এস মিজানুল ইসলাম, বানারীপাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতা: বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ সহ নানা অনিয়ম ও দূনীতির কারনে উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির ১ নং সদস্য ও বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ শাহে আলম তালুকদারকে কারন শোকজ নোটিশ দিয়েছে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ। শোকজের জবাব ১৫দিনের মধ্য প্রদানের জন্য বলা হয়েছে। মঙ্গলবার ৩ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামীলগের সাভাপতি গোলাম ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা স্বাক্ষরিত শোকজ দেয়া হয়। সংসদ সদস্য মোঃ শাহে আলমের বিরুদ্ধে সু-নির্দিষ্ট ১৭টি সহ প্রায় অর্ধশত অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। শোকজ প্রদানের সত্যতা স্বীকার করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মাওলা হোসেন সানা। তবে বিষয়টি দলের অভ্যান্তরিন বিষয় বলে উল্লেখ করেন।
এমপি মোঃ শাহে আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ :
নোটিশে সাংসদ মোঃ শাহে আলামের বিরুদ্ধে দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে অশোভন আচারন, আওয়ামীলীগের কার্যালয় সংস্কার বাবদ ২ লাখ টাকা ফেরত না দেওয়া, দলের অভ্যন্তরে বিভাজন সৃস্টি করে নিজস্ব বলায় তৈরী, বানারীপাড়া পৌরসভা, চাখার ও সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন পরিষদে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দাড় করানো, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দল সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফ আহমেদ কিসলুর বিরুদ্ধে এমপির চাচাতো ভাই নূরুল হুদাকে প্রার্থী করিয়ে জয়ী করা, এমপির নির্দেশে যুবলীগ কর্মী আতিক বাপ্পীকে হাতুড়ি পেটা করে দুই হাত-পা ভাঙ্গা এবং তার স্ত্রী ও শিশু কন্যাসহ জেলে পুড়ে দেওয়া, ২৩ আগস্ট জাতিয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শেরে বাংলার দৌহিত্র একে ফায়াজুল হক রাজুকে শাহে আলম অনুসারীদের দিয়ে লাঞ্চিত করা, চাচাতো ভাই ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল হুদাকে দিয়ে আওয়ামীলেীগের কার্যলয়ে কেয়ার টেকারের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে কার্যলয়ে তালাবদ্ধ করে রাখা, সাংসদের ভুল সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার ভিত্তিক মডেল মসজিদ প্রকল্প কাজের জটিলতা সৃস্টি হওয়া, বালিকা বিদ্যালয়ের নামে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবি জ্যার্তিময় গুহ ঠাকুরতার জমি দখল করা, ইলুহারে রতন ঘরামির নামে এক সংখ্যালঘুর জমি জোড়পূর্বক ক্রয়ের অপচেস্টা করা, দলীয় কার্যালয় নির্মানের জন্য ৫৪ লাখ টাকা আত্মাসাত করা, বানারীপাড়া হাই স্কুলের এ্যালামনাই এ্যসোসিয়েশেনের নামে প্রতিটি ইট ভাটা থেকে ৫০ হাজার এবং সরকারী অনুদানে নির্মিত বাকপুরে ঈদগাহ নামে বিভিন্ন ইটভাটা ও বিভিন্ন ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে চাঁদা আদায় করা, ৪০ দিনের কর্মীসূচি প্রকল্পের শতকরা ৫ ভাগ অসহায় দুস্থদের মাঝে বিতরন না করে নিজের পকেটস্থ করা।
১লা বৈশাখে পিঠা উৎসবের নামে এমপির স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায়, ঠিকাদারী কাজে ৫% কমিশন নেওয়া, চাখার সরকারী ফজলুল হক কলেজের নির্মান কাজের ঠিকাদারের কাছে ১০লাখ টাকা দাবী করা,
সরকারী খাল দখল করে বাড়ীর সীমানা প্রাচীর নির্মান, বিএনপির প্রতিষ্ঠিত নেতাদের সাথে এমপি শাহে আলমের আপন ভাইয়ের ঠিকাদারী কাজ করা, হাসপাতালের খাদ্য সরবারাহ ঠিকাদারকে এমপির চাচাতো ভাই সামসুল হুদা কর্তৃক কুপিয়ে আহত করা, লটারিতে কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের কাছে উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে ২% এবং ৫% কমিশন আদায় করাসহ নোটিশে
সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক উল্লেখ করেন। দলীয় সংসদ সদস্য হয়েও আপনার এ ধরনের কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় দল এবং সরকারে ভাবভুর্তি নষ্ঠ হচ্ছে। নোটিশ প্রাপ্তির ১৫দিনের মধ্য জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
নোটিশের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম ফারুক বলেন, সংসদ সদস্য শাহে আলম শুধু একজন সাংসদই নন।
তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের একজন জেষ্ঠ্য সদস্যও। কোন সদস্য দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তাকে নোটিশ করার এখতিয়া দল রাখে। তিনি সাংসদ নিবাচিত হওয়ার পর থেকে নেতা কর্মীদের পাশে এসে-তো দাড়াননি। বরং সাংসদের কিছু দলীয় কর্মকান্ড আওয়ামীলীগকে বির্তকির্ত করেছে। শুধু স্থানীয় আওয়ামীলীগকে করেনি। কেন্দ্রয়ী আওয়ামীলীগকেও বির্তকের মধ্যে ফেলেছে। পাশাপাশি তিনি আত্মীয় লীগ সৃস্টি করায় দল পরিচলানায় ব্যঘাত ঘটছে। তাই ২৯ সেপ্টেম্বের উপজেলা আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্তিধ সভায় সাংসদের উপস্থিতিতে শোকজ নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই অনুযায়ী আমরা তাকে নোটিশ করেছি। বিষয়টি জেলা আওয়ামীলীগেকে অবহিত করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে জবাব না দিলে আওয়ামীলীগের সদস্য হিসেবে শাহে আলমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহে আলম মুঠোফোনে বলেন, আমাকে কারন দর্শনো হয়েছে কিনা তা আমি জানিনা। আর এ ধরনের কোন নোটিশও আমি পাইনি। তিনি আরো বলেন, এর আগে বালিকা বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে ওরা( সভাপাতি ও সম্পাদক) দৌড়াদৌড়ি করেছিলো। সমানে সংসদ নির্বাচন আসতেছে তাই তারা আবার ইতরামি শুরু করেছে। এই ইতরামি নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। #