স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : মায়ানমার মাদক চোরাচালানের প্রধান রুট উল্লেখ করে র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, এটি এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। মায়ানমার অনেক আগে থেকেই চাচ্ছে বাংলাদেশের সাথে যুদ্ধ করার জন্য। রোহিঙ্গা ঢোকানো থেকে শুরু করে পায়ে পাড়া দিয়ে রাজনৈতিক উস্কানী দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় মনোভাবের কারণে এটা থেকে রক্ষা পেয়েছি। এখন যুদ্ধে যাওয়া মনে দেশটা শেষ হয়ে যাওয়া। মিয়ারমারে এখন সামরিক সরকার রয়েছে। তারা আরাকান আর্মির সাথে যুদ্ধ চলছে। তাই ওরা আমাদের সাথে ঝামেলা সৃষ্টি করে ফয়দা লুটতে চাচ্ছে।
আজ শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার এম এ খালেক ডিগ্রী কলেজ মাঠে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহাপরিচালক আরো বলেন, মাদক এখন আকাশ, নৌপথ দিয়ে এবং মায়ানমার থেকে বেশি আসছে। এটি পরিকল্পিতভাবে পাঠানো হচ্ছে। আমরা জাল ফেলে রেখেছি, মায়ানমারের সবচেয়ে বড় গ্যাংস্টাকে জালের মধ্যে ফেলেছি, আমরা কিছু করতে পারবো। মাদক নিয়ন্ত্রণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ। যে কোনো মূল্যে মায়ানমার রুট বন্ধ করা হবে। মাদক হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসা। রাতারাতি ধনী হওয়ার ব্যবসা। এটা জনপ্রতিনিধিসহ সবাই জানে। বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী রয়েছে। কোন একক বাহিনীর পক্ষে মাদক নির্মূল করা সম্ভব না। মাদক নির্মূল করতে হলে সকলে মিলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মহপরিচালক আরো বলেন, নতুন প্রজন্মকে বাচাতে হলে শুধু বই খাতা দিলে হবে না। এই বাস্তবতা কিন্তু এখন আর নেই। তাই বাচ্চাদের শৈশব থেকে শিখাতে হবে। বিশ্ববিদ্যাল কলেজে পড়ে কিছুই শিখতে পরবে না। নীতি-নৈতিকতা পরিবার থেকেই শিখতে হয়। শুরু থেকেই বাচ্চাদের গড়ে তুলতে হবে। মূল নীতি নৈতিকতা পরিবার থেকে শিখতে হবে, এক্ষেত্রে অভিভাবকদের মূল ভূমিকা রয়েছে ও এরপর শিক্ষকদের।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যদি মাদক চলে যায়, এটা একটা জাতিকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা। ভারতীয় সমান্ত নিয়ন্ত্রণ করা হলেও মায়নমার, ইয়ারা, আইসসহ বিভিন্ন মাদক সমানে পাচার করছে। মাদক নিয়ন্ত্রনে সামাজিক আন্দোলন ও অল আউট অ্যাকশনে যেতে হবে। গডফাদার, কিশোরগ্যাং কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে র্যাব ডিজি বলেন, আপনাদের মডেল হতে হবে। কারণ পরিবারের পরেই আপনারদের স্থান। আপনাদেরই সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। আপনাদের সুযোগ সুবিধা এখন একটু কম থাকলেও আগামীতে ঠিক হয়ে যাবে। ছেলে-মেয়েকে স্কুল কলেজে পাঠিয়ে ঘরে বসে থাকলে হবে না। খবর রাখতে হবে মাদকের সহজলভ্যতা সন্তানটিকে শেষ করে দিচ্ছে কিনা।
দেশে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে র্যাব ডিজি বলেন, দেশে বর্তমানে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে বলেই আমাদের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। এখনকার প্রত্যেকটি ক্যাডারে মধ্যে পেশাদারিত্বের খুব ঘাটতি রয়েছে। যেমন লেখাপড়ায় ঘাটতি রয়েছে, পেশাদারিত্বে ঘাটতি রয়েছে, শৃঙ্খলায় ঘাটতি রয়েছে। এটাকে যদি আমরা ওভারকাম করতে হলে এখন থেকে চেষ্টা করতে হবে। যাতে যুব সমাজ বা নতুন প্রজন্ম অবাধ্য হয়ে না যায়।
এম এ খালেক ডিগ্রী কলেজ মাঠে র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে.কর্ণেল ফিরোজ কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা ও বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, এম এ খালেক ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ কেএম মাহাবুব, ভাটিয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম তালুকদার, পুলিশ সুপার (অপারেশন) কাজী মাহাবুবুল আলম, বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভা শেষে ২০২৩ সালের কাশিয়ানী উপজেলার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত ১০৯ জন শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেষ্ট ও জন প্রতি ১০ হাজার তরে বৃত্তির টাকা তুলে দেন র্যাব মহাপৃরিচালক এম খুরশীদ হোসেন। #