রিপোর্টার -এজাজ আল মাহমুদ সুজন
রিপোর্ট—ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে অ্যান্টিগায় কোনো রকম লড়াই না করেই হেরেছে বাংলাদেশ। খেলা শেষে হারের পেছনের কারণ হিসেবে ব্যাটারদের চূড়ান্ত ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছিলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। জানিয়েছিলেন দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর আশার বাণীও। তবে বুধবার বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম দেখিয়েছেন মুদ্রার অপর পিঠ, তিনি শুধু ব্যাটারদের নন, পাশাপাশি দলের স্পিনারদেরও তুলেছেন কাঠগড়ায়। বলেছেন দ্বিতীয় ম্যাচ দিয়ে সিরিজে প্রথম ঘুরে দাঁড়াতে হলে কষ্ট করতে হবে টাইগারদের।
গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের মিডিয়া ভবনের সামনে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে টেস্টে মিরাজদের পারফরম্যান্স নিয়ে ফাহিম বলেন, ‘ম্যাচের শুরু থেকে মোটামুটি আমাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল। যখন ছয় থেকে সাত উইকেট পড়ে গেল, ২৬০ রানের মতো ছিল, তখন আমাদের বোলিং শক্তি অনুসারে মনে হয়েছিল নিচের দিকের ব্যাটাররাও খুব তাড়াতাড়ি সাজঘরে ফিরবে। ৩০০ বা তার থেকে একটু বেশি রানের মধ্যেই স্বাগতিকদের আটকে রাখতে পারবে। তবে দুর্ভাগ্যবশত আমাদের পেসাররা ভালো বল করলেও স্পিনারদের যেই ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেছিলাম সেটা সেইভাবে দেখিনি। স্পিনাররা সেইভাবে প্রথম ইনিংসে চাপটা দিতে পারেনি, যে কারণে.. সেখানে বিপক্ষ দলের কৃতিত্ব অবশ্য রয়েছে, নিচের দিকে এত বড় একটা জুটি গড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় আমাদের সুযোগ ছিল ওদের (উন্ডিজদের) প্রথম ইনিংসকে আরও ছোটো করে রাখার, তাতে যেটা হতো যে, আমাদের জন্য খেলাটা সহজ থাকত। লক্ষ্যগুলোও সহজ থাকত। শেষে এসে এত বড় টার্গেট তাড়া করতে হচ্ছিল… কারণ চতুর্থ ইনিংসে ৩০০-৩৫০ রান ভালো একটা টার্গেট, তো সেটা করতে হতো না আমাদেরকে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজও তুলনামূলক একটু বেশি চাপে থাকত।’
বর্তমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল তুলনামূলক কম শক্তির। লাল বলে গেল কয়েক সিরিজ ধরেই খারাপ সময়ের মধ্য দিয়েই যাচ্ছিল তারা। তাতে তাদের আত্মবিশ্বাসে খানিকটা ঘাটতি ছিল, যা বাড়াতে সাহায্য করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে দলের ফিল্ডার-স্পিনার ও ব্যাটাররা ব্যর্থতার সুযোগ তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা। প্রাপ্তির বলে শুধু টাইগার পেসারদের চেষ্টাই। দলের এমন অবস্থা থাকলে দ্বিতীয় ম্যাচ দিয়ে সিরিজে ফিরে আসতে কষ্ট হবে বলে মনে করে এই বোর্ড পরিচালক।
ফাহিম বলেন, ‘প্রথম টেস্টে ওরা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) সাবধানে ব্যাটিং করেছে, ওরা আমাদের বোলারদের বেশ সম্মান জানাচ্ছিল। কিন্তু এখন বুঝে ফেলেছে যে ওরা যদি প্রথম দিকে টিকে যেতে পারে, তারপর হয়তো আসতে আসতে আমরা কিছুটা হাল ছেড়ে দিই, তো এদিক দিয়ে তারা এগিয়ে থাকবেই। আমাদেরকে অনেক কষ্ট করে ফিরে (দ্বিতীয় ম্যাচে) আসতে হবে। তবে স্বস্তির কথা হচ্ছে যে, আমাদের পেস বোলাররা ভালো বল করে, নতুন বলে ভালো করে বা উইকেটের সহায়তা পেলে ভালো করে সেটাই আমাদের ভরসার জায়গা।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু অনেক বার আমরা দেখেছি যে, বিপক্ষ দলের অল্প রানে তিনটা-চারটা-পাঁচটা উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ওদের জুটিটা হয়ে যাওয়া ঐ জিনিসটাই আমাদের অনেক বার ভুগিয়েছে। সেখানেই আরেকটু সতর্ক হতে হবে আমাদের, সেটা যদি হতে পারি তাহলে… আমি আশাবাদী দ্বিতীয় টেস্ট নিয়ে, কারণ সুযোগ থাকার পরও প্রথম টেস্টে ভালো ব্যাটিং করিনি, অনেকেই ভালো একটা স্কোর করার পথে থেকেও ভালো করতে পারেনি। ঐ জায়াগায় আমাদের আরেকটু বড় করতে হবে, বড় জুটি করতে হবে-এগুলো করতে পারলে অবশ্যই স্বাগতিকদের চাপে ফেলা যাবে।’