স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : শ্রীশ্রী শ্যামা পূজা উপলক্ষে উৎসাহ ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যে দিয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির এ বাইচের আয়োজন করে।
আজ শুক্রবার বিকাল থেকে ঘাঘর নদীর খেজুরবাড়ি থেকে মান্দ্রা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা এ নৌকা বাইচে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, পিরোজপুর, বরিশাল জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা অর্ধশতাধিক সরেঙ্গা, ছিপ, কোষা, চিলাকাটা, জয়নগর বাচারীর নৌকা অংশ নেয়। এসময় কাসার ও বাদ্যের তালে তালে মুখোর হয়ে ওঠে নদী প্রঙ্গন।
এ নৌকা বাইচ দেখেতে দুপুর থেকে নদীর দুই পাড়ে ভীড় করে দর্শনার্থীরা। এসময় নদীর দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে থেকে হাজার হাজার নানা বয়সের নর-নারীর হাততালী ও হর্ষধ্বনী দিয়ে এ নৌকাবাইচ উপভোগ করেন। এই নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে নদীর দু’পাড়ে বসেছিল গ্রামীণ মেলা। এছাড়াও ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় বাদাম, চানাচুর, মুড়ি মুড়কির ভাসমান দোকান নিয়ে অনেককেই বেচাকেনা করতে দেখা গেছে।
নৌকা বাইচ শেষে রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির পক্ষ থেকে বাচারী নৌকাগুলোকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ সময় রাধাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলা থেকে আগত সুদেব বিশ্বাস বলেন, আমি আমার পরিবার নিয়ে এখানে নৌকাবাইচ দেখতে এসেছিলাম। অনেকদিন পরে উৎসবমুখর পরিবেশে এই নৌকাবাইচ দেখলাম।
উপজেলার তারাশী গ্রামের মনু দাড়িয়া বলেন, আমি একটি ট্রলার (ইঞ্জিন চালিত নৌকা) নিয়ে আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে এই নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। আমাদের সাথে কয়েকজন শিশু আছে। যারা জীবনে এই প্রথম নৌকাবাইচ দেখলো। এই বাইচ দেখে এরা খুব আনন্দ পেয়েছে।
মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, কোটালীপাড়্ উপজেলায় একসময় অর্ধশত স্থানে দূর্গা, লক্ষ্মী, কালী ও বিশ্বকর্মা পূজায় নৌকাবাইচ হতো। কালের বিবর্তনে খাল নদী দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় ঐহিত্যবাহী এ নৌকাবাইচ হারিয়ে যেতে বসেছে। বিনোদনমুখী এই নৌকাবাইচকে ধরে রাখার জন্য আমি উপজেলার নদী ও খাল দখলমুক্ত এবং খননের দাবী জানাচ্ছি। #