আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২৩
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় রাতের আধারে স্বামীকে আটকে রেখে এক নববধূকে শ্লীলতাহানি চেষ্টা ও নগ্ন ছবি ধারনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই নববধূর শ্বশুর ৪ জনকে আসামী করে টুঙ্গিপাড়ায় থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানালেও পুলিশ বলছে এ ব্যাপারে এখন পযর্ন্ত কোন অভিযোগই পাননি তারা।
গত বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) গভীর রাতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া চৌরঙ্গী মোড়ে আশ্রয়ন প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার তিন দিন পার হলেও কোন আইনি সহায়তা পায়নি ভুক্তভোগীর পরিবার।
ওই নববধূর শ্বশুর মো: আকব্বর মোল্লার জানান, ২৯শে অক্টোবর সামাজিকভাবে আমার ছেলে মো: মঈন মোল্লার সাথে বিবাহ হয়। এরপর তাদেরকে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসায় নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে ওই এলাকার ওমর তালুকদারের ছেলে বখাটে নাইম তালুকদার (২১) ও ঠান্ডা তালুকদারের ছেলে মিজু তালুকদারসহ (২২) তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা জোর পূর্বক ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে ঢুকে বিয়ের কাবিন নামা দেখতে চায়। এসময় আমার ছেলে মো: মঈন মোল্লাকে জোড় করে বাথরুমে আটকে রাখে। এরপর আমার পূত্রবধূর অশ্লীল ছবি মোবাইলে ধারন করে। এরপর থেকে হত্যার হুমকিসহ নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এঘটনায় ওমর তালুকদারের ছেলে বখাটে নাইম তালুকদার (২১) ও ঠান্ডা তালুকদারের ছেলে মিজু তালুকদারসহ (২২) ৪ জনকে আসামী করে টুঙ্গিপাড়ায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
নির্যাতিতা নববধূ বলেন, রাতের আঁধারে (আনুমানিক রাত ৩ টায়) আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজন ঘরে শুয়ে ছিলাম। এসময় বিড়ি ধরানোর জন্য আগুন চাই। আমার না বলেলে জোড় করে ঘরের দারজা খুলিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় আমার স্বামী মঈন মোল্লাকে বাথরুমে আটকে ফেলে। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে অপর ঘরে থাকা আমার শশুর শাশুড়ি ঠেকাতে আসলে তাদেরকে মারধর করে ও বেঁধে ফেলা হয়। পরে আমাকে জোর করে তাদের মোবাইল দিয়ে নগ্ন ছবি তুলে এবং এ সময় আমাকে হত্যার হুমকি এবং আমার এই নগ্ন ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়া হুমকি দেয়। আমি এখন অনিশ্চয়তায় ভুগছি। আমি এর বিচার চাই।
নির্যাতিতার স্বামী মো: মঈন মোল্লা(২২) বলেন, আমার ঘরে জোর পূর্বক প্রবেশ করে আমাকে তারা বাথরুমে আটকে রাখে। এসময় আমার স্ত্রীর শ্লীলতাহানি চেষ্টা করে এবং মোবাইল ফোনে অশ্লীল ছবি ধারণ করে। পরে আমার বাবা মা আমাদের চিৎকার শুনে আসলে তাদেরকে মারধর করে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো: সাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের এলাকায় একদল নেশাগ্রস্ত বখাটে লোক নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে প্রায়ই এমন অপকর্ম করে থাকে। স্বামীকে আটকে রাখে এবং অপর দুই জন নববধূকে শ্লীলতাহানি চেষ্টা করে। এ সময় আমরা চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। ভয়ে কেউ কিছু বলতে চায় না।
এ ব্যাপারে প্রধান অভিযুক্ত নাইম তালুকদারকে না পাওয়া গেলেও তার মা রেক্সোনা বেগম বলেন, গভীর রাতে একজনের ঘুরে ঢুকে অন্যায় করেছে আমার ছেলে। আমি এ বিষয়ে আমার ছেলে পক্ষ থেকে তাদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছি। আমার ছেলে না বঝে এমন কাজ করেছে। তবে আমার ছেলে বখানে নয়।
টুঙ্গিপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, গত বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছি বলে আমি শুনেছি। তবে এখন পযর্ন্ত আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসে নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। #