আপডেট: মে ১৭, ২০২২
১৯৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, এরপর দীর্ঘদিন দেশের বাইরে অবস্থান করতে হয়েছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে। দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন তিনি। দিনটিকে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
বাবা, মা, ভাই, বোনসহ সব স্বজনকে হারানো শেখ হাসিনা এখন দেশের টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। দেশে ফেরার পর নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। ৪১ বছর আগে অনেকটা অসহায় অবস্থায় দেশে ফেরা নেত্রী শেখ হাসিনা এখন সারা বিশ্বেই আলোচিত রাজনীতিক।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার আগে শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা বিদেশ যান। আর এই সিদ্ধান্তই বাঁচিয়ে দেয় তাদের দুইজনকে। রয়ে যায় বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের প্রধান পুরুষের রক্তের ধারা।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জার্মানি থেকে ভারতে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। এরপর সেখানে ছয় বছর ছিলেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ তাকে সভাপতি নির্বাচন করে আর ওই বছরের ১৭ মে তিনি দেশে ফেরেন।
দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনার দিনগুলো ছিল খুবই কঠিন। জিয়াউর রহমানের কঠোর শাসনের দিনগুলোতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে তিনি ঢুকতেও পারেননি। পরে বাড়ির বাইরে মোনাজাত করে দোয়া পড়াতে হয়েছে। এরপর জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর নানা ঘটনাপ্রবাহে ক্ষমতা গ্রহণ করেন আরেক সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। জীবনের আরেক কঠিন বাস্তবতা শুরু শেখ হাসিনার।
সেনা শাসন থেকে দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে আবার মাঠে নামে আওয়ামী লীগ। নয় বছর ধরে রাজপথে নেতৃত্ব দেন শেখ হাসিনা। ১৯৯০ সালে পতন হয় এরশাদ সরকারের। পরের বছরের জাতীয় নির্বাচনে হেরে গেলেও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জিতে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরে তার নেতৃত্বেই।
এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে আবার হারের পর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস জয় আসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই। এরপর ধারাবাহিকভাবে আরও দুইবার সরকার গঠন করেন আওয়ামী লীগের ৪১ বছরের এই সভাপতি।
তবে শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থায় পৌঁছানো সহজ ছিল না। তাকে চট্টগ্রামে গুলি করে হত্যার চেষ্টা হয়েছে, ঢাকায় প্রকাশ্য জনসভায় চালানো হয়েছে গ্রেনেড হামলা। সব মিলিয়ে ২১ বার হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন তিনি।