• ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্মপাশায় হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটুক্তি করায় কোচিং সেন্টারের এক শিক্ষক গ্রেপ্তার

report71
প্রকাশিত নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ১২:৩২ অপরাহ্ণ
ধর্মপাশায় হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটুক্তি করায় কোচিং সেন্টারের এক শিক্ষক গ্রেপ্তার

মোবারক হোসেন রুবেল,
ধর্মপাশা প্রতিনিধি
হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটুক্তি ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার থানা উন্নয়ন কেন্দ্রের বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক আকাশ কুমার সিংহ (২৬) কে সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তাঁর নিজ বসতঘরের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয় ৩০/৩৫জন ইসলাম ধর্মের ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীরা। খবর পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ধর্মপাশা থানার একদল পুলিশ সেখানে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় উপজেলার খয়েরদিরচর গ্রামের বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম (২৫) বাদী হয়ে ওইদিন রাতেই ধর্মপাশা থানায় একটি মামলা করেছেন।
ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার থানা উন্নয়ন কেন্দ্রের বাসিন্দা আকাশ কুমার সিংহ (২৬), দুধবহর গ্রামের বাসিন্দা আল আমিন (৩২) ও খয়েরদিরচর গ্রামের বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম (২৫) তিনজনই পূর্ব পরিচিত। খায়রুল ইসলাম ও আকাশ কুমার সিংহ উপজেলা সদরের কনফিডেন্ট কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন। গত ২৮অক্টোবর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার সদর বাজার থেকে তাঁরা তিনজন উপজেলার বাদশাগঞ্জ বাজারে মোটর সাইকেলযোগে ঘুরতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে উপজেলার আহম্মদপুর বাজারে আসা মাত্রই আকাশ কুমার সিংহ বলেন যে,তোমাদের নবী ছয়বছরের একটি মেয়ে বাচ্ছাকে ধর্ষণ করেছে। তোমাদের ধর্মটা হচ্ছে একটা ভুয়া ধর্ম যা একটা মতের ওপর ভিত্তি করে চলে। প্রেমবিহীন তারা বোরকা বা পর্দা করেনা। যতগুলো মেয়ে পর্দা করে প্রতিটা মেয়েই চরিত্রহীন। তখন মোটরসাইকেলটি থামানো হয়। এ নিয়ে খায়রুল ইসলাম ও আল আমিন প্রতিবাদ করেন। এক পর্যায়ে আকাশ কুমার সিংহের সঙ্গে তাঁদের দুইজনের কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে আকাশ কুমার সিংহ তাঁর কথাগুলো প্রমাণ করার জন্য চ্যালেঞ্জ করে কিছুদিনের সময় চেয়ে নেয়। সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে খায়রুল,আল আমিনসহ ৪/৫জন আকাশদের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটুক্তি ও ইসলাম ধর্ম এবং মেয়েদের পর্দা করা নিয়ে বাজে মন্তব্য করার কথা স্বীকার করেন। খবর পেয়ে ওই দিন সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে স্থানীয় ৩০/৩৫জন ইসলাম ধর্মের ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীরা ক্ষেপে গিয়ে আকাশের বাড়িতে গিয়ে তাঁর নিজ বসতঘরে তাকে আবদ্ধ করে রাখেন। ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানালে ওইদিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আকাশ কুমার সিংহ কে উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়।
আকাশ কুমার সিংহ বলেন, ইসলাম ধর্ম, মেয়েদের পর্দা ও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কোনোররকম কটুক্তি ও বিরুপ মন্তব্য আমি করিনি। আমি ও খায়রুল ইসলাম কনফিডেন্ট কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করি। আমি গণিত পড়াই। সেও গণিত পড়াবে। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে আমাকে বিপাকে ফেলার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা সাজানো হয়েছে।
ধর্মপাশা থানার এসআই হাফিজুল ইসলাম বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটুক্তি ও ইসলাম ধর্মীয় বিশ্বাসকে অবমাননা করা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার অভিযোগে সোমবার রাতে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় আকাশ কুমার সিংহ কে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।#
১৯.১১.২০২৪