গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি \ অবৈধ জাল উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের হামলায় মৎস্য দপ্তরের কর্মচারী সহ তিনজন আহত হয়েছে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাও লাঞ্চিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর পুলিশ ফারির ইনচার্জ আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হিজলা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, বিপুল পরিমানে অবৈধ জাল রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে নৌ পুলিশের সদস্যদের সহায়তায় মৎস্য অধিদপ্তরের লোকজন নিয়ে হরিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকার ইউনুচ মিয়ার বাড়িতে অভিযানে যাই। সেখানে গিয়ে গোটা বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ পাওয়া যায়নি। পরে বাড়ির মহিলা সদস্যদের সাথে কথা বলে জানতে পারি ৫-৬ দিন আগে প্রায় ২০ লাখ টাকা মূল্যের জাল এবং নগদ টাকা নিয়ে গেছে হিজলা ফাড়ি পুলিশের ইনচার্জসহ সদস্যরা। তবে সম্প্রতি হরিনাথপুর ফাঁড়ি পুলিশ কোন অভিযান চালিয়ে অবৈধ জাল পুড়িয়েছে বা ধ্বংস করেছে এমন কোন তথ্য মৎস্য বিভাগের কারও কাছে ছিল না।
মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি হরিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুরর রহিম সাহেবকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলি। কাছাকাছি হওয়ায় তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই আসেন। এসময় তার সামনেই জাল নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আবারও উপস্থাপন করেন নারী সহ স্থানীয়রা। সেই সাথে অভিযানিক দলের সদস্যরাও তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। আর এতেই ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিম ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং আমাদের অভিযানিক দলের সাথে থাকা মাঝিদের গালাগাল শুরু করেন ও সবার সাথে খারাপ আচরণ করেন। তার এমন আচরনের পর সেখানে অভিযান না চালিয়ে বিষয়টি হিজলা থানার ওসিকে অবহিত করে সদরে চলে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেই। পথিমধ্যে হরিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিমসহ একাধিক পুলিশ সদস্য সিভিল ড্রেসে আমাদের যানবাহনের গতিরোধ করে। যারমধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য নেমেই থ্রি-হুইলারের সামনে থাকা মাঝি সাইফুল ইসলামকে গালাগাল ও মারধর করে। একপর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য লাঠি নিয়ে তেরে গেলে অন্যরা তাতে বাধা দেয়। তখন মৎস্য দপ্তরের মাঠকর্মী মোঃ হানিফ, মাঝি ইয়াসিনসহ বেশ কয়েকজন ফাঁড়ি পুলিশের হামলার শিকার হয়। এসময় হামলা ঠেকাতে গেলে আমাকেও লাঞ্চিত করা হয়। এমনকি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিম আমাকে গালাগাল করে দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করে বলে থাকেন জাল বিক্রি করছি আরো করবো পারলে যা করার করিছ। দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে একজন পুলিশ সদস্যের এরকম ঔদ্বত্বপূর্ন আচরন দেখে আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে হরিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিম বলেন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যা পরবর্তীতে সমাধান হয়ে গেছে। একই কথা বলেন হিজলা থানার ওসি জোবায়ের ইসলাম। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ জানান, এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।