আপডেট: আগস্ট ২, ২০২৪
বরগুনা জেলা প্রতিনিধিঃ
সপ্তাহভর বিরামহীন ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন বরগুনার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শ্রাবণ মাসের শুরুতে সামান্য বৃষ্টি হলেও মাসের মাঝামাঝি সময়ের এমন বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পড়েছে মানুষের জীবনযাত্রা। কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ। ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে পারছেন না। দুএকটা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও ক্রেতা না পাওয়ায় বেচাকেনা হচ্ছে না। রাস্তাঘাট জনশূন্য।
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় জেলেদের মাছ ধরাও ব্যাহত হচ্ছে। প্রচণ্ড তুফানে সাগরে মাছধরা ট্রলার থেকে একজন জেলে ছিটকে পড়ে নিখোঁজ হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে।
কিছুদিন ধরে চলা বৈরী আবহাওয়ায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। ধান ক্ষেতের পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বিপুল পরিমাণ ধানের বীজ পচে যাচ্ছে। বিনষ্ট হচ্ছে সবজি ক্ষেতও।
৫ নম্বর আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের কৃষক মোঃ হানিফ হাওলাদার বলেন, আমি ২০ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করেছি টানা বৃষ্টির কারণে আমার সব গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। একই গ্রামের কৃষক সোহাগ হাওলাদার বলেন, আমার জমির পুরো বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন বৃষ্টি আরো দুএকদিন থাকলে ক্রয় করার মতো বীজও এলাকায় থাকবে না। এবছর ধান উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রিকশা চালক জসিম বলেন, ‘দিন আনি দিন খাই, এই রিকশা দিয়াই মোগো সংসার চলে, যেই বৃষ্টি শুরু হইছে এতে না খাইয়া মোগো মইরা যাওয়া লাগবে বৃষ্টিতে কোন যাত্রীও নাই রাস্তাঘাটে ! ‘ দিনমজুর বাদল শিকদার বলেন, আমি নিয়মিত কাজ করি। কোনোদিন বসে থাকতে হয় না। তবে আজ তিনদিন যাবৎ অলস সময় কাটাচ্ছি। এভাবে কাজ-কাম বন্ধ থাকলে নাখেয়ে মরতে হবে।
বরগুনা পৌর শহরের টাউনহল বাস স্টেশন এলাকার ব্যাবসায়ী (মুদি দোকানদার) মোঃ নোমান বলেন, আমি প্রতিদিন সকাল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত (মুদি মালামাল) বিক্রি করি। কিন্তু বৃষ্টি আসায় দোকানের ঝাপ নামিয়ে বসে আছি। আবহাওয়া খারাপের কারনে দাঁড়িয়েই আছি, কোনো বিক্রি নেই বললেই চলে।
বরগুনা ওয়াপদা অফিস জানিয়েছে বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ১৫৫ মি:মি:।
টানা বৃষ্টির কারণে ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করায় ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।