১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

আমতলীর সেই ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান ওএসডি

আপডেট: জুলাই ৬, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
মজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হতদরিদ্রদের বরাদ্দকৃত ঘরে অনিয়ম, টাকার বিনিময়ে ধনাঢ্যদের ঘর দেয়া ও দুর্নীতির সত্যতায় আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামানকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওএসডি করা হয়েছে। সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের উপসচিব আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে ওএসডি করা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে। সোমবার রাতে ইউএনওকে ওএসডির খবরে আমতলী সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।
জানাগেছে, মোঃ আসাদুজ্জামান গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর আমতলীতে ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পরেই টাকা কামানোর জন্য ইউএনও অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেন। ইউএনওর আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন ওই কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ এনামুল হক বাদশা। তার মাধ্যমে ত্রাণের ঘরসহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেন লক্ষ লক্ষ টাকা। অভিযোগ রয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় তিনি একের পর এক অপকর্ম চালিয়ে যান। তার দুর্নীতি থেকে রেহাই পায়নি মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ এ অধীনে দ্বিতীয় ধাপে আমতলীর হতদরিদ্রদের ৩’শ ৫০ টি ঘর। ওই প্রকল্পের ঘর প্রতি ৩০-৪০ হাজার টাকা করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ঘর প্রতি বরাদ্দে এক লক্ষ ৯০ হাজার টাকা থাকলেও তিনি তার প্রতিনিধির মাধ্যমে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করেন। এছাড়া তার কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ এনামুল হক বাদশার নিজ গ্রাম হরিদ্রবাড়িয়ায়ার টাকার বিনিময়ে ধনাট্য ব্যাক্তিদের ৩০টি ঘর বরাদ্দ দেন তিনি (ইউএনও)। ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান ঘর নির্মাণে সুজন মুসুল্লী ও হাবিব গাজী নামের দুইজনকে প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেন। তারা ঘর প্রতি ৩০-৪০ হাজার টাকা আদায় করে এনামুলের মাধ্যমে ইউএনও হাতে পৌছে দেয়। যারা টাকা দেন তাদের বাড়ীতেই পৌছে যায় ঘর নির্মাণের নিম্নমানের সামগ্রী। ইউএনও ঘর বরাদ্দের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে গত ২৫ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন জাতয়ি দৈনিক পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন নজরে আসে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমানের। তাৎক্ষনিক তিনি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই তদন্ত কমিটির ঘরের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম,দুর্নীতি ও টাকার বিনিময়ে ধনাঢ্য ব্যাক্তিদের ঘর দেয়ার সত্যতা পায়। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান ওই প্রতিবেদন জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়ে দেয়। ওই প্রতিবেদনের আলোকে রাষ্টপতির আদেশক্রমে সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের উপসচিব আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে আমতলীর ইউ্ওনও মোঃ আসাদুজ্জামানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওএসডি করা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে। একই অভিযোগে গত ৫ মে তার কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ এনামুল হক বাদশাকে সাময়ীক বরখাস্ত করেছেন জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান। সোমবার রাতে ইউএনও আসাদুজ্জামানকে ওএসডির খবর আমতলীতে পৌছলে সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২০ জুন সারাদেশে হতদরিদ্রদের দেয়া ঘরের উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ঘর উদ্বোধন করলেও আমতলীর ঘরের নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ কাজ করায় বেশ কয়েকটি ঘরের দেয়াল ধসে পরেছে।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, কাউনিয়া গ্রামের জাহাঙ্গির বেপারী ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের হরিদ্রাবাড়িয়া গ্রামের হামিদা বেগমের ঘরের সামনের পিলার ধসে যায়। উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ১১০ টি ঘরের অধিকাংশের নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। এছাড়া তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার থাকাকালিন ত্রাণের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়নের অভিযোগ রয়েছে। ঘর হস্তান্তরের আগেই বেহালা গ্রামের বিধবা উর্মিলা রানীর ঘর ভেঙ্গে পড়ে। এনিয়ে সারা দেশ ব্যাপী শোরগোল পড়ে যায়।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আমতলীর ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা-ওএসডি করার আদেশের কপি পেয়েছি। আদেশ মোতাবেক তাকে ইতিমধ্যে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network