স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে আগামীকাল রবিবার (১৭ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনও বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন। এ উপলক্ষে শিশু সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ টুঙ্গিপাড়ায় সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও শোভারবর্ধণ এবং বই মেলার আয়োজনের সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। টুঙ্গিপাড়াসহ জেলায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

জানাগেছে, রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে হেলিকপ্টার যোগে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছাবেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে জাতির পিতার ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করবে, বেজে উঠবে বিগউলের সুর। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্য এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করবেন। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত মন্তব্য বহিতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করবেন। অংশ নেবেন তারা।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পরে রাষ্ট্রপতি ফিরে গেলে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সের ১ নম্বর গেটে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত শিশু সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জেলা শহরের মালেকা একাডেমীর ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী পিয়াসা জামিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিশু সমাবেশে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বক্তব্য রাখবেন। এরপর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিয়োগীতার পুরস্কার, অস্বচ্ছল, মেধাবী শিশু শিক্ষার্থীদের মাছে অর্থিক অনুদান বিতরণ করবেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে স্বারক উপহার দেহা হবে। এপর প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখবেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী দর্শক সারিতে বসে শিশুদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন এবং শিশুদের সাথে ফটোসেশন করবেন। এরপর জাতির পিতার সমাধি প্রাঙ্গণে আয়োজিত বিই মেলা ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন।

এদিকে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও শোভাবর্ধণ এবং শিশু সমাবেশের মঞ্চ এবং সকল আয়োজনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এ সমাবেশে ক্ষুদে শিল্পীরা নাচ, গান ও কবিতা আবৃতি করবে। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুত শেষ করেছে ক্ষুদে শিল্পীরা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়াসহ পুরো জেলায় বইছে সাজ সাজ রব। জেলার বিভিন্ন স্থানে টাঙ্গানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন ও নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। জাতীয় কর্মসূচীর সাথে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচী।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী সৃষ্টি সাহা মিঠাই জানায়, আমরা জাতির পিতাকে খুব ভালোবাসি। জাতীয় শিশু দিবস আমি নাচ করবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে নাচ করতে পেরে আমার খুব আনন্দ লাগছে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী ইসরাত জাহান রাইসা ও নিঝুম ওঝা বলেন, আগামী ১৭ মার্চ মুক্তির মহানয়কের জন্মবার্ষিকী। তাই তার জন্মভিটায় উৎসব আমেজ। সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে আয়োজন করা হয়েছে শিশু সমাবেশ। এখানে থাকবে নাচ-গান ও কবিতা আবৃত্তি। যার অংশ হতে পেরে আমার খুশি ও গর্বিত।

গোপালগঞ্জে সংযুক্তি কালচারাল কর্মকর্তা মামুন বিন সালেহ জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে ৪টি নৃত্য, ২টি সংগীত ও ১টি আবৃতি রয়েছে। জেলার এসব ক্ষুদে শিল্পীদের অংশগ্রহনে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।

টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে টুঙ্গিপাড়ায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আসবেন। তাদেরে আগমনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে টুঙ্গিপাড়ায় সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এখন আমরা অপেক্ষায় রয়েছি কখন রাষ্ট্রপতিকে সাথে নিয়ে ঘরের মেয়ে শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছাবেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ জানান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন সফল করতে উপজেলা আওয়ামী লীগ সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে। নেতাকর্মীদের নিয়ে কয়েক দফা মিটিং হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে রয়েছে নেতাকর্মীরা।

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে টুঙ্গিপাড়ায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আসবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচীর সাথে সাথে জেলা আওয়ামী লীগে পক্ষ থেকে কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে তোড়ন নির্মাণ করা হয়েছে। টাঙ্গানো হয়েছে ব্যানার ও ফেস্টুন।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম জানান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে নিরাপত্তাময় করতে জেলায় নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। #