রিয়াজুল হক সাগর,রংপুর।
উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে শুক্রবার থেকে তিস্তার পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদী বিধৌত দুই পারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। রোববার রাত থেকে পানি কমা শুরু করেছে। কিন্তু এতেও কমেনি প্লাবিত এলাকাগুলোর মানুষের কষ্ট নদী পাড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন আতঙ্ক। এতে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা।সোমবার দুপুর ৩টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে একই সময়ে নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ এই পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।স্থানীয়রা জানান, ভারত থেকে নেমে আসা ঢল আর কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে গত শুক্রবার থেকে তিস্তার পানি প্রবাহ বাড়তে থাকে। ফলে তিস্তার চরাঞ্চল ও বাম তীরের নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়ে উপজেলার চার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। তলিয়ে যায় কৃষকের ফসল, ভেসে যায় পুকুরের মাছ। শনিবার রাত থেকে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও রোববার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এদিকে তিস্তার পানি প্রবাহ কমে গেলেও নতুন করে নদী ভাঙনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের চর ইচলি গ্রামের মিথুন রায় বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও এখন কমতে শুরু করেছে। এতে কিছু কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর আমাদের ফসলি জমি নদীর পেটে চলে যাচ্ছে। এবারও চলে যাবে হয়ত। এ নিয়ে চিন্তায় আছি।সাবেক ইউপি সদস্য মোন্নাফ মিয়া বলেন, শুক্রবার থেকে নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। রোববার রাত থেকে পানি কমেতেছে। এখন সবাই ভাঙন আতঙ্কে আছে।রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, রংপুর বিভাগ ও এর উজান ভারতে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে এসেছে। আগামী ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত তিস্তা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিনে তা হ্রাস পেতে পারে।