২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

বরিশালে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি: সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

আপডেট: মে ১৯, ২০২২

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি: সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় নাভিশ্বাস ওঠেছে বরিশালের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের। বাজার করতে গিয়ে চোখে মুখে হতাশার ছাপ নিয়ে ফিরতে দেখা যাচ্ছে সবাইকে।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সকাল থেকে বরিশালের বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। সাধারণ মানুষ চাহিদা অনুযায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তালিকা নিয়ে বাজারে যাচ্ছে। অথচ নির্ধারিত টাকায় চাহিদা অনুযায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তালিকার ষাট শতাংশ জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি ফিরছে।

নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্রের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদার প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য কিনতে পারছে না অনেকেই। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই প্রয়োজনের ষাট শতাংশ জিনিসপত্র নিয়ে ফিরতে হচ্ছে সবাইকে।

নগরীর বাংলাবাজার এলাকার আল-আমিন স্টোরের মালিক আল-আমিন খান জানান, গত কয়েকদিন ধরে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সরিষার তেল পূর্বের মূল্য ছিল ২৫০ টাকা, বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ৩০ থেকে ৩৫ টাকার আটা এখন ৫০ টাকা, ৪৫ টাকার ময়দা এখন ৬৫ টাকা, ১০০ টাকার বড় রসুন এখন ১৫০ টাকা, ৩৫/৪০ টাকার দেশি রসুন এখন ৮০/৯০ টাকা, ৫৫ টাকার চিনি ৮০ টাকা, ৬০/৭০ টাকার মুসুর ডাল এখন ১১০টাকা, ৩৪০/৩৫০ টাকার আধা কেজির গুঁড়া দুধ এখন ৩৮০/৩৯০ টাকা, ৪৫/৫০ টাকার টুথপেস্ট ৮০/৮৫ টাকা, ১০০ টাকার রুহ-আফজা এখন ১৮০ টাকা, সকল ধরনের সাবান ১০ থেকে ১৫ টাকা, ডিটারজেন্ট ২০ থেকে ২৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও সকল ধরনের চাল প্রকার ভেদে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। পাশাপাশি সকল ধরনের মসলার দাম বেড়েছে বহুগুণ।

বিক্রেতা আল-আমিন জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে স্থানীয় সকল বাজারে। সকল জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে সকল ক্ষেত্রে। খাবার হোটেলগুলোতে সব খাবারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ।

নগরীর নূরিয়া স্কুল এলাকার আল্লার দান হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, সকল খাবারের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। পরোটা, পুড়ি, সিঙ্গারা, সামুচা, রুটি পূর্বে পাঁচ টাকা করে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা দশ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। হোটেলে খেতে এসেও মূল্য বৃদ্ধির কারণে অনেকেই দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়তে দেখা গেছে।

মূল্য বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে হোটেল মালিক সফিক জানান, বাজারে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। আটা, ময়দা, সয়াবিন পূর্বের মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বেড়েছে। বিশেষ করে গ্যাসের দাম এখন আকাশছোঁয়া। আগে যেই গ্যাস ছিল ২৮/৩২শ টাকা, তা এখন ৪৫শ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ফলে সকল খাবারের সাইজ একটু বড় করে দাম দ্বিগুণ করা হয়েছে।

একই অবস্থা দেখা যায় নগরীর কাঁচা বাজারগুলোতে। টমেটোর দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে এখন হয়েছে ৮০ টাকা। এছাড়া কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা দাম বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা কেজি। বাজারে সজনে ৮০ টাকা, কচুমুখী ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, মূলা ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ঢেঁডস ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩০ টাকা, শসা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাধাকপি ৪০ টাকা এবং চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস হিসেবে এবং কাঁচা কলা ৪০ টাকা ও লেবু ২০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। যা পূর্বের তুলনায় অনেকটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ক্রেতারা।

সাগরদী বাজারে বাজার করতে এসে ক্ষোভের কণ্ঠে শামীম বলেন, ‘গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে দুই একটি ছাড়া সব সবজির দাম বেড়েছে।’

সাগরদী বাজারে সবজি বিক্রেতা ইউনুস আলী বলেন, ‘সবজির দাম আড়তদাররা বাড়ায়। আমরা সেখান থেকে কিনে এনে ২/৪ টাকা বেশি মূল্যে বিক্রি করছি। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের যেমন কেনা, তেমন বিক্রি।’

নগরীর সিটি মার্কেট সংলগ্ন একমাত্র পাইকারী কাঁচা বাজারের গিয়ে কথা হয় আড়তদারদের সঙ্গে। মায়ের দোয়া আড়তের মালিক অভি ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘মূল্য আমরা বাড়াই না, আগের চেয়ে সব কিছুর খচর বেড়েছে, তাই মালের দাম এমনিতেই বেশি পরে যায়। তাছাড়া পরিবহন খরচ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। ফলে এর প্রভাব পড়ছে সকল পণ্যের ওপর।’

মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে আলাপ করলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শাহ্ শোয়াইব মিয়া জানান, কেউ অযথা মূল্য বৃদ্ধি করলে তার বিরুদ্ধে জরিমানা করাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বিষয়ে বাজার তদারকিমূলক অভিযান নিয়মিত অব্যহত রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network