• ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বোরহানউদ্দিনে জিনের বাদশাদের ফের আধিপাত্য বিস্তার,নীরব ভূমিকায় স্থানীয় প্রশাসন

report71
প্রকাশিত নভেম্বর ৫, ২০২৪, ১৩:০০ অপরাহ্ণ
বোরহানউদ্দিনে জিনের বাদশাদের ফের আধিপাত্য বিস্তার,নীরব ভূমিকায় স্থানীয় প্রশাসন

ভোলা জেলা প্রতিনিধি :
ভোলার বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নে ৫ ই আগস্ট এর পর জিনের বাদশা পরিচয় প্রতারণা ও মাদকের কারবার বেড়ে গেছে বহু গুনে।
নিজেদের পেশা ছেড়ে জিনের বাদশাহ হয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
শতশত মানুষ টাকার গাছ’ বানিয়েছেন বিপদগ্রস্ত মানুষকে ঠকিয়ে। কখনও ‘জিনের বাদশা’, কখনও ‘দরবেশ বাবা’ সেজে অসহায় মানুষের সমস্যা সমাধানের পথ দেখানোর কথা বলে দু’হাতে কামিয়েছেন টাকা। প্রতারণার টাকায় কোটিপতি হয়েছে এমন ঠকবাজের তথ্য পেয়েছে এই প্রতিবেদক।
জানা গেছে,কাচিয়া ইউনিয়নে ৪০ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। ৯ ওয়ার্ডের প্রতিটিতে আছে ‘দরবেশ বাবা’ প্রতারক চক্রের ছায়া। দুষ্টচক্রের এমন অপকীর্তিতে কাচিয়ার নামই হয়ে গেছে ‘জিনের বাদশা’ ইউনিয়ন! ঠকবাজদের যন্ত্রণায় এলাকার মানুষ ত্যক্তবিরক্ত। তাদের দুষ্কর্মে কাচিয়া ইউনিয়নের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে দাবি করে প্রতারকমুক্ত ইউনিয়ন চান তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতারক ধরতে এর আগে মাঝেমধ্যেই গ্রামে অভিযানে নামত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চক্রের কাউকে কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়। তবে জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের একই কাজে নামে প্রতারকরা কিন্তু ৫ ই আগস্টের পরে কোন অভিযান নেই এমনকি স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে গেলেও পদক্ষেপ নিচ্ছে না তারা।
জানা গেছে,চক্রের সদস্যরা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রলুব্ধ করা হয়। লটারি পাইয়ে দেওয়া, ভাগ্যবদল, পাওনা টাকা আদায়, মামলায় জেতানো, অর্থ সংকট দূরসহ সব সমস্যা সমাধানের কথা বলা হয় বিজ্ঞাপনে। বলা হয়- আধ্যাত্মিক ও তান্ত্রিক ক্ষমতাবলে বিপদগ্রস্ত মানুষের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারে।

এরপর বিজ্ঞাপনে থাকা মোবাইল ফোন নম্বরে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি যোগাযোগ করলে শুরু হয় পকেট কাটা। দুই. চক্রের সদস্যরা নিজে থেকেই মানুষের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে গভীর রাতে কিংবা ভোরে মানুষকে ফোন করে ‘জিনের বাদশা’ হিসেবে পরিচয় দেয়। ধন সম্পত্তি জটিলতা, সংসারে অশান্তি দূর করাসহ সব মুশকিল আসানের টোপ দেয় তারা। টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে কখনও কখনও কথা বলে নারী বা ক্ষীণ কণ্ঠে। কাউকে ফাঁদে ফেলতে পারলে চক্রের সদস্যরা প্রথমে শুরু করে হাজার টাকা দিয়ে। পরে ধাপে ধাপে নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে,গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান জিনের বাদশার মাধ্যমে নিজেদের জায়গা,জমি,টাকা পয়সা সর্ব হারিয়ে প্রতারিত হওয়া একাধিক মানুষ বোরহানউদ্দিন থানায় জিনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারক চক্রের একাধিক সদস্যর নামে অভিযোগ দায়ের করেন,মামলার জন্য এসেছেন অনেকে কিন্তু স্থানীয় থানা পুলিশ অভিযোগ পর্যন্তই শেষ তারপরে আর কোন অভিযান পরিচালনা কিংবা পদক্ষেপ নেয়নি তারা,নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা লোকজন পুলিশের সহায়তা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন নিজ এলাকায়,কিভাবে সংসারে হাল ধরবে এই চিন্তায় রয়েছে অনেকেই।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক,ভুক্তভোগী পরিবারগুলো যাদের নামে অভিযোগ করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য দাবি জানান,তারা বলেন এমনটি চলতে থাকলে হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাবে,এখন জরুরী পদক্ষেপ না নিলে এই এলাকায় মানুষ ও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান জানান,আমরা তদন্ত শুরু করেছি অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।