আপডেট: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১
গৌরনদী প্রতিনিধি \ আয়কর কর রিটার্ন দাখিল না করায় হতদরিদ্র গৃহিনীকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অন্য তিনজন হতদরিদ্র নারীকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য নোটিশ প্রদানের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসার পর অবশেষে হতদরিদ্র সেই চার নারীর জরিমানার টাকা মওকুফ করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে সার্কেল-৭ কর অঞ্চল বরিশালের উপ-কর কমিশনার মোঃ মঞ্জুর রহমান জানান, অতি সম্প্রতি নোটিশ পাওয়া গৃহিনীদের পক্ষে আয়কর অবমুক্তির জন্য আবেদন করায় তাদের জরিমানার টাকা মওকুফ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ওই নারীদের জাতীয়পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ই-টিআইএন গ্রহন করায় নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে রিটার্ন দাখিলের জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে যখন জানা গেছে ওই চারজনই হতদরিদ্র নারী। তখন তাদের জরিমানার টাকা মওকুফ করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই চারজনকে কর আরোপ করা যাবেনা মর্মে কমিশনে নথিভূক্ত করা হয়েছে।
জরিমানা পরিশোধের নোটিশ পাওয়া গৃহিনী সেলিনা বেগমের পুত্র কলেজ ছাত্র মাহফুজুর রহমান জানান, অতি সম্প্রতি বরিশাল উপ-কর কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে আয়কর অবমুক্তির জন্য আবেদন করা হয়। পরবর্তীতে কমিশন থেকে জরিমানার টাকা মওকুফ করা হয় এবং ভবিষ্যতে এরকম নোটিশ আসবেনা বলে আমাদের জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য বরিশালের গৌরনদী উপজেলার শরিফাবাদ গ্রামের মাহেন্দ্রা চালক ফারুক হোসেনের স্ত্রী গৃহিনী সেলিনা বেগম আয়কর রিটার্ন না করায় পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ভ্যান চালক কবির ইসলাম বেপারির স্ত্রী গৃহিনী কল্পনা বেগম, দিনমজুর মহসিন বেপারীর স্ত্রী সুবর্না মোহসিন ও বিল্বগ্রাম এলাকার দিনমজুর চানমিয়া সরদারের স্ত্রী গৃহিনী মনোয়ারা বেগমকে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বরিশাল উপ-কর কমিশনার কার্যালয়ের (বৈতনিক) শাখা থেকে উপ-কর কমিশনার স্বাক্ষরিত নোটিশগুলো ইস্যু করা হয়েছিলো। এরমধ্যে নোটিশ প্রাপ্ত গৃহিনী কল্পনা বেগম, সেলিনা বেগম ও সুবর্না মোহসিন একই পরিবারের আপন তিন সহদরের স্ত্রী। নোটিশে কল্পনা বেগম, সুবর্না মহসিন ও মনোয়ারা বেগমকে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ সালের ১২৪ ধারায় কেন জরিমানা করা হইবেনা তাহার কারন দর্শানোর জন্য ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের ১৩০ ধারায় নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। এছাড়াও সেলিনা বেগমকে আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো।
এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু জানান, তার ইউনিয়নের চারজন হতদরিদ্র গৃহিনী আয়কর পরিশোধের জন্য নোটিশ পেয়েছিলো। সম্প্রতি তাদের জরিমানার টাকা মওকুফ করার বিষয়টি জানতে পেরেছি। হতদরিদ্র ওই চার গৃহিনীকে আয়কর কর থেকে মুক্তি দেয়ায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।