স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সড়াবাড়ি বিলের দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ভুটির খাল ২ বছর আগে দখলে নেন প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়ী আহাদ আলী। তিনি ওই খালের তারাইল ও বাঘিয়ারকুল গ্রামের মাথায় অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে শুরু করেন মাছ চাষ। এতে সড়াবাড়ি বিল ও ভুটির খালের মুক্ত জলাশয়ে শতাধিক মৎসজীবীর মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যায়। জীবিকা হারায় শতাধিক পরিবার। এছাড়া উৎপাদিত কৃষি পণ্য, বিলের ঘাস এবং শাপলা নৌকায় করে খাল দিয়ে পরিবহন করতে পারত না বিলবাসী।
এ বিষয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিলবাসী ৭ দিন আগে মৌখিক অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, তারইল গ্রামের বাসিন্দা জিয়া শেখ, মৎস্য ব্যবসায়ী আহাদ আলী এই এলাকার অনেকের জমি ইজারা নিয়ে মাছ মাছ চাষ শুরু করেন। পরে তিনি প্রভাব খাঁটিয়ে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ভুটির খাল দখল করে বাঁধ দেন। সেখানে মাছ চাষ শুরু করেন। খাল দখল করে স্থানীয়দের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করতে থাকেন।
এরপর অভিযোগের ভিত্তিতে আজ সোমবার সকালে খালের দুই মাথার অবৈধ বাঁধ অপসারণ করেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল হক। সেই সাথে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার অপরাধে মৎস্য ব্যবসায়ী আহাদ আলীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ওই বিল থেকে জীবিকা নির্বাহ করা শতাধিক বিলবাসী।
সড়াবাড়ি গ্রামের কৃষক ভিপি বিশ্বাস বলেন, ২ বছর আগে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের প্রভাবশালী মৎস ব্যবসায়ী আহাদ আলী খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। তিনি খালে নৌকা চলাচল বন্ধ করে দেন। সেখানে কেউ মাছ ধরা, শাপলা ও ঘাস কাটতে যেতে পারতো না। কেউ গেলেই হুমকি ধামকি দেওয়া হতো। এতে আমাদের জীবন-জীবীকা বন্ধ হয়ে গিয়েছেলি। ১০ কিলোমিটার ঘুরে পণ্য পরিবহন করতে হত। এতে দুর্ভোগের শেষ ছিল না। আজ বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। এখন আমরা এখান থেকে মাছ ধরে, শাপলা তুলে ও ঘাস কেটে জীবিকা নির্বাহ করতে পারব। সহজেই সব পণ্য পরিবহন করতে পারব। এজন্য ইউএনও মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আহাদ আলীর বক্তব্য নেয়ার জন্য তাকে কার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল হক বলেন, এলাকাবাসীর মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার সকালে পাটগাতী ইউনিয়নের সড়াবাড়ি বিলের ভুটির খালের দেড় কিলোমিটার বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি খালে বাঁধ দেওয়ার অপরাধে মৎস্য ব্যবসায়ী আহাদ আলীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এমন কাজ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। #