স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে দাখিল পরীক্ষায় মায়ের পক্ষে প্রক্সি দিতে গিয়ে মেয়েকে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সি এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন।
পরে জরিমানার টাকা পরিশোধ করে অভিভাবকেরা তাকে মুক্ত করে নিয়ে যায়। দাখিল পরীক্ষায় ৪৬ বছর বয়সী মা খাদিজা বেগমের হয়ে ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে সুমাইয়া খানম পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে গিয়েছলেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) গোপালগঞ্জ শহরতলীর হরিদাশপুর রয়েল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
হরিদাসপুর রয়েল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব আতিয়ার রাসুল হিমেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত পরিক্ষার্থী মা খাদিজা বেগম গোপালগঞ্জ শহরের মহিলা আলিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলো। গত তিনটি পরীক্ষায় তিনি মেয়েকে দিয়েই পরীক্ষা দিয়েছেন। পরিক্ষার্থী মা খাদিজা বেগম শহরতলীর ঘোষেরচর উত্তরপাড়া গ্রামে জাহাঙ্গীর মিয়া স্ত্রী ও সুমাইয়া খানম তার মেয়ে।
হরিদাসপুর রয়েল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব আতিয়ার রাসুল হিমেল জানান, এসএসসি পরীক্ষায় আমার কেন্দ্র হরিদাসপুর রয়েল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র পড়ে। আজ বৃহস্পতিবার আরবী দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল।
পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার্থী সুমাইয়া খানমের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে প্রবেশপত্র দেখতে চাইলে সে সাদাকালো একটি প্রবেশপত্র দেখায়। পরে ছবির সাথে তার চেহারার অমিল থাকায় তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এসময় সে জানায় গোপালগঞ্জ শহরের মহিলা আলিয়া মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী মা খাদিজা খানমের স্থলে মেয়ে সুমাইয়া খানম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এর আগে তিনি মায়ের হয়ে প্রক্সি দিয়ে আরো তিনটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে খবর দেয়ে হলে ঘটনাস্থলে গিয়ে আদালতের বিচারক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সি স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন। পরে জরিমানার টাকা পরিশোধ করে অভিভাবকেরা তাকে মুক্ত করে বাড়ীতে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ মহিলা আলিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনা বড় ধরনের অপরাধ। এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ওই শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারসহ তার রেজিস্ট্রেশন বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পরিক্ষার্থী খাদিজা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এসএসসি পরীক্ষায় মেয়েকে দিয়ে দেওয়ানো ভুল হয়েছে। তবে এই বয়সে মনের ইচ্ছা মেটাতেই পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। #