আসি কোন কোন ধরনের শাস্তি আইন স্বীকৃত!
বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ধারা ৫৩ অনুযায়ী ৫ ধরনের শাস্তি আইন স্বীকৃত।
যথা-
১। মৃত্যুদন্ড।
২। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
৩। কারাদণ্ড (সশ্রম এবং বিনাশ্রম)।
৪। সম্পত্তির বাজেয়াপ্তি
৫। অর্থদণ্ড।

এই ৫ ধরনের শাস্তি ব্যতীত সকল প্রকার শাস্তি আইন বহির্ভূত। তাই লকডাউনে বিনাপ্রয়োজনে বের হলেও ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশ কখনো চাইলেই লাঠিচার্জ, কান ধরানো এগুলো করতে পারেনা।

এবার আসি লাঠিচার্জ এর প্রসঙ্গে –
প্রথমত ম্যাজিস্ট্রেট/পুলিশ চাইলেই লাঠিচার্জ করতে পারবেনা।
লাঠিচার্জ করার জন্য অবশ্যই জনতা কে অবৈধ জনতা হতে হবে।
দণ্ডবিধির ধারা ১৪১ এ অবৈধ জনতা/সমাবেশের সজ্ঞা দেয়া হয়েছে এভাবে “৫ বা ততধিক ব্যক্তি একত্রিত হয়ে একই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অপরাধজনক বলপ্রয়োগ, ভয়ভীতি বা হুমকি প্রদর্শন করে, বা কোন সরকারি কর্মচারীকে তার কাজে বাধা দেয় তখন সেটা অবৈধ সমাবেশ হবে অথবা বৈধ সমাবেশ এর লাইসেন্সের কোন শর্ত ভঙ্গ করলে সেটা অবৈধ সমাবেশ হবে “।

অর্থাৎ বেআইনি সমাবেশ হওয়ায় প্রথম শর্ত অবশ্যই ৫ বা ততোধিক মানুষের উপস্থিতি থাকতে হবে।
এখন কোন সমাবেশ অবৈধ হলেও সেখানে প্রথমেই পুলিশ লাঠিচার্জ বা বলপ্রয়োগ করতে পারবেনা।
পুলিশ আইনের ধারা ৩০ক(১), পিআরবি বিধি ১৪২ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ১২৭ অনুযায়ী প্রথমে অবৈধ সমাবেশ কে ছত্রভঙ্গ হওয়ার আদেশ দিতে হবে।
এবং এরুপ বেআইনি সমাবেশ কে ছত্রভঙ্গ হওয়ার আদেশ দেয়ার পরে যদি ছত্রভঙ্গ না হয় তখন বলপ্রয়োগ (লাঠিচার্জ বা অন্যান্য ব্যবস্থা নিতে পারে), পিআরবি বিধি ১৪৩, পুলিশ আইনের ধারা ৩০ক(২) এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৮ ধারা অনুযায়ী।

অর্থাৎ, জনগণকে প্রথমে তাদের সমাবেশ যে অবৈধ সেটা জানানো এবং তাদের কে ছত্রভঙ্গ হওয়ার আদেশ দেয়ার পরেও যদি তারা ছত্রভঙ্গ না হয় ম্যাজিস্ট্রেট/পুলিশ শুধুমাত্র তখনি বলপ্রয়োগ করতে পারবে।
এখানে একটা বিষয় বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে বলপ্রয়োগ এর পরে জনগণ যদি এরকম কিছু করে যাতে পুলিশ সদস্যদের জীবনের প্রতি হুমকি হয় তাহলে সেক্ষেত্রে তারা প্রয়োজনে দণ্ডবিধির ৯৯ ধারার নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে আত্মরক্ষার জন্য গুলি ও করতে পারবে কিন্তু কোনভাবেই কান ধরানো বা অন্যকোন আইন বহির্ভূত শাস্তি দেয়ার কোন এক্তিয়ার তাদের নেই।

এরকম হয়রানির শিকার হলে করনীয় ঃ
১।প্রথমত বলব, যদি কেউ এই ধরনের শাস্তি দিতে উদ্যত হয় তাকে শুনিয়ে দিন আইনের এই কথাগুলো।
২।এরপরেও যদি বিনাকারণে(৫ জনের কম থাকলে বা ছত্রভঙ্গের আদেশ না দিয়ে) লাঠিচার্জ করতে আসে তাহলে মনে রাখবেন সেটা তার আইন বহির্ভূত ভাবে আপনাকে আক্রমণ, আর আইন বহির্ভূত যেকোনো আক্রমণের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার আপনার রয়েছে।
৩। এরুপ কোন পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট অফিসার এর বিরুদ্ধে আপনি আপনার মৌলিক অধিকার ভঙ্গের জন্য রিট করতে পারবেন।

তাই হয়রানির শিকার আর নয়, আইন জানুন নিরাপদ থাকুন, রুখে দিন ক্ষমতার অপব্যবহার কারীদের।

ধন্যবাদ।
©মোঃ সাহিদ ইসলাম।
প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক,
জাস্টিস সার্ভড ফাউন্ডেশন।
শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ,
গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network