• ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মডেল তিন্নি হত্যা মামলার রায় ১৪ জানুয়ারী

report71
প্রকাশিত জানুয়ারি ৮, ২০২৫, ১২:৩৬ অপরাহ্ণ
মডেল তিন্নি হত্যা মামলার রায় ১৪ জানুয়ারী

 

মিজানুর রহমান রনিঃ  মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী জানুয়ারীর ১৪ জানুয়ারী মঙ্গলবার। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জাজ শাহিনুর আখতার রায় ঘোষণা করবেন। আগামী ১৪ জানুয়ারী রায়ের তারিখ ধার্য করেছেন। ২০১৬ সালের ২৭ জুলাই সপ্তম অতিরিক্ত জেলা আদালতে মামলাটির বিচার সম্পন্ন হয়েছিল এবং ঐ বছরের ৩১ অগাস্ট তারিখে মামলাটি রায়ের জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে ও পরবর্তীতে দেয়া আরো ঊনচল্লিশটি তারিখে রায় দেয়া হয়নি। গত অগাস্ট মাসে দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জাজ শাহিনুর আখতারের আদালতে মামলাটি স্থানতাড়িত হয়।এই মামলার রায় গত বছরের ১৪ অক্টোবর তারিখের জন্য নির্ধারিত হলেও ঐ তারিখে রায় দেয়া হয়নি। মামলাটির রায়ের তারিখ ১৪ জানুয়ারী পুনঃ নির্ধারিত হয়েছে। ১৯ বছর আগে তিন্নি হত্যাকাণ্ডের একমাত্র আসামি সাবেক ছাত্রনেতা ও বরিশাল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি। অভি পলাতক রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ চলছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে খুন হন তিন্নি। পরের দিন সকালে তিন্নির লাশ পাওয়া যায় বুড়িগঙ্গা এক নম্বর চীন মৈত্রী সেতুর নিচে পিলারের ওপরে ঝুলন্ত অবস্থায়। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) মো. শফি উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামির নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত করেন। মামলার বিবারনে জানাযান, ১০ নভেম্বর রাতে মাথায় আঘাত করে তিন্নিকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে ওই রাতে বুড়িগঙ্গার ১ নম্বর চীন মৈত্রী সেতুর ওপর থেকে নদীতে ফেলে দেওয়া হয় লাশ। কিন্তু পানিতে নয়, লাশটি পড়ে পিলারের উঁচু অংশে। পরদিন সকালে লাশ ঘিরে জমে উৎসুক জনতার ভিড়। কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহালের পর ময়নাতদন্ত করে। মর্গে চার দিন রাখার পর ১৫ নভেম্বর অজ্ঞাত হিসেবে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয় তিন্নিকে। এদিকে তিন্নি চাচা সৈয়দ রেজাউল করিম কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হারানো ডায়েরি করেন। পরে তিন্নির পরিবারের লোকজন ছবি দেখে লাশ শনাক্ত করেন। মামলাটি চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর তদন্তভার সিআইডিতে ন্যস্ত হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের এএসপি মোজাম্মেল হক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে সাক্ষী করা হয়। এছাড়াও এই মামলায় ২২টি আলামত জব্দ করা হয়। ২০১০ সালের ১৪ জুলাই ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তিন্নি হত্যা মামলায় গোলাম ফারুক অভির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
তিন্নি হত্যাকাণ্ডের পর অভি কানাডায় পালিয়ে যান। কানাডার টরোন্টো থেকে অভি পাওয়ার অব অ্যাটর্নির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়ে এক আইনজীবীর মাধ্যমে মামলাটির স্থগিতাদেশ চেয়ে ২০১০ সালের ৫ই ডিসেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। যার রিট পিটিশন নম্বর ৯৫৩১ / ২০১০। বাংলাদেশে নিম্ন আদালতে চলমান মামলাটিতে অংশ নেওয়ার জন্য (ওই দেশে অবস্থিত) বাংলাদেশ দূতাবাসে পাসপোর্ট চেয়ে পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি। ইচ্ছে থাকলেও দেশে আসতে পারছে না বলেও উল্লেখ করেন। তাই তার ন্যায়বিচার পাওয়ার স্বার্থে পাসপোর্ট পেয়ে দেশে আসা পর্যন্ত মামলাটির কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয় অভির পক্ষে। শুনানি শেষে একই বছরের ১৫ই জানুয়ারি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১১ সালের ২৩শে জুন হাইকোর্ট মামলাটির স্থগিতাদেশ দেন। এই কারণে প্রায় সাত বছর মামলার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। পরে হাইকোর্টের আদেশে মামলার কার্যক্রম আবার চালু হয়।