স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : অবশেষে আদালতের নিদের্শ জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন গোপালগঞ্জের আলোচিত হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া চার সন্তানের পিতা জামাল মিয়া। এদিকে, জামাল মিয়ার চার সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপালগঞ্জ আমলি আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. ফিরোজ মামুন এ জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর সন্ধ্যায় জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এরআগে, লিগ্যাল এইডের কৌশলী অ্যাডভোকেট শারমিন জাহান জামাল মিয়ার জামিনের আবেদন করেন।
এদিকে, আদালতের নির্দেশনা মত জামাল মিয়ার চার সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বিকালে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আক্তার জামাল মিয়ার বাড়ীতে যান। এসময় পরিবারের সদস্যদের হাতে বিভিন্ন উপকরন তুলে দেন ও লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন।
আজ সকালে যমজ দুই কন্যাশিশুর জন্মের এক সপ্তাহের মাথায় মায়ের মৃত্যু। তার কয়েকদিন পর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বাবা কারাগারে। এমন পরিস্থিতিতে আরও এক বোনসহ মোট তিন বোনকে নিয়ে ১৩ বছরের সাজ্জাদ চরম বিপাকে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদ আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ। এমন সংবাদ নজরে আনায় স্বপ্রণোদিত হয়ে সেই শিশুদের দেখভালে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ সমাজসেবা কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।
বিষয়টি আদালতের নজরে আনার পর আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের কাছে বিষয়টি জানতে চান এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই শিশুদের খাবার-দাবার ও সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে আদেশ দেন।
অ্যাডভোকেট শারমিন জাহান বলেন, আমরা মানবিক বিষয়গুলো আদালতের সামনে তুলে ধরি। পরে আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. ফিরোজ মামুন মানবিক কারণে আসামী জামাল মিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে আজ সন্ধ্যায় জামাল মিয়া জেল থেকে মুক্তি পান।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনুর আক্তার জানান, ওই শিশুদের পরিবারের খোঁজখবর ও নগদ ১০ হাজার টাকা এবং শিশুদের শোষক দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় খাদ্য ও শিক্ষা উপকরণ দেয়া হয়েছে। খোজঁখবর রাখা হচ্ছে শিশুদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত।
প্রসঙ্গত, এক মাস আগে জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথি বেগম একসঙ্গে দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এর সাত দিন পর তার মৃত্যু হয়। এরপর চার সন্তানের লালনপালন করছিলেন জামাল মিয়া। তার বড় ছেলে সাজ্জাদ এম এম খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। গত শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দিদার হত্যা মামলায় জামালকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় কোটালীপাড়া পুলিশ। পরে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয় জামালকে। পরে শনিবার জামালকে কারাগারে পাঠানো হয়। #