আপডেট: মে ৩, ২০২০
যে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন, তার বড় অংশই রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে।
কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর হুমকি দিচ্ছে।
এরমধ্যে শুধু সৌদি আরবই ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাবে।
এপ্রিলে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়।
বিশেষ করে সৌদি থেকে কত শ্রমিক ফেরত আসবে তা ভাবতেও পারছি না।
সৌদি সরকার বাংলাদেশিদের ফেরত আনার বিষয়ে তাগাদা দিচ্ছে।
কিন্তু আমরা তাদের বলেছি, এক সঙ্গে এত লোক আনতে পারবো না।
আমরা আমাদের নাগরিক অবশ্যই নিয়ে আসব।
তবে ধাপে ধাপে আনতে চাই।’
ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো আনডকুমেন্টেটেড ও অবৈধ কর্মীদের নিবন্ধন করতে বলেছে।
নিবন্ধন করলে আর কোনো জরিমানা দিতে হবে না।
দেশে ফিরতেও খরচ লাগবে না।
সংশ্লিষ্ট দেশগুলো তাদের ফেরত পাঠাবে।
এর ফলে বাংলাদেশিরা দলে বেধে নিবন্ধন করছে।
নিবন্ধনের পরে তাদের ক্যাম্পে রেখে দিচ্ছে।
সেখান থেকে দেশে ফিরতে তারা বাধ্য।
এছাড়া ছোটখাটো অপরাধে জেলে থাকা প্রবাসীদের ক্ষমা করে জেল থেকে সোজা বিমানে তুলে দিচ্ছে।
ফলে বিরাট সংখ্যক লোক আসছে।’
তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে বলা হয়েছে, জেলে থেকে ফেরত পাঠানোর আগে তাদের তথ্য দিতে হবে।
তারা বাংলাদেশের নাগরিক কি না তা যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে গ্রহণ করা হবে।
তবে সৌদি আরব কৃষিতে মনযোগী হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সৌদি সরকার কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতে সামনের দিনে যথেষ্ট উদ্যোগ নেবে।
এগুলোর সঙ্গে মৎস্য খাতে উদ্যোগ যদি নেয় তাহলে বাংলাদেশি শ্রমিকদের এ খাতগুলোতে নিয়োগ করা যেতে পারে।
তবে সূত্র জানায়, ৫-১০ লাখ বাংলাদেশিকে একসঙ্গে ফেরত পাঠাবে না সৌদি।
আগামী ৩-৫ বছরের মধ্যে ক্রমান্বয়ে তাদের ফেরত পাঠানো হবে।
এর অন্যতম কারণ, সৌদি আরবের ২০৩০ ভিশন অনুযায়ী পুরো সৌদির শ্রম বাজারে ৭০ শতাংশ সৌদি নাগরিক কর্মক্ষেত্রে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এটি বাস্তবায়নে সব দেশের অভিবাসী শ্রমিকদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।
ইতিমধ্যে এ বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের বাধামূলক ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে সৌদি সরকার।
বিদেশি কর্মীদের পরিবারের উপর মাসিক চার্জ আরোপ করা হয়েছে।
বাড়ানো হয়েছে ইকামার ফি।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে টিউশন ফির পাশাপাশি কর বাড়ানো হয়েছে।
ফলে ইতিমধ্যে মিশরের ১১ লাখসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা সৌদি ছেড়েছেন।
অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও সৌদি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যার বেশিরভাগই পেশাজীবী।
উল্লেখ্য, সৌদির মতো কাতার, ইরাক, বাহারাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশি অবৈধ শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে।
কয়েকটি দেশ থেকে ইতিমধ্যে কিছু বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।